জাতিসংঘের মতে, করোনা থেকে মুক্তি পেতে ধনী দেশগুলোর মাঝে ভ্যাকসিন কেনার প্রতিযোগিতা শুরু হয়েছে। এই অসম প্রতিযোগিতা দরিদ্র এবং মধ্যম আয়ের দেশের সব মানুষের টিকার প্রাপ্তির নিশ্চয়তা নিয়ে উদ্বেগ সৃষ্টি হয়েছে।
সোমবার ১৭ জানুয়ারি সুইজারল্যান্ডের দাভোসের ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামের সম্মেলনে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে দেওয়া বক্তব্যে জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তেনিও গুতেরেস ভ্যাকসিন সমতার দাবি করেন।
তিনি বলেন, করোনাভাইরাসকে পরাজিত করে চলমান মহামারির অবসান নিশ্চিত করতে হলে বিশ্বের সবাইকে টিকা দিতে হবে।আমরা যদি সবাইকে ভ্যাকসিন দিতে ব্যর্থ হই, তাহলে ভাইরাসের নতুন নতুন ভ্যারিয়েন্ট সামনে আসবে এবং বিশ্বব্যাপী সেটি ছড়িয়ে পড়বে। একইসঙ্গে সেই পরিস্থিতি আমাদের দৈনন্দিন জীবন ও অর্থনীতিকে স্তিমিত করে রাখবে।
ভার্চ্যুয়াল মাধ্যমে দেওয়া বক্তব্যে জাতিসংঘের মহাসচিব বলেন, ‘গত দু’টি বছর আমাদের সমানে খুবই সাধারণ কিন্তু ভয়াবহ সত্য সামনে এনেছে। আর সেটি হচ্ছে আমরা যদি একজনকেও পেছনে ফেলে রাখি, তাহলে আমরা সবাই পেছনে পড়ে যাবো।’
আর তাই আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে সততা ও ন্যায়ের সঙ্গে করোনা মহামারির বিরুদ্ধে লড়াই করার আহ্বান জানান জাতিসংঘ মহাসচিব।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) করোনা ভ্যাকসিন বিষয়ক একটি পরিকল্পনার তথ্য তুলে ধরে ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামের সম্মেলনে আন্তেনিও গুতেরেস বলেন, ২০২১ সালের মধ্যে বিশ্বের মোট জনসংখ্যার ৪০ শতাংশকে এবং ২০২২ সালের অর্ধেক সময়ের মধ্যে ৭০ শতাংশ মানুষকে টিকা দেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল।
আমরা সেই লক্ষ্যমাত্রা পূরণের ধারে-কাছেও নেই। লজ্জাজনক ভাবে, আফ্রিকার দেশগুলোর তুলনায় ধনী দেশগুলোতে টিকাদানের হার সাতগুণ বেশি।
দাভোসের এই বৈঠকে সারা বিশ্ব থেকে করপোরেট ও রাজনৈতিক নেতা, সেলিব্রেটি, অর্থনীতিবিদ ও সাংবাদিকসহ হাজারও প্রতিনিধি অংশ নিয়েছেন। বৈঠকটি সরাসরি উপস্থিত হয়ে অনুষ্ঠানের কথা থাকলেও ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্ট ছড়িয়ে পড়ায় গত বছরের মতো এবারও সেটি ভার্চ্যুয়ালি আয়োজন করা হয়েছে।
২০২০ সালে দাতব্য সংস্থা অক্সফার্ম বিষয়টি সতর্ক করে এক রিপোর্টে বলেছিল, ধনী দেশের এই কাড়াকাড়ির কারণে আবিস্কারে এগিয়ে থাকা ৫টি ভ্যাকসিনও যদি সফল হয় তবু ২০২২ সালের আগে বিশ্বের দুই তৃতীয়াংশ বা ৬১ শতাংশ মানুষ ভ্যাকসিন নিতে পারবে না।