সমকামীদের নাইট ক্লাব ‘পালস’-এ বন্দুকধারীর হামলাকে গত ৬৫ বছরের মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ বন্দুক হামলা বলছে মার্কিন গণমাধ্যম সিএনএন। এই হামলায় এখন পর্যন্ত নিহত হয়েছে ৫০ জন। প্রভাবশালী গণমাধ্যমটির তথ্যমতে ‘নাইন-ইলেভেন’-এর সন্ত্রাসী হামলার পর যুক্তরাষ্ট্রে এটাই কোনো হামলায় সর্বোচ্চ প্রাণহানীর ঘটনা।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে বন্দুকধারীর হামলায় নিহতের ঘটনা নতুন নয়। আগ্নেয়াস্ত্রের সহজলভ্যতায় সেই ১৯৪৯ সাল থেকেই নিয়মিত গোলাগুলির ঘটনা ঘটে আসছে।
১২ জুন, রোববারের ঘটনার আগে সর্বোচ্চ প্রাণহানীর ঘটনাটি ঘটেছিলো ২০০৭ সালের ১৬ এপ্রিল। ওই দিন ভার্জিনিয়ায় ২৩ বছর বয়সী এক শিক্ষার্থীর গুলিতে নিহত হয় ৩২ জন।
এরপরই আসে ‘স্যান্ডিহুক’ হত্যাকাণ্ডের নাম। ২০১২ সালের ১৪ ডিসেম্বর কানেক্টিকাট অঙ্গরাজ্যের স্যান্ডিহুক স্কুলে ঢুকে এলোপাতাড়ি গুলি চালায় অ্যাডাম লাঞ্জা নামের এক বন্দুকধারী। এতে ৫-৬ বছর বয়সী ২০ জন শিক্ষার্থী ছাড়াও মোট ২৭ জন নিহত হয়।
এলোপাতাড়ি গুলি চালিয়ে মানুষ হত্যার পরিসংখ্যান তুলে ধরা সংস্থা ‘ম্যাস শুটিং ট্রাকার’ এর তথ্যানুযায়ী ২০১২ সালের স্যান্ডি হুক হত্যাকাণ্ডের পর থেকে যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানেই মোট ১৪২টি গুলিবর্ষণের ঘটনা ঘটেছে।
আর সব মিলিয়ে ২০১৫ সালেই নির্বিচারে গুলি চালানোর ঘটনা সবচেয়ে বেশি ঘটে। সে বছর ২৭৪ দিনে যুক্তরাষ্ট্র জুড়ে ২৯৪ টি এলোপাতাড়ি গুলি বর্ষণের ঘটনা ঘটে বলে জানায় ওয়াশিংটন পোস্ট।এসব হামলার মধ্যে ৪৫ টি সংঘটিত হয় বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে।
এসব ঘটনার জন্য আগ্নেয়াস্ত্রের সহজলভ্যতাকে দায়ী করা হলেও কার্যকর কোনো ব্যবস্থা না নেওয়ায় বারবার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো রক্তাক্ত হচ্ছে। হত্যাকাণ্ডের পর মার্কিন গণমাধ্যমের কাছে হোয়াইট হাউস সেক্রেটারি জশ আর্নেস্ট জানান, অস্ত্র নিয়ন্ত্রণে ওবামা প্রশাসন সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিচ্ছে। তবে বিষয়টিকে আইনি ভিত্তি দিতে সাধারণ মার্কিনীদের সমর্থন প্রয়োজন হলেও কাঙ্ক্ষিত সাড়া মেলেনি।
হত্যাকাণ্ডগুলোর পিছনে জন্য মানসিক অসুস্থতা, অস্ত্রের সহজলভ্যতা এবং ব্যক্তিগত ক্ষোভকে দায়ী করে মার্কিন গণমাধ্যম।
তবে আদর্শিক কারণেও গুলি চালিয়ে মানুষ হত্যার ঘটনা ঘটেছে একাধিকবার। ২০১৫ সালের ডিসেম্বরে ক্যালিফোর্নিয়ার স্যান বার্নার্ডিনোতে বন্দুকধারী পাকিস্তানি দম্পতি রিজওয়ান মালিক ও তাশফিন মালিক গুলি চালিয়ে ১৪ জনকে হত্যা করে। ওই দম্পতির সঙ্গে জঙ্গি গোষ্ঠী আইএস’র সংশ্লিষ্টতা পায় মার্কিন তদন্ত সংস্থা এফবিআই।