বিশ্বজুড়ে করোনার ভ্যারিয়েন্ট ওমিক্রনের প্রভাবে দ্রুতগতিতে সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়লেও তা ধীরে ধীরে নিয়ন্ত্রণে আসছে। বিশ্বের বিভিন্ন দেশ ওমিক্রন মোকাবেলায় নানা বাস্তবভিত্তিক পদক্ষেপ নিচ্ছে। যুক্তরাজ্য সম্প্রতি ওমিক্রনের জন্য নেয়া নানা বিধিনিষেধ শিথিল করেছে, আর যুক্তরাষ্ট্রে মডার্না চালু করেছে ওমিক্রন কমাতে সক্ষম বুস্টার ডোজ।
করোনায় শেষ ২৪ ঘণ্টায় মৃত্যু হয়েছে ১০ হাজার ৬৪২ জনের, আর শনাক্তের সংখ্যা ছাড়িয়েছে ৩৫ লাখ। সাম্প্রতিক সময়ে মৃতদের বেশিরভাগই ভ্যাকসিন আওতায় ছিলেন না বলে বিভিন্ন পরিসংখ্যানে উঠে আসছে। বিষয়টি খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
করোনার ওমিক্রন ধরনের উপ-ধরন বের হয়েছে, বিএ.২ এর সাধারণ উপ-ধরন বিএ.১ থেকে অনেক বেশি সংক্রামক বলে বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন। তবে এই উপ-ধরনগুলোর মারাত্মক প্রভাব নেই বলেই চলে। দুটো উপ-ধরনে আক্রান্তদের হাসপাতালে চিকিৎসা নির্ভরতার মাত্রা কম। আরেকটি ইতিবাচক বিষয় হচ্ছে, ওমিক্রন আক্রান্তদের আইসোলেশনে থাকতে হবে মাত্র ৫দিন। যা আগে ক্ষেত্র বিশেষে ১১ থেকে ২১দিন ধরা হতো।
বাংলাদেশে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা বেড়েছে মারাত্মক হারে। তবে হাসপাতালে ভর্তি হওয়া ও অক্সিজেন নিয়ে হাহাকার শোনা যাচ্ছে না বললেই চলে। অনেকটা সাধারণ সর্দি-কাশির চিকিৎসার মতো ওষুধ সেবন ও হোম আইসোলেশনে থেকে সুস্থ হয়ে উঠছে আক্রান্তরা। ওমিক্রন প্রতিরোধের ক্লিনিক্যাল গাইডলাইন চূড়ান্ত করেছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। তবে দেশজুড়ে স্বাস্থ্যবিধি মানার প্রবণতা একদমই কম, এই বিষয়ে নজর দেয়া খুবই প্রয়োজন। কারণ ওমিক্রনসহ অন্য ভ্যারিয়েন্টে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু কিন্তু কিছুটা হলেও বেড়েছে।
সংক্রমণ বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ করা, ব্যাংকে অর্ধেক জনবলসহ নানা নিয়ম জারি হলেও গণপরিবহন, গার্মেন্টস-কারখানা ও মার্কেট-বাজারে পরিস্থিতি স্বাভাবিক আছে। অর্থনীতির চাকা সচল রাখতে হয়তো এটি প্রয়োজন। একইধারায় শিক্ষাঙ্গণেও স্বাভাবিক পরিস্থিতি ফিরিয়ে আনা দরকার সর্বস্তরে করোনার বিধিনিষেধ কার্যকর করে। আমাদের আশাবাদ, সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টায় করোনা মোকাবিলা সহজ হবে, স্বাভাবিক হবে জনজীবন।