প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বক্তব্যের সমালোচনা করে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, দেশে এখন মধ্যযুগীয় অন্ধকার যুগ চলছে। সবকিছু ধ্বংস করে দেয়া হয়েছে। আওয়ামী লীগ এর জন্য দায়ী।
বিএনপি ক্ষমতায় আসলে সব আলোকিত হয় মন্তব্য করে তিনি বলেন, বন্ধ সবকিছু বিএনপি খুলে দেয়। বিএনপি গণতন্ত্র পুনরায় চালু করেছে। দেশকে অন্ধকার থেকে উদ্ধার করেছিল। এখন আবার তা শুরু হয়েছে। এখান থেকে বেরিয়ে আসতে হলে একটি জাতীয় ঐক্য দরকার।
বৃহস্পতিবার দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবে বিশ্ব মুক্ত গণমাধ্যম দিবস-২০১৮ উপলক্ষে আলোচনা সভায় ফখরুল এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, গণতন্ত্রের রক্ষাকবচ হল মুক্ত গণমাধ্যম। শরীরে যেমন অক্সিজেন না থাকলে শরীর বাঁচে না, তেমনিভাবে মুক্ত গণমাধ্যম না থাকলে গণতন্ত্র বাঁচে না। পাকিস্তান আমলেও লেখার জন্য, কথা বলার জন্য সংগ্রাম করতে হয়েছে সাংবাদিকদের।
‘যে বিষয়টি নিয়ে আমাদের মুক্তিযুদ্ধ, আমরা স্বাধীনতার সেই চিন্তা থেকে যুদ্ধ করেছি। সেই চেতনা, আশা আকাঙ্ক্ষার কি অবস্থা আজকে। সব শেষ হয়ে গেছে। এখানে কথা বললে জেলে যেতে হয়, কথা বললে গুম হতে হয়। দেশ ছেড়ে পালিয়ে যেতে হয়। প্রতিদিন নিহত হচ্ছে। হুমকি ধমকি দেয়া হচ্ছে সাংবাদিকদের।’
বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘আজকে জঘন্য রকমের প্রতারণা শুরু হয়েছে। মুখে তার (শেখ হাসিনা) গণতন্ত্রের কথা, মুখে মানবতার কথা। কর্মে ভয়ংকর রকমের স্বৈরাচারী, মানবতাহীন। কথায় মনে হয় যেন তাদের মতো ভালো মানুষ, গণতান্ত্রিক, মানবতাবান মানুষ আর নেই। অথচ কাজে এই দশ বছরের মধ্যে ভয়ংকর সমাজ তৈরি করেছে তারা। এমন সমাজ তৈরি করছে যেখানে সাংবাদিকদের মধ্যে বিভক্তি সৃষ্টি করে দিয়েছে। এই ডাবল স্টান্ডার্ডটি আমাদের শেষ করতে হবে।’
খুলনাও গাজীপুর সিটি নির্বাচন নিয়ে কথা বলেন তিনি। বলেন, ‘এ সময় নির্বাচনী প্রচারণায় খুলনার বাইরের কেউ গেলে নাকি গ্রেপ্তার করা হবে। নির্বাচনের কোন বিধিতে এটা আছে? মেরুদণ্ডহীন একটি কমিশন। গাজীপুরে আমরা প্রথম দিকেই বলেছি এসপি হারুনকে সরাতে হবে। সে আমাদের হুইপকে নির্যাতন করেছিল। আমরা চিঠি দিয়েছি। এখনো তাকে প্রত্যাহার করা হয়নি।’
ফখরুল বলেন, ‘এভাবে চলবে না। আপনারা বসেন, কথা বলেন। সংকট সমাধান করেন। এটা না করে যদি নির্বাচনে যান, তাহলে কি হবে? ২০১৪ সালের মতো নির্বাচন করবেন? কিন্তু এবার এ ধরনের নির্বাচন মানুষ মেনে নিবে না। কত গুম, খুন করবেন করেন। দেখি কতজনকে করতে পারেন!’
তিনি বলেন, ‘এখন আমাদের কঠিন লড়াই। এ লড়াই অনেক আগে থেকে শুরু হয়েছে। ২০০১ সালো জোট সরকারের সময় থেকে অশনি সংকেত আমরা পেয়েছিলাম। এই লড়াইয়ে জিততে হলে একটি জাতীয় ঐক্য তৈরি করতে হবে। তা না পারলে আমরা এই ফ্যাসিবাদ থেকে মুক্তি পাবো না। যদি ঐক্যবদ্ধ হয় তাহলে মুক্তি পাবো। সমগ্র গণতান্ত্রিক দল ঐক্যবদ্ধ হয়ে আন্দোলন করতে হবে।’
মির্জা ফখরুল আবারও দাবি করে বলেন, নির্বাচনকালীন সরকার দিতে হবে। সংসদ ভেঙে দিতে হবে। সেনাবাহিনী মোতায়েন করতে হবে। একটি লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরি করতে হবে।
এ সময় খালেদা জিয়ার চিকিৎসার সুপারিশকৃত চিঠি এখনো প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে পড়ে আছে বলে অভিযোগ করেন ফখরুল।
বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন(বিএফইউজে) এবং ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন (ডিইউজে) এর আয়োজনে সভায় আরও বক্তব্য রাখেন দৈনিক আমার দেশ সম্পাদক মাহমুদুর রহমান, বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শওকত মাহমুদ। সভাপতিত্ব করেন বিএফইউজের সভাপতি রুহুল আমিন গাজী।