“আজিকে হয়েছে শান্তি, জীবনের ভুলভ্রান্তি সব গেছে চুকে/ রাত্রিদিন ধুক্ধুক্ তরঙ্গিত দুঃখসুখ থামিয়াছে বুকে/ যত কিছু ভালোমন্দ যত কিছু দ্বিধাদ্বন্দ্ব কিছু আর নাই/”.. কবিগুরুর এই কথার মতো শোক আর বেদনার পরিবেশ তৈরি হয়েছিল আর্মি স্টেডিয়ামে। নেপালে উড়োজাহাজ দুর্ঘটনায় নিহতদের মধ্যে শনাক্ত হওয়া ২৩ বাংলাদেশির মরদেহ বিমান বাহিনীর বিশেষ ফ্লাইটে করে বিকেল ৪টার দিকে দেশে এসে পৌঁছায়। সেখান থেকে মরদেহগুলি জানাজার জন্য আর্মি স্টেডিয়ামে নিয়ে গেলে কফিন দেখতে পেয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন শোকাহত স্বজনরা। স্বজনদের শোকের ঢেউ উপস্থিত সাধারণ জনগণের মধ্যেও ছড়িয়ে পড়ে। সেনাসদস্যরা কাঁধে করে লাশবাহী গাড়ি থেকে মরদেহগুলো স্টেডিয়ামের ভেতরে জানাজার জন্য নিয়ে আসেন। জানাজা শেষে কফিনে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান রাষ্ট্রপতির পক্ষে তার সামরিক সচিব, প্রধানমন্ত্রীরর পক্ষে ওবায়দুল কাদের এবং স্পিকার শিরিন শারমিন। শ্রদ্ধা জানানো শেষে মরদেহগুলো তাদের পরিবারের সদস্যদের কাছে হস্তান্তর করা হয়। সেসময় যে হ্নদয়বিদারক পরিস্থিতি তৈরি হয়, তা কাঁদিয়েছে পুরো দেশের মানুষকে। বিদেশের মাটিতে একসঙ্গে এতোজন বাংলাদেশী নাগরিকের হতাহতের ঘটনা সম্ভবত এটাই প্রথম। গত ১২ মার্চ কাঠমান্ডুতে ওই উড়োজাহাজ বিধ্বস্তের ঘটনা ঘটে। এতে ৭১ যাত্রীর মধ্যে ৫১ জন নিহত হন। তাদের মধ্যে ২৬ জন বাংলাদেশি। উড়োজাহাজ দুর্ঘটনার কারণ এখনও জানা যায়নি। কয়েক মাসের তদন্ত শেষে বের হয়ে আসবে এই মর্মান্তিক দুর্ঘটনার কারণ। কারণ যাই হোক, হারিয়ে যাওয়া জীবনগুলো তাদের পরিবার ও স্বজনদের সারাজীবনের কান্না হয়ে থাকবে। নিহতদের পরিবারের জন্য সমবেদনা জানানো ছাড়া আমাদের হয়তো আর কিছুই করার থাকছে না।