এশিয়ান হাইওয়ে ও ট্রান্স এশিয়ান রেলওয়ে নেটওয়ার্কের হাত ধরে এশিয়া প্যাসিফিক ইনফরমেশন সুপার হাইওয়ে (এপিআইএস) বাস্তবায়িত হলে মাথাপিছু ইন্টারনেট ব্যান্ডউইথ ব্যবহার বাড়বে বলে আশা করছে বাংলাদেশ।
এপিআইএস ওয়ার্কিং গ্রুপের সভাপতি ও আইসিটি অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বনমালী ভৌমিক এই আশা প্রকাশ করেন।
বুধবার ঢাকায় শুরু হওয়া জাতিসংঘের ইকোনমিক এন্ড সোস্যাল কমিশন ফর এশিয়া অ্যান্ড দ্য প্যাসিফিক (এসকাপ) এর এশিয়া প্যাসিফিক ইনফরমেশন সুপার হাইওয়ে (এপিআইএস) এর স্টিয়ারিং কমিটির অধিবেশনে স্বাগত বক্তব্যে তিনি এই আশার কথা শোনান। বৃহস্পতিবার এই অধিবেশন শেষ হবে।
আইসিটি অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বলেন, ‘এপিআইএস এর মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়ন হলে তা মাথাপিছু নিম্ন ব্যান্ডউইডথ ব্যবহারকারী স্বল্পোন্নত দেশের জন্য অপার সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচন করবে। এটি বাস্তবায়িত হলে বাংলাদেশে মাথাপিছু ব্যান্ডউইথ ব্যবহারের হার বৃদ্ধি পাবে এবং তা জিডিপি প্রবৃদ্ধিতে সহায়তা করবে।’
শুধু বাংলাদেশ নয় এই অঞ্চলের সব দেশ এপিআইএস এর মাধ্যমে ইন্টারনেট দুনিয়ায় আরও গতি পাবে এই প্রত্যাশা করেন অধিবেশনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিত।
অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘এশিয়া প্যাসিফিক ইনফরমেশন সুপার হাইওয়ে (এপিআইএস) এর মাধ্যমে শুধু বাংলাদেশই নয়, এ অঞ্চলের অন্যান্য দেশগুলোও উপকৃত হবে।’
এপিআইএস এর উদ্যোগ গ্রহণে অংশ হতে পেরে নিজের অনুভূতির কথা জানান অনুষ্ঠানের সভাপতি তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক।
সভাপতির বক্তব্যে তিনি বলেন, আজ আমি সত্যিই আনন্দিত। আমি সৌভাগ্যবানদের একজনও বটে। ভাবতেই ভালো লাগছে যে, আমি এশিয়ান হাইওয়ে ও ট্রান্স এশিয়ান রেলওয়ে নেটওয়ার্কের সাথে আইসিটি ব্যাকবোনকে সম্পৃক্ত করার প্রস্তাব করেছিলাম। এসকাপ কমিটি অন আইসিটি আমার সে প্রস্তাব গ্রহণ করার মাধ্যমে এশিয়া প্যাসিফিক ইনফরমেশন সুপারহাইওয়ে(এপিআইএস) উদ্যোগ গ্রহণ করে এবং বাংলাদেশকে এই এপিআইএস এর ওয়ার্কিং গ্রুপের সভাপতি নির্বাচিত করে।
প্রতিমন্ত্রী পলক এসময় আরও বলেন, এশিয়া-প্যাসিফিক অঞ্চলে তথ্যপ্রযুক্তিভিত্তিক যোগাযোগ ব্যবস্থা নির্বিঘ্ন করতে জাতিসংঘের এসকাপভূক্ত সকল দেশ মিলে এপিআইএস এর ওয়ার্কিং গ্রুপ একটি মহাপরিকল্পনা চূড়ান্ত করেছে। এপিআইএস এর এই মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নে এপিআইএস এর স্টিয়ারিং কমিটি আগামী দু’দিনে জাতীয়, আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক সহযোগিতার ক্ষেত্র, সমন্বয় এবং বাস্তবায়নের কার্যকর উপায় বের করতে সক্ষম হবে বলে আমি আশাবাদী। আমরা বাংলাদেশের সব নাগরিককে ইন্টারনেট সংযোগের আওতায় নিয়ে আসতে কাজ করে চলেছি। ২০২১ সালের মধ্যে আমরা সবার জন্য ইন্টারনেট সুবিধা নিশ্চিত করতে সক্ষম হবো।’
অনুষ্ঠানে ট্রান্সপোর্ট ডিভিশনের সচিব মো: নজরুল ইসলাম, রেলওয়ে মন্ত্রণালয়ের ভারপ্রাপ্ত সচিব মো: মোফাজ্জল হোসাইন, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের সচিব (দায়িত্বপ্রাপ্ত) সুশান্ত কুমার সাহা, অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের সচিব (দায়িত্বপ্রাপ্ত) মনোয়ার আহমেদ ও লার্ন এশিয়া বাংলাদেশের সিনিয়র পলিসি ফেলো আবু সাঈদ খান বক্তব্য রাখেন।
এপিআইএস এর মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নের প্রথম পদক্ষেপ হিসেবে স্টিয়ারিং কমিটির এই অধিবেশনে জাতিসংঘের এসকাপভূক্ত ৫৬ দেশের প্রতিনিধিসহ দেশি-বিদেশি প্রতিনিধিরা অংশ নিচ্ছে। এই অধিবেশনে এপিআইএস এর মহাপরিকল্পনায় অন্তর্ভূক্ত কানেক্টিভিটি, ইন্টারনেট ট্রাফিক ম্যানেজমেন্ট, ই-রেসিলিয়েন্স এবং ব্রডব্যান্ড ফর অল, এই চারটি স্তম্ভ এবং মধ্যবর্তী মেয়াদে (২০১৬-১৮) বাস্তবায়নের লক্ষ্যমাত্রা পূরণের অগ্রগতি নিয়ে আলোচনা করা হবে।
গত ২৯-৩০ আগস্ট ২০১৬ চীনের গুয়াংজুতে এপিআইএস ওয়ার্কিং গ্রুপের এর দ্বিতীয় সভায় বাংলাদেশকে এক বছরের জন্য ওয়ার্কিং গ্রুপের সভাপতি হিসেবে নির্বাচিত করে। তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের আওতাধীন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বনমালী ভৌমিক এপিআইএস ওয়ার্কিং গ্রুপের সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছে।