চ্যানেল আই অনলাইন
হৃদয়ে বাংলাদেশ প্রবাসেও বাংলাদেশ
Channelionline.nagad-15.03.24

ও এখনো শ্বাস নিচ্ছে, বন্ধ চোখের পাতাও কাঁপছে

মাগুরায় মায়ের পেটে থাকা অবস্থায় গুলিবিদ্ধ শিশুটি এখন শুয়ে আছে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের (ঢামেক) শিশু ওয়ার্ডে। অপরিণত শিশুটিকে আগাগোড়া তুলার আস্তরে ঢেকে রাখা হয়েছে।

পৃথিবীর আলো দেখার আগেই প্রতিহিংসার শিকার ফুটফুটে মেয়েশিশুটির মুখটি শুধু দেখা গেলো। ঘাতকের বুলেট ছোট্ট শরীরটি এফোঁড়-ওফোঁড় করে বেরিয়ে গেছে।

তবে এখনো শ্বাস নিচ্ছে, বন্ধ চোখের পাতাও কাঁপছে, চলছে স্যালাইন। কর্তব্যরত চিকিৎসক জানান, মেয়ে শিশুটির অবস্থার কিছুটা উন্নতি হলেও এখনো সে আশঙ্কামুক্ত নয়। শিশুটির গুলিবিদ্ধ মা নাজমা বেগমের অবস্থাও সংকটাপন্ন।

মুমূর্ষু নাজমা ভর্তি আছেন মাগুরা সদর হাসপাতালে। আর তার চারদিন বয়সী গুলিবিদ্ধ ও অপরিণত মেয়েটিকে উন্নত চিকিৎসার জন্য রোববার ভোরে ঢাকায় নিয়ে আসেন ফুফু শিউলি বেগম এবং তার স্বজনরা। কোনো নাম রাখা হয়নি বলে হাসপাতাল কাউন্টারের ভর্তি খাতায় রোগির নাম লেখা হয়েছে ‘ নাজমা’স বেবি’।

স্বজনরাই চ্যানেল আই অনলাইনকে জানান, পেটে বাচ্চার দোহাই দিয়েও হামলাকারীদের হাত থেকে রেহাই পাননি নাজমা।

শিশুটির ফুফু জানান, যুবলীগের আধিপত্যবিস্তারকে কেন্দ্র করে বৃহস্পতিবার বিকালে বাড়িতে ঢুকে হামলা চালায় প্রতিপক্ষ। এতে নিহত হন আব্দুল মোমিন ভূইয়া নামে শিশুটির এক আত্মীয়। আর মারাত্মক আহত হন অন্তঃসত্ত্বা নাজমা।

নিজ বাড়িতে আটমাসের অন্তঃসত্ত্বা নাজমা বেগম গুলিতে মারাত্মক আহত হওয়ার পর মাগুরাতেই সিজার করে সন্তান ভূমিষ্ঠ করানো হয়। মায়ের জীবন বাঁচাতে অপরিণত অবস্থায় ভূমিষ্ঠ হওয়া মেয়েটিকে দু’দিন মাগুরাতেই চিকিৎসা দেয়া হয়। পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে ঢাকায় পাঠানোর পরামর্শ দেন সেখানকার চিকিৎসকরা।

নানাভাবে বিপর্যস্থ পরিবারটির পাশে দাঁড়িয়েছে এলাকার মানুষ। প্রশাসনের তরফ থেকেও মা-মেয়ের চিকিৎসার জন্য অর্থ সাহায্য দেয়া হয়েছে বলে জানালেন শিশুটির ফুফু শিউলি বেগম।

তিনি আরও জানান, তাদের সহযোগিতাতেই রোববার অ্যাম্বুলেন্সে করে শিশুটিকে ঢাকায় নিয়ে আসেন তারা।

ঢামেক-এ গিয়ে দেখা যায়, ২০৫ নম্বর ওয়ার্ডে আগাগোড়া তুলায় মোড়ানো অবস্থায় শুয়ে আছে নাজমার মেয়েটি। এখনো ওর নাম রাখা হয়নি বলে জানান শিশুটির ফুফু। তিনি জানান, এখনো চিকিৎসকরা নিশ্চিত করে কিছু বলেননি। ছোট্ট ভাতিজি আগে প্রাণে বাঁচুক, তারপর নাম তো রাখাই যাবে।

কর্তব্যরত চিকিৎসক তানিয়া জানান, গুলিটি শিশুটির পিঠ দিয়ে ঢুকে বুকের ডান পাশ দিয়ে বের হয়ে গেছে। শিশুটির ডান চোখ এবং হাতেও আঘাত রয়েছে। প্রতি দুঘণ্টা পর পর নিয়মিত পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। এখনো শিশুটির অবস্থা আশঙ্কামুক্ত নয়।

কারণ হিসেবে তিনি জানান, প্রি-ম্যাচিউর বা অপরিণত শিশুটির আঘাত একাধিক হওয়ায় এখনি নিশ্চিত করে কিছু বলা যাচ্ছে না।