আর্জেন্টিনা রাশিয়ার বিমানে চাপার আগে তিনি ছিলেন কঠোর সমালোচক। পরে বলেছেন মেসিদের তাঁতিয়ে দিতেই কড়া সমালোচনা করেছিলেন। মেসিরা যখন আইসল্যান্ডের সঙ্গে ড্র করে বসল, তখনও ডিয়েগো ম্যারাডোনা আশাবাদী। বলেছেন- হবে, সামনে হবে! কিন্তু ক্রোয়েশিয়া বিপর্যয়ের পর এই কিংবদন্তি আর ভরসা খুঁজে পাচ্ছে না!
আর্জেন্টিনা একেবারে খাদের কিনারায়। দুই ম্যাচে এক পয়েন্ট নিয়ে প্রথম রাউন্ড থেকেই ছিটকে যাওয়ার শঙ্কায় পড়েছে। শেষ ম্যাচে নাইজেরিয়ার বিপক্ষে জিতলেই কেবল হবে না, তাকিয়ে থাকতে হবে গ্রুপসঙ্গীদের ম্যাচের দিকেও। এমন করুণ দশায় পৌঁছানোর জন্য কোচ হোর্হে সাম্পাওলির দিকেই সমালোচনার তীরটা তাক করেছেন ম্যারাডোনা।
‘মানুষ এখনও বিশ্বাস করে সাম্পাওলি সমস্যাগুলোর সমাধান করতে যাচ্ছেন কম্পিউটার, ড্রোন অথবা ১৪ জন অ্যাসিস্ট্যান্ট নিয়ে। অথচ আর্জেন্টিনা জানেই না তারা কিসের জন্য খেলছে, তাদের হাতে কোনো সমাধানও নেই। মিডফিল্ডে নেই, ডিফেন্সে কিংবা আক্রমণেও নেই।’
আলবিসেলেস্তেদের খেলা প্রতি ম্যাচেই ভিআইপি বক্সে থাকছেন ম্যারাডোনা। গলা ফাটাচ্ছেন সমানতালে। কোনো গোলের সুযোগ তৈরি হলে যেমন উত্তেজিত হচ্ছেন, সেটা নষ্ট হলে মুষড়ে পড়ছেন। কখনও নখ কামড়াচ্ছেন, আবার প্রিয় জার্সির বিপর্যয় দেখে কান্না লুকোচ্ছেন দুহাতে মুখ ঢেকে।
দিনশেষে দেখছেন কোথাও সুর-লয়-তাল নেই আর্জেন্টিনার খেলায়। বৃহস্পতিবার দেখলেন, মেসিরা রক্ষণে দেয়াল গড়তে পারছেন না, বল নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারছেন না, এমনকি কখনও কখনও বলে পা-ই লাগাতে পারছেন না।
সবকিছু মিলিয়ে আর্জেন্টিনার ফুটবল সংক্রান্ত কোনকিছুই ঠিকঠাক চলছে না বলেও মনে হচ্ছে ম্যারাডোনার। ধুয়ে দিয়েছেন নিজ দেশের ফুটবল অ্যাসোসিয়েশনকেও, ‘এফএ এমন লোকদের দ্বারা চলছে, তারা আসলেই ফুটবল সম্পর্কে কোন জ্ঞান রাখে না। তাদের পরিকল্পনার অভাব দলকে এমন অবস্থায় ঠেলে দিয়েছে।’
এতকিছুর পরও অবশ্য খেলোয়াড়দের আগলেই রাখছেন ম্যারাডোনা। বিশেষ করে নিজের উত্তরসূরির তকমা পাওয়া লিওনেল মেসির জন্য ঢাল হয়েছেন, যিনি বাজে পারফরম্যান্সের জন্য কঠোর সমালোচনার শিকার হচ্ছেন।
‘আজ সকলেই মেসিকে দোষ দিচ্ছে। আমি বলতে চাই তার যা খেলার সে খেলেছে, এবং সে আরও খেলতে পারত। কিন্তু সতীর্থদের সমস্যার সমাধান করা তার জন্য সত্যিই কঠিন।’