কম্বোডিয়ার শহীদদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। রোববার দেশটির স্বাধীনতা স্মৃতিসৌধে ফুল দিয়ে কিছু সময় নিরবে দাঁড়িয়ে থাকেন তিনি। এ সময় সেখানে বিউগিলে করুন সুর বেজে উঠে। এর আগে প্রধানমন্ত্রীকে গার্ড অব অনার প্রদান করে তিন বাহিনীর একটি সুসজ্জিত দল।
১৯৫৩ সালে ফ্রান্সের কাছ থেকে স্বাধীনতা লাভের স্মারক হিসেবে ১৯৫৮ সালে কম্বোডিয়ার রাজধানী নমপেনে এই স্বাধীনতা স্মৃতিসৌধ নির্মিত হয়। এর নকশা প্রণয়ন করেছিলেন দেশটির স্থপতি ভ্যান মলিভান।
পরে প্রধানমন্ত্রী কম্বোডিয়ার প্রয়াত রাজা নরোদম সিহানুকের স্মরণে নির্মিত স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণের মাধ্যমে প্রয়াত রাজার প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। এরপর প্রধানমন্ত্রী তুল সেলং জেনোসাইড মিউজিয়াম ঘুরে দেখেন। রাজধানীর কেন্দ্রস্থলেই মিউজিয়ামটি অবস্থিত। এ সময় প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে তার ছোটো বোন শেখ রেহেনা এবং অন্যান্য সফর সঙ্গীরা উপস্থিত ছিলেন।
মিউজিয়ামটি ছিল একটি উচ্চ বিদ্যালয়। এটি খেমার রুজের ১৯৭৫ থেকে ১৯৭৯ পর্যন্ত শাসনকালে কুখ্যাত সিকিউরিটি ডিভিশন ২১ (এস-২১) ব্যবহার করে। তুল সেলং অর্থ হচ্ছে ‘হিল অব দ্য পয়েজনাস ট্রিজ’ বা স্ট্রিচিনিন হিল। এটি ছিল খেমার রুজের কমপক্ষে ১৫০টি মৃত্যুদন্ড কেন্দ্রের একটি। ২০১০ সালের ২৬ জুলাই কম্বোডিয়ার একটি বিশেষ আদালত মানবতা বিরোধী অপরাধ ও ১৯৪৯ সালের জেনেভা কনভেনশন লঙ্ঘনের দায়ে তুল সেলং কারাগারের প্রধান কাইং কেক ইউকে অজীবন কারাদণ্ড দেয়।
বোনের সঙ্গে মিউজিয়ামের বিভিন্ন সেকশনের নানা নিদর্শন ঘুরে দেখেন প্রধানমন্ত্রী। সেখানে তারা খেমার রুজ শাসনের নৃশংসতার বিভিন্ন নিদর্শন, দলিল, প্রমাণ এবং ছবি দেখেন। বিভিন্ন নিদর্শনের কাছে নিয়ে গিয়ে মিউজিয়ামের পরিচালক চিহে ভিসথ তাদেরকে নিদর্শন সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন বিষয় বর্ণনা করে বুঝিয়ে দেন।
প্রধানমন্ত্রীর কোম্বাডিয়া সফরসঙ্গীদের মধ্যে বেসামরিক বিমান চলাচল ও পর্যটন মন্ত্রী রাশেদ খান মেনন, পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ এইচ মাহমুদ আলী, আইসিটি বিভাগের প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক, প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব ড. কামাল আবদুল নাসের চৌধুরী, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের এসডিজি বিষয়ক মুখ্য সমন্বয়ক মো. আবুল কালাম আজাদ, পররাষ্ট্র সচিব এম শহিদুল হক ও প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
প্রধানমন্ত্রী হুন সেনের আমন্ত্রণে ৩ দিনের সফরে রোববার বিকেলে কম্বোডিয়া পৌঁছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এদিন বেলা সাড়ে ১২টায় প্রধানমন্ত্রী ও তার সফরসঙ্গীদের বহনকারী বাংলাদেশ বিমানের একটি ভিভিআইপি ফ্লাইট নমপেন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছে।