গাইবান্ধা-৩ (পলাশবাড়ি-সাদুল্যাপুর) আসনে টানা ছয়বারের সাবেক সংসদ সদস্য এবং জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের প্রার্থী ড. টি আই এম ফজলে রাব্বী চৌধুরী মারা গেছেন (ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)।
বৃহস্পতিবার ভোরে রাজধানীর বনানীতে নিজ বাসায় ৮৪ বছর বয়সে ইন্তেকাল করেন তিনি।
গণফোরামের মিডিয়া প্রধান লতিফুল বারী হামীম বিষয়টি নিশ্চিত করে চ্যানেল আই অনলাইনকে বলেন, রাব্বী চৌধুরী দীর্ঘদিন ধরে ফুসফুসে সংক্রমণ ও উচ্চ রক্তচাপসহ বিভিন্ন রোগে ভুগছিলেন।
তিনি ৩ ছেলে ও ২ মেয়ের বাবা।
ফজলে রাব্বী চৌধুরী জাতীয় পার্টির মনোনয়নে গাইবান্ধা-৩ আসনে ১৯৮৬, ১৯৮৮, ১৯৯১, ১৯৯৬, ২০০১ ও ২০০৮ সালে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন।
রাব্বী চৌধুরীর জন্ম ১৯৩৪ সালে ১ অক্টোবর গাইবান্ধার পলাশবাড়ী উপজেলার তালুকজামিরা গ্রামে। ৬ ভাই ও ২ বোনের মধ্যে তিনি ছিলেন দ্বিতীয়। তার বাবা মরহুম আহসান উদ্দিন চৌধুরী একজন স্কুল শিক্ষক ছিলেন।
রাব্বী চৌধুরী ১৯৫৭ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অ্যানিম্যাল হাজব্যান্ড্রিতে দ্বিতীয় স্থান অধিকার করে বি.এস.সি (অনার্স) ডিগ্রি লাভ করেন ও কৃষি মন্ত্রণালয়ের সরকারি চাকরিতে যোগ দেন। ১৯৬০ সালে যুক্তরাষ্ট্র সরকারের বৃত্তি পেয়ে ১৯৬৩ সালে টেক্সাস থেকে এম.এস.সি এবং ১৯৬৫ সালে পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেন।
এরপর ড. ফজলে রাব্বী বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, ময়মনসিংহে সহকারি অধ্যাপক হিসেবে যোগ দেন। তিনি সেখানে ১৯৬৭ সালে সহযোগী অধ্যাপক হিসেবে এবং ১৯৬৯ সালে অধ্যাপক হিসেবে কর্মরত ছিলেন। পরে ১৯৭১ সালে বিভাগীয় প্রধানের দায়িত্ব পান।
এছাড়াও ডিন, ছাত্র বিষয়ক উপদেষ্টা ও বিশ্ববিদ্যালয় সিন্ডিকেট সদস্য হিসেবে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে দায়িত্ব পালন করেন তিনি।
১৯৭৬ সালে রাব্বী চৌধুরী ইংল্যান্ডের ক্যামব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ে ভিজিটিং প্রফেসর হিসেবে কর্মরত ছিলেন। পরবর্তীতে তিনি উলফসন কলেজের ফেলো নির্বাচিত হন।
ড. রাব্বী ১৯৮৪ সালে এইচ এম এরশাদের জাতীয় পার্টিতে যোগদান করেন। তিনি সাবেক রাষ্ট্রপতি এরশাদের রাজনৈতিক উপদেষ্টা ছিলেন। পরবর্তী সময়ে তিনি ভূমি মন্ত্রী, ত্রাণ ও পুনর্বাসন মন্ত্রী ও সংস্থাপন মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন।
ফজলে রাব্বী ১৯৮৬ সালে জাতীয় পার্টির মনোনয়ন নিয়ে প্রথম সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন এবং জাতীয় সংসদের চিফ হুইপের দায়িত্ব পালন করেন। সভাপতি সরকারি প্রতিশ্রুতি কমিটি, কৃষি বিষয়ক সংসদীয় কমিটির সভাপতি ও বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন সংসদীয় কমিটির সভাপতি নির্বাচিত হন তিনি।
পরে তিনি জাতীয় পার্টি (কাজী জাফর)-এ যোগ দেন। পার্টি চেয়ারম্যান কাজী জাফর মারা গেলে তিনি দলটির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করছিলেন।