চ্যানেল আই অনলাইন
হৃদয়ে বাংলাদেশ প্রবাসেও বাংলাদেশ

এমন অসচেতনতা হতে পারে বড় ক্ষতির কারণ

করোনাভাইরাসের দাপট কমে গেলেও মানুষের অসচেতনতায় যে কোনো সময় তা নতুন করে আবার ফিরে আসতে পারে বলে সতর্ক করেছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। এর কারণ, বিভিন্ন পর্যায়ে ভাইরাসটি এখনো মিউটেশন হচ্ছে। তাই নতুন কোনো ভ্যারিয়েন্ট আসার শঙ্কাটা থেকেই যাচ্ছে। বিশেষ করে ওমিক্রনের উপ-ধরন বিএ.২ বা অন্য কোনো নামে আসার সম্ভাবনা আছে।

এমন পরিস্থিতিতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর সবাইকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার আহ্বান জানিয়ে বলছে, এখনই মাস্ক খুলে ফেলার মতো পরিস্থিতি তৈরি হয়নি। এটা ঠিক, দেশে সার্বিকভাবে ওমিক্রনের প্রভাব কমে গেছে। কিন্তু এতেই আবার নতুন ঝুঁকি তৈরি হয়েছে। কারণ অনেকেই স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলছে না। এমনকি কেউ কেউ এটাকে মাস্ক খুলে ফেলার পেছনে যুক্তি হিসেবেও দাঁড় করাচ্ছেন। অথচ গতকালকেও দেশে ১৩ জনের মৃত্যু হয়েছে এই ভাইরাসে। আজকেও তার বলি ৮ জন।

তার মানে, অনেকেই করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়াই করতে পারছেন না। অন্যান্য শারীরিক জটিলতায় তারা করোনাকে জয় করতে পারছেন না। বিশেষ করে যাদের ডায়াবেটিস, হাইপার টেনশন, ক্যানসারের মতো বড় ধরনের রোগ আছে, তারা এখনো বড় ঝুঁকিতে আছে।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তর যেদিন এমন আশঙ্কার কথা বলছে, সেদিনই সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান (আইইডিসিআর) অন্তর্বর্তীকালীন এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, দেশে এখন যারাই করোনায় আক্রান্ত হচ্ছেন, তারা সবাই অমিক্রন ধরনে সংক্রমিত। ডেল্টা বা অন্য ধরনগুলোর উপস্থিতি এখন আর নেই। গত মাসের ১ থেকে ২২ তারিখ পর্যন্ত সংগ্রহ করা নমুনার জিনোম সিকোয়েন্সিং (জিন নকশা উন্মোচন) করে এ প্রতিবেদন তৈরি করেছে আইইডিসিআর।

অথচ এর আগের মাসে করোনা আক্রান্ত ব্যক্তিদের মধ্যে ৮০ শতাংশ মানুষের শরীরে অমিক্রন ধরন শনাক্ত হওয়ার কথা জানিয়েছিল প্রতিষ্ঠানটি। বাকি ২০ শতাংশের শরীরে ছিল ডেল্টার ধরন। আমরা দেখেছিলাম, মাত্র দুই মাসের মধ্যে অতি দ্রুততার সঙ্গে অমিক্রন ছড়িয়ে পড়েছিল সারাদেশে। এখন সেটা অনেকটা কমে গেলেও স্বাস্থ্যবিধি নিয়ে হেয়ালি করা যাবে না।

অনেকে হয়তো ভাবছেন, টিকার সবগুলো ডোজ তো নেয়া হয়েই গেছে; এখন আর ভয় কিসের? কিন্তু সমস্যা তো সেখানে না। যিনি ডায়াবেটিস, হাইপার টেনশন, ক্যানসারের মতো রোগে আক্রান্ত তাদের কি হবে? কিছু মানুষের এমন হেয়ালিতে এসব মানুষগুলোর জীবন ঝুঁকিতে পড়বেই।

আমরা মনে করি, সরকার সব কিছু স্বাভাবিক করে দিলেও স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার ওপর জোর দিয়েছে এই কারণেই। তাই মাস্ক পরতেই হবে, স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতেই হবে। তা না হলে বড় ধরনের বিপদ আসতে পারে। যা থেকে আমরা কেউই রক্ষা পাবো না।