ওয়ান ইলেভেনের কুশিলবরা আবারও সক্রিয় হয়েছে মন্তব্য করে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলছেন: বিএনপির সঙ্গে হাত মিলিয়ে ওয়ান ইলেভেনের কুশীলবরা আবারও সক্রিয় হয়েছে। সরকার এ বিষয়ে জানে না কিংবা খোঁজ খবর রাখছে না, তারা এটা ভাবলে ভুল করবে।
মঙ্গলবার ধানমণ্ডিস্থ আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলন শেষে তিনি এ কথা বলেন।
বিএনপিকে উদ্দেশ্য করে কাদের বলেন: ষড়যন্ত্র করে দেশকে ধ্বংস করে যারা ক্ষমতার জন্য রাজনীতি করে তাদের সঙ্গে কীভাবে আমরা ওয়ার্কিং আন্ডার স্ট্যান্ডিং তৈরি হবে। আন্দোলনে ব্যর্থ এ দল কখনও কোটা সংস্কার আন্দোলন আবার কখনও শিক্ষার্থীদের অরাজনৈতিক আন্দোলনের ওপর ভর করছে। এখন তারা ওয়ান ইলেভেনের কুশীলবদের সঙ্গে হাত মিলিয়ে সেই চক্রান্ত করে যাচ্ছে। সরকার কিছু জানে না ভাবলে ভুল করবেন।
শিক্ষার্থীদের আন্দোলন শেষে এখন জনজীবনে স্বস্তি ফিরেছে মন্তব্য করে আওয়ামী লীগের এ নেতা বলেন: স্বস্তি ফিরে এসেছে। বাংলাদেশের জীবনযাত্রা স্বাভাবিক। দুর্ভোগের সমাধান হতে চলেছে। সম্পূর্ণ না হলেও পরিবহণ সংকট অনেকটা কেটেছে। দূরপাল্লার পরিবহন স্বাভাবিক অবস্থায় চলে আসবে। আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের অভিনন্দন জানাবো। শিক্ষক ম্যানেজিং কমিটিকেও অভিনন্দন জানবো। আন্দোলনের ইতি টেনে কাল বিলম্ব না করে পড়াশুনায় মনোনিবেশ করেছে, ঘরে ফিরে গেছে। গোটা জাতি স্বস্তি পেয়েছে।
শিক্ষার্থীদের দাবি প্রসঙ্গে তিনি বলেন: তাদের যে ৯ দফা দাবি শেখ হাসিনার সরকার মেনে নিয়েছে। বেশ কিছু দাবি বাস্তবায়ন করা হয়েছে। সড়ক পরিবহন আইন ক্যাবিনেটের পর পার্লামেন্টে পাঠানো হয়েছে। এ দাবিটি পূরণ হলে শিক্ষার্থীদের সব দাবি বাস্তবায়ন করা হবে।
দুই শিক্ষার্থী নিহতের ঘটনায় জড়িতদের গ্রেপ্তারই করা হয়েছে। তাদের চারজন এখন রিমান্ডে। এ ঘটনার সঙ্গে যারা জড়িত তাদের বিষয়ে কঠোর অবস্থানে রয়েছে সরকার।
সড়ক পরিবহন আইন প্রসঙ্গে কাদের বলেন: পৃথিবীর কোন দেশেই সড়ক পরিবহন আইনে মৃত্যুদণ্ডের বিধান থাকে না। ৩৫ বছর পর একটা অধ্যাদেশ আইনে উত্তরণ হওয়ার পথে রয়েছে। ৮৩ সালের এ আইনে শাস্তি ছিলো না বলতে গেলেই চলে। সেটা অপরাধের পুনরাবৃত্তি রোধে কিছু মাত্র সহায়ক ছিলো মাত্র৷ এখন এটা পূর্ণতার পথে রয়েছে। নিজে এর সঙ্গে যুক্ত থাকতে পেরে আমি গর্বিত।
জাবালে নূরের ড্রাইভার ইচ্ছে করেই এ হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছিলো বলে স্বীকার করেছে বলে সাংবাদিকদের জানিয়ে কাদের বলেন: তদন্তেও যদি আসে ডেলিভারেড কিলিং, মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হতে পারে। বিচার শেষ না হওয়া পর্যন্ত এটা বলতে পারি না। যারা সর্বোচ্চ শাস্তি ৫ বছর বলছেন, তারা আংশিক সত্য বলছেন। ডেলিভারেড কিলিং হলে প্যানাল কোর্টে ৩০২ ধারায় এটা চলে যাবে।
শিক্ষার্থীদের প্রয়াস প্রসঙ্গে সড়ক পরিবহণ মন্ত্রী বলেন: শিক্ষার্থীরা রাস্তায় রাস্তায় গাড়ির কাগজ-ড্রাইভিং লাইসেন্স পরীক্ষা করেছে। ৭ বছর আগে আমিই শুরু করছি। সকলের সহযোগিতা পেতাম অনেক দূর এগিয়ে যাওয়া সম্ভব ছিলো। যার কারণে ছাত্রছাত্রীদের আন্দোলন গড়ে তুলতে হয়েছে।
নিরাপদ সড়কের দাবিতে যারা আন্দোলন করছেন তাদের উদ্দেশ্য বলেন, আইনটি নিয়ে এখনও কথা বলার সুযোগ রয়েছে। এ বিষয়টি নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত মনে করে যারা কথা বলছেন তাদের বলবো, পরিকল্পিত ভাবে ষড়যন্ত্রের রাজনীতি এখানে লক্ষ্য করছি। কোন তৃতীয় পক্ষ যেন এখানে ঘৃণ্য রাজনৈতিক খেলা না খেলতে পারে সেজন্য দায়িত্বশীল ভূমিকা আশা করছি।
শিক্ষার্থীদের দাবি অনুযায়ী আগামী রোববার আন্ডারপাসের কাজের উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এছাড়া, একনেক বৈঠকে তিনি নির্দেশনা দিয়েছেন পার্লামেন্ট ভবন থেকে সংসদ সদস্য ভবন পর্যন্ত এবং বিমানবন্দর রেল স্টেশন থেকে হযরত শাহজালাল বিমান বন্দরের মূল কমপ্লেক্স পর্যন্ত দুইটি ওভারপাস নির্মাণের নির্দেশ দিয়েছেন।
তিনি বলেন: কারা দেশকে অস্থিতিশীল করার জন্য সারাদেশ থেকে তাদের ক্যাডারদের ঢাকা এনে ঢাকা চল কর্মসূচি বাস্তবায়ন করছে, আমরা আবারও লক্ষ্য করছি শান্তিময় পরিবেশে ওয়ান ইলেভেনের কুশিলবরা আবারও সক্রিয় হয়েছে।
সাংবাদিকের উপর হামলার ঘটনায় কোনো ছাত্রলীগ নেতাকর্মী জড়িত নয় মন্তব্য করে তিনি বলেন: ছাত্রলীগের নতুন কমিটি হয়েছে। এখনও তারা ভালোভাবে গুছিয়ে উঠতে পারেনি। এই এলাকার কোন ছাত্রলীগের কোন কর্মী ছিলো না। ৪৬ জন আমাদের লোক আহত হয়ে। এরা সবাই ছাত্রলীগের সাবেক নেতা। তার এ পার্টি অফিসেরই বিভিন্ন উপকমিটিতে দায়িত্বে রয়েছেন। বিএনপি কলঙ্ক চাপিয়ে দিতে চাচ্ছে ছাত্রলীগের ওপর। যারা ঘোলাপানিতে মাছ শিকার করতে চায় তারা টার্গেট করে সাংবাদিকদের। পৃথিবীর বহুদেশে এমনটা হয়।
তবে ছাত্রলীগ জড়িত থাকলে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান তিনি। তিনি বলেন: তালিকা দিন, আমরা ব্যবস্থা নেবো। আওয়ামী লীগের এ ইতিহাস আছে। কাউকে ছাড় দেওয়া হয়নি। বিচারের মুখোমুখি হতে আমাদের ভয় নেই। যেই হোক জড়িত থাকলে কোনো অবস্থাতেই তাদের ছাড় দেওয়া হবে না।
সোহেল তাজের ফেসবুক স্ট্যাটাস প্রসঙ্গে কাদের বলেন: সে রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড থেকে দূরে আছে। এটা তার ব্যক্তিগত ব্যাপার।