আবহাওয়া পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে চুলের অনেক সমস্যা দেখা দিতে পারে। তাই আবহাওয়া ও পরিবেশ বুঝে চুলের যত্ন নেওয়া প্রয়োজন। বৃষ্টিতে চুল ভিজলে ভেঙে যেতে পারে এবং পড়েও যায়। তাই এবার ঈদে চুলের যত্নে নিতে হবে বাড়তি আয়োজন।
তাহলে চলুন জেনে নেওয়া যাক যেসব ঘরোয়া উপায়ে আপনি চুলের যত্ন নিতে পারবেন।
আবার চুলের যত্নে একটু ঘাটতি হলেই খুশকিও হতে পারে। তাই চুলে নিয়মিত যত্ন নেওয়া প্রয়োজন।
চুলের যত্নে ডিম
চুল কন্ডিশনিং করার জন্য ডিমের তুলনা হয় না। চুল ময়েশ্চারাইজারের জন্য ডিমের সাদা অংশ ব্যবহার করা যায়। রুক্ষ চুলে আধা কাপ পরিমাণ ডিম ভালোভাবে ফেটিয়ে তা মাথায় লাগাতে হবে। ২০ মিনিট পর ঠাণ্ডা পরিষ্কার পানি দিয়ে চুল ধুয়ে ফেলতে হবে।
চুলের পরিচ্ছন্নতা
চুল পড়ে যাওয়ার অন্যতম কারণ হল মাথার ত্বকের খুশকি ও শুষ্ক ত্বক। আর চুল নিয়মিত পরিষ্কার না করলেই চুল পড়ার সমস্যা বেশি হয়। তাই নিয়মিত মাথার ত্বক ও চুল পরিষ্কার রাখা প্রয়োজন।
গরম পানি এড়িয়ে চলুন
গরম পানি ব্যবহার করলে মাথা থেকে চুল রক্ষা করার যে তেল বের হয় তা ধুয়ে যায়। ফলে চুল হয়ে পড়ে রুক্ষ ও ভঙ্গুর। ডা. সু্ত্তারের মতে, যারা গরম পানি ব্যবহারে অভ্যস্ত তারা শরীরের তাপমাত্রা থেকে সামান্য বেশি উষ্ণতার পানি ব্যবহার করতে পারেন। অর্থাৎ কুসুম গরম পানি দিয়ে গোসল করা যেতে পারে। তবে অতিরিক্ত গরম পানি ত্বক শুষ্ক করে ফেলে এবং চুলেরও ক্ষতি করে।
চুলের উজ্জ্বলতা বাড়াতে
এককাপ কন্ডিশনারের সঙ্গে দুই থেকে তিন টেবিল-চামচ মধু ভালোভাবে মেশান। এরপর ভেজা চুলে মাখুন। এই মিশ্রণ ৩০ মিনিট রাখার পর ভালোভাবে ধুয়ে ফেলতে হবে। এটা মাথার উপরের ত্বক ভালো রাখে আর চুলের উজ্জ্বলতা বাড়ায়।
চুলে আপেল সাইডার ভিনিগারের ব্যবহার
চুল প্রাণোজ্জল আর ‘বাউন্সি’ করে তোলার জন্য আপেল সাইডার ভিনিগার বেশ উপকারী। হাল্কা গরম পানির সঙ্গে ভিনিগার মিশিয়ে চুলে লাগাতে হয়। তবে আপেল সাইডার ভিনিগারের গন্ধ থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য পাঁচ মিনিট পরেই এটি ধুয়ে ফেলা উচিত।
ডিম ও দইয়ে কন্ডিশনার তৈরি করুন
প্রোটিন কন্ডিশনার তৈরির জন্য ১টি ডিম ও পরিমাণ মতো দই একসঙ্গে মিশিয়ে মাথার তালুতে ভালোমতো লাগাতে হবে। পাঁচ থেকে ১০ মিনিট পর তা ধুয়ে ফেলুন।
মজবুত চুলের জন্য
শুষ্ক ও রুক্ষ চুলের জন্য আমন্ড অয়েল বা কাজুবাদামের তেল বিশেষ উপযোগী। পরিমাণ মতো তেল নিয়ে ৪০ সেকেন্ড গরম করুন। এবার চুল ভাগ ভাগ করে মাথার তালুতে ভালোভাবে তেল দিন। ৩০ মিনিট পর চুল শ্যাম্পু করে ঠাণ্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে কন্ডিশনার ব্যবহার করুন।
সুন্দর চু্লের জন্য লেবুর রস
লেবুর রস চুলের মলিনভাব দূর করতে সাহায্য করে। চুল ধোয়ার পর ১ টেবিল-চামচ লেবুর রস লাগান। তারপর তোয়ালে দিয়ে শুকনা করে মুছে ফেলতে হবে। এতে চুল নরম ও উজ্জ্বল হয়।
রোদে পোড়া চুলের যত্ন
আধা কাপ মধু, ১ বা ২ টেবিল-চামচ অলিভ অয়েল এবং ১ থেকে ২ টেবিল-চামচ ডিমের কুসুম মিশিয়ে একটি মিশ্রণ তৈরি করতে হবে। তারপর চুলে দিয়ে ২০ মিনিট অপেক্ষা করে কুসুম গরম পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।
আঁটসাঁট করে চুল না বাঁধা
বেশি শক্ত বা আঁটসাঁট করে বাঁধলে চুল দুর্বল ও ভঙ্গুর হয়ে যায়। তাই যাদের চুল পড়ার সমস্যা আছে তাদের বেশি শক্ত করে চুল বাধা এড়িয়ে চলতে হবে।
সঠিকভাবে চুল আঁচড়ানোর কৌশল
প্লাস্টিকের চিরুনি দিয়ে চুল আঁচড়ালে স্থির বিদ্যুৎ সৃষ্টি হয়, যে কারণে চুল ভেঙে যায়। তাই প্লাস্টিকের চিরুনি ব্যবহার বাদ দিতে হবে। জট ছাড়ানোর জন্য চুল আঁচড়ানোর সবচেয়ে ভালো পদ্ধতি হচ্ছে প্রথমে চুলের শেষের অংশ আঁচড়াতে হবে। তারপর চুলের গোড়া থেকে আগা পর্যন্ত লম্বা করে আঁচড়াতে হবে। এই কৌশল চুলে প্রাকৃতিক তেল ছড়িয়ে যেতে সাহায্য করে এবং চুল ভাঙার সমস্যা কম হয়।
ভেজা চুল না আঁচড়ানো
ভেজা চুল তোয়ালে দিয়ে ভালো ভাবে মুছে শুকাতে হবে তারপর মোটা দাঁতের চিরুনি দিয়ে আঁচড়িয়ে জট ছাড়াতে হবে। শুকনা চুলের তুলনায় ভেজা চুল তিনগুন বেশি দুর্বল থাকে। তাই ভেজা চুল আঁচড়ালে চুল ভেঙে যাওয়ার সম্ভাবনা বেশি।