চ্যানেল আই অনলাইন
হৃদয়ে বাংলাদেশ প্রবাসেও বাংলাদেশ
Channelionline.nagad-15.03.24

এল ক্ল্যাসিকোর ‘এ-টু-জেড’

এল ক্ল্যাসিকোর বিস্তৃত ইতিহাসের অর্থ পুরো বর্ণমালা জুড়েই রয়েছে। সেখানে বিতর্ক, গোল স্কোরিং, কোচ এবং আরও অনেককিছু রয়েছে। সেসব দুর্দান্ত প্রতিদ্বন্দ্বিতার সর্বোত্তম দিকগুলোর দিকে একটু নজর দেয়া যাক…

এ: এএমও (মাসআটর)
পুয়েটো এএমও ((ফা***ম্যাটার), বার্সার ডাগআউটে থাকার সময় রিয়াল কোচ হোসে মরিনহো সম্পর্কে এ মন্তব্য করেছিলেন পেপ গার্দিওলা।

বি: বোয়েটেলাস (বোতল)
সান্তিয়াগো বার্নাব্যুতে ১৯৬৮ সালের কোপা ডেল রের ফাইনালে রেফারির সিদ্ধান্ত নিয়ে চরম ক্ষুব্ধ হয় রিয়াল মাদ্রিদ সমর্থকরা। রাগে একসময় রেফারির দিকে বোতল ছুঁড়ে মারে তারা। শেষপর্যন্ত ওই ম্যাচের নাম হয়ে যায় ‘ফাইনাল অব বোতল’। সেই ঘটনার পর স্টেডিয়ামে বোতল ও গ্লাস বিক্রি নিষিদ্ধ হয়ে যায়।

সি: কোসিনিলো (শুয়োরের মাথা)
ক্ল্যাসিকোর ইতিহাসের অন্যতম আলোচিত ঘটনা। বার্সেলোনা ছাড়ার পর রিয়াল মাদ্রিদের খেলোয়াড় হিসাবে লুইস ফিগো ক্যাম্প ন্যুতে ফিরলে বার্সা ভক্তরা তাকে লক্ষ্য করে শুয়োরের মাথা নিক্ষেপ করে।

ডি: ডি স্টেফানো
আলফ্রেডো ডি স্টেফানো ১৯৫০-এর দশকে বার্সেলোনা এবং রিয়াল মাদ্রিদের মধ্যে লড়াইয়ের বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছিলেন এবং এ ফরোয়ার্ড পরে লস ব্লাঙ্কোসে যোগ দিয়েছিলেন। তিনি যোগ দেয়ার পরের বছরগুলোতে রিয়ালকে বিশাল সাফল্য এনে দেন। এখন ভালদেবাসে তার নামে একটি স্টেডিয়াম রয়েছে।

ই: ইসলোগান (স্লোগান)
বার্সেলোনার ‘মেস ক্যু আন ক্লাব’র স্লোগান (একটি ক্লাবের চেয়েও বেশি) বিশ্বব্যাপী স্বীকৃত, ক্লাবের সভাপতি নার্সিস দে কারেরাস এ বাক্যটি ১৯৬৮ সালে কাতালান সমাজে ক্লাবের ভূমিকা বোঝানোর জন্য তৈরি করেছিলেন।

এফ: ফিগো
লুইস ফিগো তার চমকপ্রদ ক্যারিয়ারে বার্সেলোনা এবং রিয়াল মাদ্রিদ উভয়ের হয়েই খেলেছিলেন। ২০০০ সালে বার্সা থেকে ২ মিলিয়ন ইউরোতে সরাসরি রিয়ালে পাড়ি দিয়েছিলেন। তারপর থেকে বার্সা-রিয়াল খেলোয়াড় চুক্তিতে শর্ত রাখতে শুরু করে ক্লাব ছাড়লে সরাসরি চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী ক্লাবে যাওয়া যাবে না।

জি: গুরুসেটা
এমিলিও গুরুসেটা মুরো ক্ল্যাসিকোর ইতিহাসে অন্যতম নাম। ১৯৭০ সালে তিনি মাঠে নামার পরই একটা পেনাল্টি পান। যেটা এখনো ‘গুরুসেট পেনাল্টি’ হিসাবে পরিচিত। কারণ বার্সার জ্যাকউইম রাইফ পেনাল্টি বক্সের বাইরে ম্যানুয়েল ভেলাস্কেজকে ফাউল করলেও পেনাল্টি দেন রেফারি।

এইচ: হুগো এন্ড হারিস্টো
হুগো সানচেজ এবং হিস্টো স্টোইককভ ছিলেন দু’জন দুর্দান্ত স্ট্রাইকার, যারা এখনো পর্যন্ত ক্ল্যাসিকোতে স্থান ধরে রেখেছেন। দুজনই নিজেদের ভক্তদের মধ্যে একরকম মহিমান্বিত হয়ে আছেন এবং উভয়েই নিজ নিজ ক্লাবের প্রতিনিধিত্ব করেন এতদিনেও!

আই: ইকার ক্যাসিয়াস
১৯৯৭ থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত ইকার ক্যাসিয়াস ছিলেন রিয়াল মাদ্রিদের একজন সফল খেলোয়াড়, গোলরক্ষক। ক্ল্যাসিকোর সময় বিবাদ মেটানোর জন্য প্রায়শই তিনি প্রতিপক্ষ জাভি হার্নান্দেজকে ডাকতেন।

জে: জোহান(ইয়োহান) ক্রুইফ
১৯৭৩ সালে প্রথমবারের মতো খেলোয়াড় হিসাবে আসার পর থেকে ১৯৮৮ সালে কোচ হিসাবে দায়িত্ব নেয়া পর্যন্ত এ ডাচম্যান বার্সেলোনাকে ক্লাব হিসাবে পরিবর্তন করে ফেলেছিলেন সাফল্যের খতিয়ানে।

কে: কুবালা
লাসজলো কুবালা বার্সেলোনার শুরুর দিকের নায়কদের একজন, তিনি সর্বদা রিয়াল মাদ্রিদের প্রতি শ্রদ্ধাশীল ছিলেন এবং ১৯৫৬ সালে রাজা ‘লুই মোলোয়ানি’কে সম্মান জানানোর ম্যাচে বিখ্যাত সাদা শার্টে খেলেছিলেন।

এল: লিওনেল মেসি
রিয়াল মাদ্রিদ তার অন্যতম ফেভারিট পতিপক্ষ। বার্সেলোনা জার্সিতে রিয়ালের বিপক্ষে ২৬টি গোল করেছেন মেসি।

এম: মানিটা (এ লিটল হ্যান্ড)
সাম্প্রতিক ক্ল্যাসিকোগুলোতে মানিটা (এ লিটল হ্যান্ড) প্রতীক তৈরি করেছেন জেরার্ড পিকে। তবে ১৯৯৪ সালে রিয়ালের বিপক্ষে বার্সেলোনা ৫-০ গোলে জয়ের সময় এটি প্রথম ব্যবহার করেন ক্রুইফের সহকারী টনি ব্রুইনস স্লট।

এন: নেইমার
ক্যাম্প ন্যুতে যোগ দেয়ার আগে রিয়াল-বার্সা দুই দলেই আলোচিত ছিলেন নেইমার। পরে অবশ্য বার্সাই তাকে সই করায়। ২০১৭ সালে বার্সেলোনা ছেড়ে পিএসজিতে চলে গেছেন ব্রাজিলিয়ান তারকা। এখন অবশ্য আবার কাতালান ক্লাবে ফিরতে চান।

ও: ওজিয়েজা (কান)
বার্সেলোনা ছাড়ার পরে রিয়াল মাদ্রিদের হয়ে ক্যাম্প ন্যুতে ফিরে ফিগো গ্যালারির দিকে কান পেতে ঘরের অনুরাগীদের ক্ষুব্ধ করেছিলেন।

পি: পিসোটন (স্ট্যাম্প/টিকিট)
স্টোইচকভকে ১৯৯০ সালের ‘সুপারকোপা দে এস্পানা’র সময় রেফারি উরিজার আজপিতার্থে লাল কার্ড দেখানোর জন্য একটা টিকিট ব্যবহার করেছিলেন। পরে অবশ্য রেফরিকে ছয় মাসের নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়েছিল।

কিই: কুইন্টা (দ্য গ্রুপ/দল)
১৯৮০ এবং ’৯০-এর দশকের কুইন্টা ডেল বুয়েট্রে রিয়েল মাদ্রিদের ইতিহাসের অন্যতম ভয়ঙ্কর আক্রমণভাগকে বলা হত। সেখানে খেলতেন এমিলিও বুট্রাগেনো, মিশেল, ম্যানুয়েল সানচেজ, মার্টিন ওয়াজকেজ এবং মিগুয়েল পার্দেজা। ১৯৯০-এর দশকেও কুইন্টা ডেল মিনি নিয়ে বার্সেলোনা গিয়েছিল রিয়াল, যাদের মধ্যে ইভান ডে লা পেনা, অ্যালবার্ট সেলাদেস, অস্কার গার্সিয়া এবং রজার গার্সিয়া ছিলেন।

আর: রোমেরিটো
প্যারাগুইয়ান মিডফিল্ডার, ১৯৮৯ সালে বার্সেলোনার হয়ে স্বাক্ষর করার মাত্র দুদিন পর ক্ল্যাসিকো খেলেছিলেন। ম্যাচটি গোলশূন্য ভাবে শেষ হয় এবং রোমেরিটোও আলো ছড়াতে ব্যর্থ হন।

এস: সাইলেনসিও (সাইলেন্স/নীরব)
গ্যালারি থেকে আসা দর্শকদের প্রতিক্রিয়ার জবাব জানাতে ১৯৯৯ সালের ক্ল্যাসিকোতে গোল করার পর রাউল গঞ্জালেস ক্যাম্প ন্যুকে নীরব করে দিয়েছিলেন।

টি: টারজান
এই নামে মিগুয়েল বার্নার্ডো বিয়ানচেকে ডাকা হতো, যিনি ১৯৭০ থেকে ১৯৯০-এর দশকে বার্সেলোনার ডিফেন্সকে পাথরের মতো কঠিন করে তুলেছিলেন। ১৯৮৩ সালে কোপা ডেল রের ফাইনালে প্যাকো বোনেটের বিরুদ্ধে কড়া ট্যাকলের পর তিনি বিতর্কিত ব্যক্তি হয়ে ওঠেন।

ইউ: উরিজার
তিনিই সেই রেফারি যিনি স্টোইচকভকে স্ট্যাম্পের কার্ড দিয়ে মাঠ থেকে বের করে দিয়েছিলেন। ওই ঘটনার পর থেকে এই জুটি অনেক খবর তৈরি করেছেন, তবে এখন তারা দুজন একে-অপরের খুব কাছের।

ভি: ভালদানো
হোর্হে ভালদানো রিয়েল মাদ্রিদের একজন খেলোয়াড়, কোচ এবং পরিচালক ছিলেন। ১৯৯৫ সালে লস ব্লাঙ্কোসরা বার্সেলোনাকে ৫-০ ব্যবধানে হারানোর পর থেকে তাকে ‘বিশেষত বস’ হিসাবে স্মরণ করা হয়।

ডব্লিউ: উল্ফ
১৯৭০-এর দশকে রিয়াল মাদ্রিদের হয়ে আর্জেন্টিনার ডিফেন্ডার ছিলেন এনরিক উল্ফ। বার্সেলোনা প্রতি আগ্রহ থাকলেও লাস পালমাস থেকে তিনি লস ব্লাঙ্কোসের হয়েই সই করেছিলেন।

এক্স: জাভি
তিনি মিডফিল্ডে বার্সেলোনার কিংবদন্তি হয়ে উঠেছিলেন এবং কাতালান ক্লাবের হয়ে অনেক ক্ল্যাসিকো জয়ে মূল ভূমিকা পালন করেছেন।

ওয়াই: ইয়ে-ইয়ে
ডি স্টেফানো চলে যাওয়ার পরে রিয়াল মাদ্রিদের একটি যুগের নাম দেয়া হয়েছিল ইয়ে-ইয়ে। কারণ ওই সময়ে রিয়াল ষষ্ঠ ইউরোপিয়ান কাপ জিতেছিল।

জেড: জিদান
জিনেদিন জিদান ২০০১ সালে রিয়াল মাদ্রিদে যোগ দেয়ার পর কোচ ও খেলোয়াড় হিসেবে একাধিকবার চ্যাম্পিয়ন্স লিগ শিরোপা জিতেছেন। এরমধ্যে কোচ হিসেবেই জিতেছেন টানা তিনবার। কোচিংয়ের দায়িত্বে একবার ছেড়ে গেলেও দ্বিতীয় দফায় আবার বার্নাব্যুর ডাগআউটে ফিরেছেন।