কক্সবাজারে বিশ্বের দীর্ঘতম সমুদ্র সৈকতে আনন্দ উৎসবের মধ্য দিয়ে দেশের বৃহৎ প্রতিমা বিসর্জন সম্পন্ন হয়েছে। সৈকতের লাবনী পয়েন্টে বিকেলে ১০০টি প্রতিমা বঙ্গোপসাগরে বিসর্জন দেয়া হয় লাখো মানুষের উপস্থিতিতে।
প্রতিমা বিসর্জনকে ঘিরে প্রতি বছর কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতে মানুষের ঢল নামে। এবারও তার ব্যতিক্রম হয়নি। শুক্রবার সৈকতের প্রায় দুই কিলোমিটার এলাকাজুড়ে লোকে লোকারণ্য হয়ে ওঠে। সৈকতের বালিয়াড়ি পরিণত হয় মানুষের মিলনমেলায়। পূজারি, ভক্ত, দর্শণার্থী,পর্যটকসহ সব সম্প্রদায়ের মানুষের মিলন মেলায় পরিণত হয় কক্সবাজার সৈকত।
দুপুরের পর থেকে বিভিন্ন মন্ডপ থেকে গাড়ীতে করে সারিবদ্ধভাবে প্রতিমাগুলো সৈকতে আসতে থাকে। এরপর শতাধিক প্রতিমা সাগরে বিসর্জন দেন ভক্ত-পূজারিরা। এসময় ঢাক-ঢোল, কাঁসরের তালে আরতির বাদ্য বাজনায় ‘মা দুর্গার জয়’ স্লোগানে মুখরিত হয়ে ওঠে সাগরতীর।
ঢাকা থেকে আসা রহমান-রুনি দম্পতি জানান, খুব ভালোভাবে বির্সজন উপভোগ করলাম। বান্দরবান থেকে আসা হাসি চাকমা বলেন, এ বির্সজন দেখতে এসেছিলাম, এখানে এত মানুষ আগে জানতাম না।
খুলনা থেকে আসা পর্যটক রহমান জানান, এত মানুষের অংশগ্রহণে বির্সজন দেখে মনে হচ্ছে বাংলাদেশ আসলে সম্প্রীতির দেশ।
সৈকতের বৃহৎ প্রতিমা বিসর্জন অনুষ্ঠানে অতিথিরা বলেন, পৃথিবীর দীর্ঘতম সমুদ্র সৈকত কক্সবাজারে দেশের বৃহৎ প্রতিমা বিসর্জন উৎসবকে ঘিরে মানুষের সম্প্রীতি আর উচ্ছ্বাস প্রমাণ করে বাংলাদেশ শান্তি-সম্প্রীতির দেশ। কক্সবাজার সৈকতের এই উৎসব সাম্প্রাদায়িক সম্প্রীতির মহা মিলন উৎসব। সমুদ্র সৈকতের এই ভেন্যু সকল সম্প্রদায়ের উৎসবের সার্বজনীন ভেন্যুতে পরিণত হয়েছে।
তারা বলেন, শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশে শান্তি-সম্প্রীতি বিরাজ করছে। রোহিঙ্গা সংকট নিয়ে বিশ্বে নানা আলোচনা সমালোচনা হচ্ছে। জাতিসংঘসহ সব দেশ বলছে, কঠিন চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করছে বাংলাদেশ। সেই কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখেও দেশে শান্তি-সম্প্রীতি বজায় রেখে এগিয়ে যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তার যোগ্য নেতৃত্ব প্রশংসিত হয়েছে সারা বিশ্বে। তিনি মানবতার, শান্তির আর সম্প্রীতির নেত্রী।
কক্সবাজার জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি অ্যাডভোকেট রনজিত দাশের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক বাবুল শর্মার সঞ্চলনায় বিজয় দশমীর অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন সংসদ সদস্য সাইমুম সরওয়ার কমল, উখিয়া-টেকনাফ আসনের সংসদ সদস্য আব্দু রহমান বদি, জেলা প্রশাসক মো. কামাল হোসেন, পুলিশ সুপার এবি এম মাসুদ হোসেন, কক্সবাজার ট্যুরিস্ট পুলিশের পুলিশ সুপার জিল্লুর রহমান, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট সিরাজুল মোস্তফা, সাধারণ সম্পাদক ও পৌর মেয়র মুজিবুর রহমান, জেলা মহিলা আওয়ামী লীগ সভাপতি কানিজ ফাতেমা আহমেদ, হিন্দু ধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্টের ট্রাস্টি অধ্যাপক প্রিয়তোষ শর্মা চন্দন প্রমুখ।