প্রতিপক্ষ যখন ভিয়ারিয়াল, তখন পা হড়কানোর ভয় কিছুটা ছিলই। তবে মেসি-নেইমার-সুয়ারেজ যেদিন একসঙ্গে জ্বলে ওঠেন, সেদিন কোন প্রতিপক্ষই যে আর কঠিন থাকে না সেটা আরেকবার দেখাল বার্সেলোনা। শনিবার রাতে এমএসএন ত্রয়ীর সাফল্যে শিরোপার লড়াইয়ে ভালোভাবেই টিকে থাকল বার্সা।
ন্যু ক্যাম্পে জোড়া গোল করেছেন লিওনেল মেসি। একটি করে গোল নেইমার ও লুইস সুয়ারেজের। তাতে ইয়োলো সাবমেরিনদের ৪-১ গোলে হারিয়েছে লা লিগার বর্তমান চ্যাম্পিয়নরা।
ম্যাচের ২১ মিনিটে বার্সার হয়ে গোলের খাতা খুলেছেন নেইমার। গোলটিকে এমএসএন ত্রয়ীর দারুণ বোঝাপড়ার ফসল বলা যায়। প্রথমে ডান দিক থেকে সুয়ারেজের আড়াআড়ি ক্রসে বল পান মেসি। আর্জেন্টিনা অধিনায়কের মাপা পাস খুঁজে পায় ব্রাজিলিয়ান ওয়ান্ডারবয়কে। তা থেকে স্বাগতিক দর্শকদের আনন্দে ভাসান নেইমার।
রাকিটিচের বাড়ানো বলে ২৯ মিনিটের সময় মেসি কোনাকুনি শট নিলে সেটি ঠিকানা খুঁজে পায়নি। তবে এগিয়ে যেয়ে আক্রমণাত্নকই খেলতে থাকে স্বাগতিকরা। অতি আক্রমণাত্নক হতে গিয়েই রক্ষণ ফাঁকা করে ভিয়ারিয়ালের অর্ধে উঠে গিয়েছিলেন বার্সার বেশিরভাগ ডিফেন্ডার।
সুযোগে দারুণ এক কাউন্টার অ্যাটাকে ন্যু ক্যাম্পের দর্শকদের স্তম্ভিত করে দেয় অতিথিরা। ৩২ মিনিটে সমতা ফেরানো গোলটি সেদ্রিক বাকাম্বুর। প্রায় মাঝ মাঠ থেকে একাই বল টেনে নিয়ে স্বাগতিক গোলরক্ষক টের স্টেগেনকে বোকা বানিয়ে জাল খুঁজে নেন এই কঙ্গোলিজ ফরোয়ার্ড।
গোল খেয়েই হুঁশ ফেরে স্বাগতিকদের। সাবধানী হয়ে খেলার পাশাপাশি গোলের সুযোগও খুঁজে গেছেন মেসি-নেইমাররা। ৩৯ মিনিটে মেসির ক্রসে বল পেয়ে খুব কাছ থেকেও লক্ষ্যে শট নিতে পারেননি জেরার্ড পিকে। পরের মিনিটে রবের্তো সলদাদোর মাথা ছুঁয়ে আসা বল পোস্টের বাইরে দিয়ে গেলে সুযোগ হারায় ভিয়ারিয়ালও। তার পরের মিনিটে সুয়ারেজের বাড়ানো বল পোস্টের বাইরে পাঠিয়ে আরেকটি সুযোগ নষ্টে নাম লেখান নেইমার।
বিরতিতে যাওয়ার এক মিনিট আগে স্বাগতিকদের স্বস্তির আনন্দে ভাসিয়েছেন মেসি। সার্জিও বুসকেটসের নিরীহ এক পাস থেকে দুই প্রতিপক্ষ খেলোয়াড়কে কাটিয়ে দারুণ ফিনিশিং গোল দিয়েছেন ফুটবল জাদুকর। এই গোলে চলতি মৌসুমে মেসি-সুয়ারেজ-নেইমার ত্রয়ীর ১০০তম গোলও পূর্ণ হয়ে যায়।
ম্যাচের ৬৯ মিনিটে স্কোরশিটে নাম লেখান এমএসএন ত্রয়ীর বাকিজন। পুরো ম্যাচে দারুণ খেলা সার্জিও রবের্তোর পাস থেকে বল পেয়ে দুই প্রতিপক্ষ ডিফেন্ডারকে বোকা বানিয়ে দলের তৃতীয় গোলটি করেন উরুগুইয়ান স্ট্রাইকার। লিগে চলতি মৌসুমে এটি তার ২৭তম গোল।
পরে ৭৬ মিনিটে নেইমার গোলরক্ষককে একা পেয়েও ফাঁকি দিতে পারেননি। এক মিনিট পর টের স্টেগেন গোল ছেড়ে অনেকটা বাইরে বেরিয়ে এলেও পিকের প্রচেষ্টায় অতিথিদের একটি আক্রমণ আটকে যায়।
ম্যাচে ৮২ মিনিটে ইয়েলো সাবমেরিনদের কফিনে শেষ পেরেকটি ঠুকে দেন মেসি। অতিথি ডিফেন্ডার ভিনসেন্ট কস্তার হাতে বল লাগলে পেনাল্টির বাঁশি বাজিয়ে দেন রেফারি। তা থেকে ম্যাচে নিজের জোড়া গোল পূর্ণ করেন আর্জেন্টাইন অধিনায়ক। চলতি লা লিগায় সর্বোচ্চ গোলে নাম লিখিয়ে চলা পিচিচির দাবিদার মেসির এটি ৩৫তম গোল।
ভিয়ারিয়ালের বিপক্ষে এই জয়ে পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষেই রইল বার্সা। ৩৬ ম্যাচে ৮৪ পয়েন্ট এখন বর্তমান চ্যাম্পিয়নদের। চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী রিয়াল মাদ্রিদের পয়েন্ট ৮১। বার্সা থেকে দুই কম ম্যাচ কম খেলেছে লস ব্লাঙ্কোসরা।