নীলফামারী-৪ আসনের এমপি মো. শওকত চৌধুরীরকে আগামি ২ মাসের মধ্যে ৫ কোটি টাকা ঋণদানকারী প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ কমার্স ব্যাংকে জমা দেয়ার নির্দেশ দিয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ।
হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে শওকত চৌধুরীর করা লিভ টু আপিল নিষ্পত্তি করে ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি আবদুল ওয়াহহাব মিঞার নেতৃত্বাধীন পাঁচ বিচারপতির আপিল বেঞ্চ সোমবার এ আদেশ দেন।
‘২ মাসের মধ্যে এমপি মো. শওকত ৫ কোটি টাকা ঋণদানকারী প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ কমার্স ব্যাংকে জমা না দিলে তার জামিন বাতিল হবে।’ বলে জানিয়েছেন দুদকের আইনজীবী খুরশীদ আলম খান।
তবে এমপি মো. শওকতের পক্ষের আইনজীবী মো মাসুদ রানা বলেছেন, ‘২ মাসের মধ্যে ৫ কোটি টাকা জমা দেয়ার নির্দেশ আদালত দিয়ে বিষয়টি নিস্পত্তি করে দিয়েছেন। তবে এর সাথে জামিন বাতিলের কোন সম্পর্ক নেই।’
আদালতে শওকত চৌধুরীর পক্ষে ছিলেন আইনজীবী নুরুল ইসলাম সুজন ও দুদকের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী খুরশীদ আলম খান।
এর আগে গত ১২ নভেম্বর ৫০ দিনের মধ্যে ২৫ কোটি টাকা ঋণদানকারী প্রতিষ্ঠানকে জমা না দিলে নীলফামারী-৪ আসনের সংসদ সদস্য (এমপি) মো. শওকত চৌধুরীর জামিন বাতিল হবে বলে রায় দেন হাইকোর্ট।
এরপর হাইকোর্টের ওই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল বিভাগে আবেদন করেন এমপি মো. শওকত। আপিল বিভাগ হাইকোর্টের সে রায় ২ সপ্তাহের জন্য স্থগিত করেন। আজ সে বিষয়টির উপর আপিল বিভাগ আদেশ দিলেন।
২০১৬ সালের ০৮ ও ১০ মে শওকত চৌধুরীসহ ব্যাংকটির নয় ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে রাজধানীর বংশাল থানায় দুটি মামলা করে দুদক। অন্য আসামিরা হলেন- ব্যাংকটির ফার্স্ট অ্যাসিস্ট্যান্ট ভাইস প্রেসিডেন্ট ও বংশাল শাখার সাবেক শাখা ব্যবস্থাপক মো. হাবিবুল গনি, চাকরিচ্যুত অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক ড. মুহাম্মদ আসাদুজ্জামান, ফার্স্ট এক্সিকিউটিভ অফিসার শিরিন নিজামী, সাবেক সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট মো. সফিকুল ইসলাম, সাবেক ভাইস প্রেসিডেন্ট পানু রঞ্জন দাস, সাবেক ফার্স্ট অ্যাসিস্ট্যান্ট ভাইস প্রেসিডেন্ট ইখতেখার হোসেন, সাবেক অ্যাসিস্ট্যান্ট অফিসার দেবাশীষ বাউল, সাবেক এক্সিকিউটিভ অফিসার ও বর্তমানে এনআরবি গ্লোবাল ব্যাংকের প্রিন্সিপাল অফিসার আসজাদুর রহমান।
এরপর আগস্ট মাসে শওকত চৌধুরী হাইকোর্ট থেকে জামিন পাওয়ার পর নিম্ন আদালতে আত্মসমর্পণ করেন। পরে নিম্ন আদালতও তার জামিন মঞ্জুর করেন।
অভিযোগে বলা হয়, বাংলাদেশ কমার্স ব্যাংকের বংশাল শাখা থেকে ২০১৬ সালের ৮ মে ৮২ লাখ ৮৯ হাজার ৮১৫ এবং ১০ মে ৯৩ কোটি ৩৬ লাখ ২০ হাজার ২১৩ টাকা ঋণ জালিয়াতির অভিযোগে সংসদ সদস্য শওকতসহ ৯ জনের নামে দুটি মামলা করে দুদক। ২০১২ এর ডিসেম্বর থেকে ২০১৫ সালের মার্চ পর্যন্ত মোট ৩৭টি এলসি খুলে মেসার্স যমুনা এগ্রো কেমিক্যাল, মেসার্স এগ্রো কেমিকেল লিমিটেড ও উদয়ন এগ্রো ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের নামে অন্য আসামীদের সঙ্গে যোগসাজসে তিনি এ ঋণ জালিয়াতি করেন। পরে যা সুদে আসলে শত কোটি টাকার ওপরে চলে যায়।
মামলার অন্য আসামীরা গত বছর জামিন চেয়ে হাইকোর্টে আবেদন করে। আবেদনে বলা হয়, প্রধান আসামী শওকত চৌধুরী জামিন পেয়েছেন। তাই তারাও জামিন পেতে পারেন। এরপর গত বছরের ২৪ নভেম্বর জামিন বাতিলে রুল জারি করেন হাইকোর্ট।