প্রতিপক্ষের গোলমুখে ৩১টি শট, যার ১৫টিই লক্ষ্য বরাবর। গোল হয়নি একটিও! অন্যকোন ফুটবলার হলে বিষয়টি নিয়ে হয়তো আলোচনাই হতো না। কিন্তু ব্যক্তিটি যখন লিওনেল মেসি, হৈচৈ থামাবে কে! লা লিগায় টানা চার ম্যাচে গোলবঞ্চিত থাকার পর শুরু হয়ে গেছে বার্সেলোনা অধিনায়ককে নিয়ে হট্টগোল।
টানা চার ম্যাচে গোল পাননি এমন সময় আর একবারই এসেছিল মেসির জীবনে। সবশেষ ২০০৭/০৮ মৌসুমে, টানা ৮ ম্যাচে গোলহীন ছিলেন আর্জেন্টাইন মহাতারকা। সেবার প্রতিপক্ষের জাল বরাবর ৩৯টি শট নিয়েছিলেন মেসি, যার ১১টিই ছিল লক্ষ্য বরাবর। এরপর থেকে এভাবে টানা কয়েক ম্যাচ গোলহীন ছিলেন না মাঝের কোনো মৌসুমেই।
একেবারেই যে ফর্মহীন অবস্থায় আছেন মেসি এমনও নয়। শনিবার গেটাফের বিপক্ষে ম্যাচে ছয়বার গোল বরাবর শট নিয়েছেন তিনি। ম্যাচে বার্সার প্রথম গোলটি করেছেন অ্যান্টনিও গ্রিজম্যান, তাতে সরাসরি অবদান মেসিরই। আগের ম্যাচে ওসাসুনার বিপক্ষে বার্সার তিন গোলের প্রতিটির পেছনে ছিল তার অবদান।
চলতি মৌসুমে এখন পর্যন্ত লা লিগায় ১৪ গোল করে সর্বোচ্চ গোলদাতার তালিকায় শীর্ষেই আছেন মেসি। অতীতের রেকর্ড ঘাটলে অবশ্য গোলের পরিমাণটা বড্ড কম। লিগে এপর্যন্ত ২৪ ম্যাচ খেলে ১৪ গোল, মেসির নামের পাশে বেমানানই। ২০০৭-০৮ সালের পর এই প্রথম বার্সার শতকরা ৫২ শতাংশেরও কম গোল করেছেন মেসি। ওই মৌসুমে দলের মোট গোলের মাত্র ২৯ শতাংশ করেছিলেন ছয়বারের ব্যালন ডি’অর জয়ী তারকা।
হুট করেই যে গোলখরায় ভুগছেন মেসি, পেছনে দায়টা শুধু তার একার নয়। বার্সেলোনা ক্যারিয়ারে এই প্রথম ঝড়-তুফানে ভরা একটা শীতকাল পার করলেন তিনি। জানুয়ারির শুরুতে সুপার কোপা শিরোপা জেতা হয়নি বার্সার, জেরে চাকরি হারালেন আগের কোচ আর্নেস্টো ভালভার্দে। কোচের দায়িত্বে এলেন কিকে সেঁতিয়েন। তারপর চোটে মাঠের বাইরে চলে গেলেন প্রতিপক্ষের গোলমুখে মেসির অন্যতম জুটি-সঙ্গী লুইস সুয়ারেজ। বার্সা এখন ভুগছে একজন নিখাদ স্ট্রাইকার সংকটে।
মাঠের বাইরেও সময়টা খারাপ গেছে বার্সেলোনা অধিনায়কের। ক্লাবের স্পোর্টস ডিরেক্টর এরিক আবিদালের সঙ্গে কথার দ্বন্দ্বে জড়িয়েছেন। সেই দ্বন্দ্ব মিটিয়ে দেয়া হয়েছে বলে দাবি করেছেন বার্সা সভাপতি। যার প্রভাব যে রয়ে গেছে মেসির খেলা দেখেই টের পাওয়া যাচ্ছে!
এখন পরিস্থিতি যাই হোক, দ্রুতই মেসির গোলে ফেরাটা জরুরী বার্সার জন্য। সামনে চ্যাম্পিয়ন্স লিগে নাপোলির বিপক্ষে ম্যাচ, চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী রিয়াল মাদ্রিদের মাঠে গিয়ে খেলতে হবে এল ক্ল্যাসিকোর দ্বিতীয় পর্ব। বিতর্কে ভরা শীতের ছোবল থেকে অধিনায়ককে যতদ্রুত সম্ভব রক্ষা করতে পারবে বার্সা ততই মঙ্গল তাদের!