ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগের তলানির একটা দলের টিভি স্বত্ব থেকে যা আয় তার ধারেকাছেও নেই স্প্যানিশ লিগের জায়ান্ট দল বার্সেলোনা-রিয়াল। অর্থের ঝনঝনানি আর দল-বদলে কাড়িকাড়ি ইউরো ঢাললেও কামাইয়ের দিকে প্রিমিয়ার লিগ থেকে অনেকটা পিছিয়ে ইউরোপের বাকি সব লিগ। স্বাভাবিক একটা কৌতূহল তাই থেকেই যায়, শিরোপা জিতলে কিংবা লিগে অংশ নিলে কত আয় হয় প্রিমিয়ার লিগের দলগুলোর!
গত মৌসুমে ক্লাবগুলোর আয় দেখে আন্দাজ করা যেতে পারে ২০১৯-২০ মৌসুমে কেমন কামাই হবে ক্লাবগুলোর। যেমন বর্তমান চ্যাম্পিয়ন ম্যানসিটি। গত মৌসুম শেষে লিগ থেকে প্রাইজমানি হিসেবে তাদের মোট আয় ছিল ১৫১ মিলিয়ন পাউন্ড। মজার বিষয় হচ্ছে, রানার্সআপ হয়েও সিটিজেনদের থেকে প্রাইজমানি হিসেবে ১ মিলিয়ন পাউন্ড বেশিই পেয়েছে লিভারপুল।
কীভাবে? লিগের প্রদত্ত লভ্যাংশকে- ইকুয়েল ফিস, ফ্যাসিলিটি ফিস, মেরিট পেমেন্ট, সেন্ট্রাল-কমার্শিয়াল রেভিনিউ ও ইন্টারন্যাশনাল ব্রডকাস্টিং রেভিনিউ এই পাঁচ ভাগে ভাগ করে দলগুলোর মাঝে বণ্টন করে দেয় এফএ। এর মাঝে মোট লভ্যাংশের অর্ধেক অর্থাৎ, ৫০ ভাগ সমানভাবে বিলিয়ে দেয়া হয়েছে প্রতিটি ক্লাবকে। সে হিসেবে গত মৌসুম শেষে সমান ৩৪ মিলিয়ন পাউন্ড পেয়েছে চ্যাম্পিয়ন ম্যানসিটিসহ প্রতিটি ক্লাব।
দলগুলোর আয়ের তারতম্য তৈরি হয় ফ্যাসিলিটি ফিস ও মেরিট ফিসের কারণে। পুরো যুক্তরাজ্য জুড়ে ক্লাবগুলোর খেলা কী পরিমাণ দর্শক টানতে পেরেছে তার ভিত্তিতেই ভাগ হয় ফ্যাসিলিটি ফিস। এই জায়গাতেই লিভারপুল আর ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের কাছে মার খেয়েছে ম্যানসিটি। গত আসরে লিভারপুলের ২৯টি টিভি ম্যাচে টিআরপি (টেলিভিশন রিভিউ পয়েন্ট) ছিল উঁচুতে। যেখানে ম্যানসিটির টিআরপি ছিল ২৬টি ম্যাচে। সেখান থেকে অলরেডদের আয় ছিল ৩৩ মিলিয়ন পাউন্ড, ম্যানইউর ছিল ৩১ ও ম্যানসিটির ছিল ৩০ মিলিয়ন পাউন্ড।
মেরিট পয়েন্ট ভাগ হয় দলগুলোর পয়েন্ট টেবিল বিবেচনায়। শীর্ষে থাকায় ম্যানসিটি কামিয়েছে ৩৮ মিলিয়ন পাউন্ড, রানার্সআপ লিভারপুলের ছিল ৩৬ মিলিয়ন। তিনে থাকা চেলসি পেয়েছে ৩৫ মিলিয়ন পাউন্ড।
সেন্ট্রাল কমার্শিয়াল রেভিনিউ ও ইন্টারন্যাশনাল ব্রডকাস্টিং রেভিনিউয়ের ভাগ সমানভাবেই পায় সব দল। গতবার ইন্টারন্যাশনাল ব্রডকাস্টিং থেকে ৪৩ মিলিয়ন পাউন্ড পেয়েছে দলগুলো। কমার্শিয়াল রেভিনিউতে পরিমাণটা ছিল ৫ মিলিয়ন করে।
জৌলুস ও দর্শক বিবেচনায় প্রতিবছরই আয় বাড়ছে প্রিমিয়ার লিগে। আগামী শনিবার থেকে শুরু হতে যাওয়া ২০১৯-২০ মৌসুম শেষে আয় যে বাড়বে তাতে কোনো সন্দেহ নেই। ধারণা করা হচ্ছে এবারে আয় বেড়ে কমপক্ষে ১৫০ মিলিয়ন পাউন্ড হতে পারে একেকটি দলের। শিরোপাজয়ী দলের জন্য অর্থের পরিমাণটা বেড়ে দাঁড়াতে পারে ১৮০ মিলিয়ন পাউন্ডে!