কক্সবাজার থেকে: মাঠের অধিকাংশ জায়গায় নেই ঘাস। একটু বৃষ্টি হলেই কাঁদায় মাখামাখি অবস্থা। থেকে যায় ইনজুরির ঝুঁকি। মাঠ ঘেঁষেই গ্যালারি। দর্শকদের বসার জন্য নেই চেয়ার। পার্শ্বরেখা থেকে গ্যালারির দর্শকের দূরত্ব ৫ গজেরও কম। তাতে থেকে যাচ্ছে খেলোয়াড়দের নিরাপত্তা শঙ্কাও!
কক্সবাজারের বীরশ্রেষ্ঠ রুহুল আমিন স্টেডিয়ামের চালচিত্র এমনই। সেই স্টেডিয়ামেই আয়োজন করা হয়েছে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক গোল্ডকাপ ফুটবলের দুটি সেমিফাইনাল।
স্টেডিয়ামটির প্রেসবক্সে নেই শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা। বাংলাদেশ বেতারের ধারাভাষ্যকারদের জন্য নেই আলাদা কক্ষ। পর্দা টানিয়ে তাদের আড়াল করা হলেও রেডিওতে কান না পেতেই শোনা হয়ে গেল মঙ্গলবারের প্রথম সেমিফাইনাল ম্যাচের ধারাভাষ্য।
এসব ঘাটতি ও সীমাবদ্ধতা ছাপিয়ে অবশ্য গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠছে মাঠ ও মাঠের বাইরে খেলোয়াড়দের নিরাপত্তার বিষয়টিই।
মঙ্গলবার তাজিকিস্তান ও ফিলিপিন্স ম্যাচে একটু বৃষ্টিতেই পানি জমে যায় মাঠে। খেলাও বন্ধ থাকে বেশ কিছুক্ষণ। খেলা গড়ালে চোটে পড়েন দুই দলেরই একজন করে ফুটবলার।
বুধবার টুর্নামেন্টের দ্বিতীয় সেমিফাইনাল নিয়েও থাকছে দুশ্চিন্তা। ওই ম্যাচে স্বাগতিক বাংলাদেশ খেলবে প্যালেস্টাইনের বিপক্ষে। সাবধানে খেলে মাঠের ঝুঁকি হয়তো এড়াতে পারবেন ফুটবলাররা, কিন্তু নিরাপত্তাজনিত ঝুঁকিতে করণীয় তাদের হাতে নেই!
জেলা স্টেডিয়ামে আন্তর্জাতিক ফুটবল ম্যাচ আয়োজন বাংলাদেশে নতুন নয়। সিলেটে জেলা স্টেডিয়ামেই হয়েছে এই আসরের গ্রুপপর্বের ম্যাচগুলো। বাংলাদেশের ম্যাচে তিল ধারণের জায়গা ছিল না। বুধবার জামাল ভুঁইয়ার দলের খেলা দেখতে দর্শকস্রোত বইবে কক্সবাজারেও। চার লোকালবয় জাতীয় দলে থাকায় ম্যাচ নিয়ে স্থানীয়দের আগ্রহ আরও বেশি। এরইমধ্যে ম্যাচের প্রায় সব টিকিটই বিক্রি হয়ে গেছে।
মাঠের দুই কোনের দেয়াল খুব উঁচু না হওয়ায় বিনা টিকিটের দর্শকরা মাঠে ঢোকার প্রাণপণ চেষ্টাটা যে করবেন না সেটির নিশ্চয়তা কই। সিনিয়র সাংবাদিক কাজী শহীদ এসব চিত্র দেখে বললেন, ‘আমাদের নিজেদের কথা ভাবছি না। দুটি ব্যাপার নিয়ে আমি চিন্তিত। সেটা হল মাঠের কন্ডিশন ও নিরাপত্তা। এমন মাঠ আন্তর্জাতিক ম্যাচ হওয়ার উপযোগী কোনোভাবেই নয়।’
স্টেডিয়াম আবার এতই ছোট যে, শট গোলবারের উপর দিয়ে গেলে বল চলে যায় মাঠের বাইরে। এই স্টেডিয়াম দেশের সবচেয়ে ছোট স্টেডিয়ামের তকমা পেয়ে গেলেও অবাক হওয়ার কিছু থাকবে না! এমন মাঠে কেনো এত বড় আয়োজন, সেটিই জাগিয়েছে বিস্ময়!