তিন বছরের নিষেধাজ্ঞাসহ চার বছরের নির্বাসন। র্যাঙ্কিংয়ে সাফে খেলা দলগুলোর মধ্যে নীচে। পাকিস্তানের এসব অবস্থা পাত্তা দিলেন না বাংলাদেশ কোচ জেমি ডে। সোজাসাপ্টা ভাষায় জানিয়ে দিলেন সাফ সুজুকি কাপে অন্যতম শক্তিশালী দলটির বিপক্ষে ‘কঠিন’ ম্যাচ খেলার অপেক্ষায় তার দল। সেই ম্যাচ জিতে সেমির পথ পরিষ্কার করতে চাওয়ার কথা জানাতে ভুললেন না লাল-সবুজ ফুটবলকে জাগরণের আশা দেয়া ব্রিটিশ এ কোচ।
বৃহস্পতিবার সাফ সুজুকি কাপে গ্রুপ ‘এ’ থেকে নিজেদের দ্বিতীয় ম্যাচে মুখোমুখি হবে বাংলাদেশ-পাকিস্তান। বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে ম্যাচটি শুরু হবে সন্ধ্যা ৭টায়।
গ্রুপে প্রথম ম্যাচে জয় পেয়েছে বাংলাদেশ-পাকিস্তান দুদলই। নেপালের বিপক্ষে কোণঠাসা থেকেও নিষেধাজ্ঞা শেষে ২-১ গোলে প্রথম আন্তর্জাতিক জয় পেয়েছে পাকরা। আর ভুটানকে ২-০ গোলে হারিয়ে নিজেদের পুরনো হিসেব চুকিয়েছে স্বাগতিক বাংলাদেশ।
সাউথ এশিয়া থেকে যে দুটি দল র্যাঙ্কিংয়ে বাংলাদেশের থেকে পিছিয়ে, পাকিস্তান তাদের একটি। মাত্র তিন মাস আগে ফিফার দেয়া নিষেধাজ্ঞা কাটিয়ে আন্তর্জাতিক ফুটবলেও ফিরেছে তারা। ফিরেই নেপালের বিপক্ষে জয়।
পাকিস্তানের জয়টি কি নেহাত অঘটন? জেমি ডে সেটি মনে করছেন না। তার চোখে জয়টা পাকিস্তানের প্রাপ্য। বুধবার অনুশীলনের কথা থাকলেও সেটা বাতিল হয়েছে। শিষ্য ডিফেন্ডার তপু বর্মণকে নিয়ে সংবাদ সম্মেলনে হাজির হয়ে জানালেন কেন পাকিস্তান ভয়ংকর।
‘পাকিস্তানের খেলোয়াড়রা শারীরিকভাবে খুবই শক্তিশালী। তাদের চার খেলোয়াড় ডেনমার্কে খেলে। পাঁচ-ছয়জন খেলোয়াড় খেলে ইউরোপে। তারা নিষেধাজ্ঞায় ছিল বলে শক্তি কমে গেছে এমন কিন্তু নয়। নেপালের বিপক্ষে ভালো খেলেই জিতেছে। তারা টুর্নামেন্টের অন্যতম ফেভারিট দল। শক্তিশালী দল। আর আমাদের কাছে প্রতিটি ম্যাচই সমান গুরুত্বপূর্ণ। সেটা যার সঙ্গেই হোক না কেন।’
নেপালের বিপক্ষে বল দখলে অনেকখানি পিছিয়ে থাকলেও দ্রুত কাউন্টার অ্যাটাকে গোল করেছে পাকিস্তান। তুলনামূলক লম্বা হওয়ায় এরিয়াল বলেও বেশ শক্তিশালী দলটি। আর ভুটানের বিপক্ষে কাউন্টার অ্যাটাকেই দুর্বলতা প্রকাশ পেয়েছে স্বাগতিকদের। কাউন্টার অ্যাটাক আর বাতাসে বল দখলের লড়াইয়ে পাকিস্তানের থেকে কতটুকু এগিয়ে থাকবে বাংলাদেশ? লাল-সবুজ ডিফেন্ডার তপু বর্মণ জানালেন নিজেদের দুর্বলতা বিষয়ে ওয়াকিবহাল তারা।
‘পাকিস্তানিরা বাতাসে শক্তিশালী হওয়ায় আমরা চেষ্টা করবো ম্যান টু ম্যান মার্কিং করার। তারা যেন বাতাসে বল না পায় সে চেষ্টাও থাকবে আমাদের। ম্যাচটা আমাদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। আমরা চাইবো ম্যাচ জিতেই সেমিফাইনালের পথটা পরিষ্কার করতে।’
জেমি ডেও চান সেমির পথটা এ ম্যাচেই পরিষ্কার করে রাখতে। সেটা ড্র কিংবা জয় যেভাবেই হোক। গ্রুপ পর্বে নেপালের বিপক্ষে শেষ ম্যাচ সম্ভাবনা ঝুলিয়ে রাখতে রাজি নন স্বাগতিক কোচ, ‘ম্যাচটা আমরা জিততে চাই। তাই বলবো আমরাই ফেভারিট। আমাদের চেষ্টা থাকবে যেকোনভাবে একটা পয়েন্ট আমাদের পক্ষে নেয়ার।’
ভুটানের বিপক্ষে ম্যাচে লোকারণ্য ছিল বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়াম। পাকিস্তানের বিপক্ষে স্বাগতিক দর্শকদের কাছ থেকে সেই সমর্থনটা চাইলেন বাংলাদেশ কোচ, ‘স্থানীয় দর্শকদের সমর্থনটা খুবই জরুরি। মাঠে সেদিন (মঙ্গলবার)পাঁচ-দশহাজার দর্শক উপস্থিত ছিল। আমি এরকমটা এখানে আগে কখনো দেখিনি। ছেলেদের উৎসাহিত-অনুপ্রাণিত করতে সমর্থনটা ভীষণ দরকার।’