পাঁচ সেশনেরও বেশি হাতে রেখে ইনিংস ঘোষণা করেছিল অস্ট্রেলিয়া। লক্ষ্য, নিউজিল্যান্ডকে গুটিয়ে দেয়ার যথেষ্ট সময় হাতে রাখা। সিডনি টেস্টের চতুর্থদিন শেষে অবস্থা এমন, পঞ্চম দিনের পুরোটাই হাতে থেকে গেল অজিদের।
সোমবার সিরিজের তৃতীয় টেস্টে অস্ট্রেলিয়ার দেয়া ৪১৬ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে ২৭৯ রানে হেরে বসেছে নিউজিল্যান্ড। সেই সাথে তিন টেস্টের সিরিজে হয়েছে হোয়াইটওয়াশ।
পার্থে ডে-নাইট টেস্টে ২৯৬ রানের বড় জয়ে সিরিজ শুরু করেছিল অস্ট্রেলিয়া। মেলবোর্নে বক্সিং-ডে টেস্ট জিতে নিয়েছিল ২৪৭ রানে।
অস্ট্রেলিয়ার প্রথম ইনিংসে করা ৪৫৪ রানের জবাবে ২৫৬ রানে অলআউট হয়ে যায় নিউজিল্যান্ড। প্রথম ইনিংস থেকেই ১৯৮ রানের বিশাল লিড। চতুর্থদিনে এসে রান তোলার তাড়া ছিল অজিদের। দ্রুত কিছু রান তুলে বোঝা চাপিয়ে দেয় কিউইদের। ২ উইকেটে ২১৭ তুলে ইনিংস ঘোষণা করে স্বাগতিকরা। সফরকারীদের লক্ষ্য দাঁড়ায় ৪১৬ রান। ব্যাটিং ব্যর্থতার এক সিরিজে তারা দ্বিতীয় ইনিংসে গুটিয়ে গেছে মাত্র ১৩৬ রানে।
সকালে ইতিহাসের মাত্র অষ্টম ব্যাটসম্যান হিসেবে এক টেস্টে সেঞ্চুরি ও ডাবল সেঞ্চুরির ইতিহাস ডাকছিল মার্নাস লাবুশেনকে। অজি তারকা এগোচ্ছিলেন ভালোভাবেই। ফিফটির পরে আউট হয়ে গেলে অবশ্য বিরল রেকর্ডের পাতা অধরাই থেকে যায় ২৫ বছর বয়সী ডানহাতি ব্যাটসম্যানের। ততক্ষণে আবার অজিদের রান জমানোর কাজটা ঠিকঠাক হয়ে গেছে।
কিউইদের বিপক্ষে সিডনি টেস্টে প্রথম ইনিংসে ক্যারিয়ারের প্রথম দ্বিশতক তুলে নিয়েছিলেন লাবুশেন। অ্যাস্টলকে ফিরতি ক্যাচ দেয়ার আগে করে যান ২১৫ রান। ১৯ চার ও এক ছক্কায় ৩৬৩ বলের ইনিংস। এদিন ৫৯ করে তিনি আউট হতেই ইনিংস ঘোষণা করে দেন অধিনায়ক টিম পেইন।
স্বাগতিকদের বড় জয়ের ভিতটা গড়ে দেয় লাবুশেন ফিফটি ও ডেভিড ওয়ার্নারের সেঞ্চুরি। ৩ চারে ঝটপট ৭৪ বলে ৫৯ তোলা লাবুশেন হেনরির বলে ল্যাথামকে ক্যাচ দিয়ে ফিরেছেন।
ওয়ার্নারকে ফেরাতে পারেনি কিউইরা। সাদা পোশাকে ক্যারিয়ারের ২৪তম শতক তুলে নেয়া বাঁহাতি ওপেনার ১১১ রানে অপরাজিত থাকেন। ৯ চারে ১৫৯ রানের ইনিংস। উদ্বোধনীতে জো বার্নসকে (৪০) নিয়ে ১০৭ এবং পরে লাবুশেনকে নিয়ে ১১০ রানের জুটি গড়েছেন ওয়ার্নার।
ক্যারিয়ারের মাত্র ১৪তম টেস্ট খেলতে নেমেছিলেন লাবুশেন। দেড় হাজার রানের কাছে পৌঁছে গেছেন। ডানহাতি ব্যাটসম্যান ৪ সেঞ্চুরির সাথে ৮ ফিফটি যোগ করে ফেললেন নামের পাশে। যার একটি ডাবল সেঞ্চুরি, এই টেস্টের প্রথম ইনিংসে করা।
পুরো সিরিজে যা প্রদর্শনী, সফরকারীদের ভেঙে পড়া নিয়তিই ছিল! দেখার ছিল কতটা প্রতিরোধ আসে। সেটা খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে ৪৭.৫ ওভার পর্যন্ত গেছে। ডি গ্র্যান্ডহোমের ৫২ ছাড়া বলার মতো রান এসেছে কেবল রস টেলরের ২২। বাকিরা উইকেটে গেছেন আর ফিরেছেন। ম্যাট হেনরি চোটে ব্যাটিংয়ে নামতে পারেননি, ৯ উইকেট হারাতেই থেমে যায় কিউই ইনিংস।
অজিদের মধ্যে আবারও সবচেয়ে সফল নাথান লায়ন। অভিজ্ঞ অফব্রেক বোলার ৩০.৪ ওভার হাত ঘুরিয়ে ৬৮ রান খরচায় ৫ উইকেট নিয়েছিলেন প্রথম ইনিংস থেকে। দ্বিতীয় ইনিংসেও কিউইদের ৫ ব্যাটসম্যানকে সাজঘরের পথ দেখিয়েছেন।
ক্যারিয়ারে ১৮তম বার ইনিংসে পাঁচ উইকেটের মাইলফলকে গেলেন ৩২ বছর বয়সী লায়ন। আর এক টেস্টে দুই ইনিংস মিলিয়ে ১০ উইকেটের দেখা পেলেন তৃতীয়বার। তার উইকেট সংখ্যা আরও কয়েকধাপ এগোল চারশ টেস্ট শিকারের দিকে। ডানহাতি স্পিনারের নামের পাশে এখন ৩৯০ উইকেট।
বাকিদের মধ্যে প্রথম ইনিংসে ৩ উইকেট নেয়া প্যাট কামিন্সের এ ইনিংসে সংগ্রহ একটি। প্রথম ইনিংসে এক উইকেট নেয়া মিচেল স্টার্কের নামের পাশে গেছে এই ইনিংসের ৩ উইকেট।
অস্ট্রেলিয়া-নিউজিল্যান্ড এবার ১৩ জানুয়ারি থেকে তিন ওয়ানডের সিরিজে লড়তে শুরু করবে।