পাটকল শ্রমিক জাহালমের কারাবাসের ঘটনায় শেষ পর্যন্ত নিজেদের ভুল স্বীকার করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। দুদকের অভ্যন্তরীণ তদন্ত প্রতিবেদনে জাহালমকে আবু সালেকরূপে চিহ্নিত করার বিষয়ে নিজেদের কর্মকর্তাদের ভুলের বিষয়টি উঠে এসেছে।
চ্যানেল আই অনলাইনের প্রতিবেদনে জানা যায়, বৃহস্পতিবার হাইকোর্টে দুদকের করা তদন্ত প্রতিবেদনটি দাখিল করা হয়েছে।
ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘সার্বিক বিবেচনায় প্রতীয়মান হয়েছে যে, জাহালমকে আবু সালেকরূপে চিহ্নিত করার যে ভুলটি হয়েছে, তা দুদকের তদন্তকারী কর্মকর্তাদের কারণেই ঘটেছে।’
প্রথমে দায় নিতে না চাইলেও শেষ পর্যন্ত ভুল স্বীকার করায় দুদককে সাধুবাদ। এতে প্রতিষ্ঠান হিসেবে দুদকের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ হওয়ার বদলে উজ্জল হবে বলেই আমরা মনে করি।
তবে এটা সত্য যে, কর্মকর্তাদের ভুলের কারণে একজন নিরাপরাধ ব্যক্তিকে কারাগারে তিন বছর কাটাতে হয়েছে। এতে যে ক্ষতি হয়েছে তা যদিও কখনোই পূরণ হওয়ার নয়, তবুও এক্ষেত্রে জাহালমকে যথাযথ ক্ষতিপূরণ দেয়ার ব্যবস্থা করতে হবে।
একইসঙ্গে যে কর্মকর্তারা নিরাপরাধ জাহালমের কারাবাসের জন্য দায়ী তাদেরকে শাস্তির আওতায় আনতে হবে। কারণ, আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা এবং দুর্নীতি দমন করতে গিয়ে এ ধরনের ভুলকে কোনোভাবেই ছোট করে দেখা যাবে না।
আমরা মনে করি, এই ভুল শুধু একজন নিরাপরাধ ব্যক্তির জীবন থেকে তিনটি বছর কেড়ে নেয়নি, সাথে সাথে প্রকৃত অপরাধীকে পালিয়ে থাকতে সুযোগ করে দিয়েছে। সুতরাং এ ঘটনাকে নিছক ভুল বলে চালিয়ে দেয়ার কোনো অবকাশ নেই। এছাড়া এ ঘটনায় দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি না হলে ভবিষ্যতেও অনেক জাহালমের জীবন নষ্ট হবে বলে আমাদের শঙ্কা। এতে প্রতিষ্ঠান হিসেবেও দুদকের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ হবে যা কখনোই আমাদের কাম্য নয়।
তাই প্রকৃত সুশাসনের রাস্তা প্রশস্ত করতে এ ঘটনাকে অপরাধ হিসেবে গণ্য করে অপরাধীদের আইনের আওতায় আনতে সংশ্লিষ্টদের প্রতি আমরা আহ্বান জানাচ্ছি।