করোনাভাইরাস কতোটা ভয়ংকর হতে পারে তা প্রথমদিকে টের পেয়েছিল ইটালি। লাখ লাখ মানুষ মারা গিয়েছেন সেখানে। করোনাভাইরাসের শুরুর দিকে দেশটি যেন মৃত্যুপুরীতে পরিণত হয়েছিল। এ কারণে ইটালি থেকে পালিয়েছিল অনেক মানুষ, বিশেষ করে প্রবাসীরা। সেই সূত্রেই বাংলাদেশে ফেরত আসা প্রবাসীদের নিয়ম মানতে না চাওয়ার প্রবণতা আমরা দেখেছি। এর কয়েকদিন পরই ২০২০’র ৮ মার্চ দেশে করোনার প্রথম সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছিল।
এরপর বিশ্ব দেখেছে ভয়ংকর এক মহামারি। যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ইটালি, কানাডা, ফ্রান্স, জার্মানিসহ বিশ্বের বাঘা বাঘা পরাশক্তিগুলো একের পর এক নাস্তানাবুদ হয়েছে ভাইরাসের তাণ্ডবে। সবাই যেন অসহায়। ফলাফল দুনিয়াব্যাপী দীর্ঘ লকডাউন। এই লকডাউনে ভেঙে পড়েছে শক্তিশালী অনেক দেশের অর্থনীতি। থমকে গিয়েছিল সবকিছু। তবে এরপরও কোনো উপায় ছিল না। জীবন বাঁচাতে বেশিরভাগ দেশকেই লকডাউনে থাকতে হয়েছে। বাংলাদেশও এর বাইরে ছিল না। কিন্তু এক্ষেত্রে বাংলাদেশ ব্যতিক্রম ছিল। অর্থনীতি থমকে দাঁড়ায়নি। সরকারের নেয়া নানা ধরনের প্যাকেজে ঘুরে দাঁড়িয়েছিল অর্থনীতি। খাদ্য সংকটও হয়নি। কৃষক থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষ উৎপাদনে জোর দিয়েছিল। এর ফলে করোনার অভিঘাত মোকাবেলা সহজতর হয়েছিল।
এমন প্রেক্ষাপটে কয়েকমাস পর লকডাউন শিথিল করা হলেও সেই অবস্থা দীর্ঘদিন স্থায়ী হলো না। এরপর এলো করোনার দ্বিতীয় ঢেউ। প্রতিবেশী দেশ ভারত নাকাল হলো ভাইরাসের আক্রমণে। দৈনিক লাখ লাখ মানুষ মারা যেতে শুরু করলো। অক্সিজেন সংকটে দেশটির অসহায় অবস্থা দেখতে হলো বিশ্বকে। হাসপাতালগুলোর অসহায়ত্ব আর সাধারণ মানুষের কান্নায় ভারতের আকাশ বাতাস ভারী হয়ে উঠতে শুরু করলো। দেশটির সংবাদমাধ্যমে দেখা গেল, হাজার হাজার মানুষের মরদেহ ভাসিয়ে দেয়ার খবর। একই সাথে দেখা গেল গণকবর দেয়ার খবরও। করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ে সবমিলিয়ে ভারতের পরিস্থিতি দিন দিন বিষাদময় হয়ে উঠলো। এখন প্রশ্ন উঠতে পারে, হঠাৎ করে ভারতের পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেল কেন? এ প্রশ্নের জবাব খুঁজতে গেলে দেখা যায় সেখানকার মানুষের নিয়ম না মানার প্রবণতা। করোনার এমন ভয়াবহ অবস্থার মধ্যেও স্বাস্থ্যবিধি উপেক্ষা করে দেশের বিভিন্ন রাজ্যে নির্বাচন। এছাড়া ধর্মীয় গোঁড়ামির বিষয়টিও সামনে এসেছে। কুম্ভমেলাসহ নানা ধরনের ধর্মীয় উৎসবে লাখ লাখ মানুষের অংশগ্রহণও ছিল সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ার অন্যতম প্রধান কারণ। চিকিৎসক এবং স্বাস্থ্যবিদরা বারবার সতর্ক করলেও বিজেপি এবং তার সমর্থকরা এসবে কান দেয়নি। এর ফলে যা হওয়ার তাই হয়েছে।
ভারতের এমন পরিস্থিতিতে বাংলাদেশকে কঠিন ও সময়োপযোগী সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে হয়েছে। করোনার ভারতীয় ভ্যারিয়েন্ট মোকাবেলায় ভারতের সাথে সীমান্ত বন্ধ করে দিয়েছে বাংলাদেশ। সীমান্তের এই কড়াকড়ি ইন্ডিয়ান ভ্যারিয়েন্ট মোকাবেলায় অনেকটাই কাজে দিয়েছে। সেই ধারাবাহিকতায় এখনও ভারতের সাথে বেশকিছু সীমান্তে বিধিনিষেধ বলবৎ আছে। এরপরও প্রতিবেশী দেশের সীমান্তবর্তী জেলাগুলোতে সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে আনা যায়নি। তবুও সীমান্তবর্তী জেলাগুলোতে বিশেষ লকডাউন দেয়া হয়েছে। এমনকি সংক্রমিত জেলাগুলোর স্থানীয় প্রশাসনকে এ বিষয়ে স্বাধীনতা দেয়া হয়েছে। যেকোনো পরিস্থিতি মোকাবেলায় লকডাউনসহ প্রয়োজনীয় কড়াকড়ির জন্য সব ধরনের সিদ্ধান্ত গ্রহণের স্বাধীনতা তাদেরকে দেয়া হয়েছে। এটাও ইতিবাচক। এতে সিদ্ধান্ত গ্রহণে জটিলতা কমেছে। এরই ধারাবাহিকতায় স্থানীয় বিশেষ বিধিনিষেধ দেয়া হয়েছে: রাজশাহী, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, দিনাজপুর, সাতক্ষীরা, মেহেরপুর, চুয়াডাঙ্গা এমনকি সীমান্তবর্তী জেলার বাইরে নোয়াখালীতেও।
ইটালি, যুক্তরাজ্য কিংবা ব্রাজিলের পর ভারতেও যেটা দেখা গেছে, তা হলো– হাসপাতালে অক্সিজেন ও শয্যা সংকট। করোনার ঢেউ আছড়ে পড়লে এটাই হয়। একসাথে লাখ লাখ মানুষের সংক্রমণ হলে এটাই স্বাভাবিক। কেননা বিশ্বের প্রায় সব দেশেই স্বাস্থ্যখাত উপেক্ষিত। এমনকি নেই পর্যাপ্ত বরাদ্দ। বাংলাদেশের মতো উন্নয়নশীল দেশগুলোর পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ। সেই শঙ্কা থেকেই শুরু থেকে চিকিৎসক এবং স্বাস্থ্যবিদরা বলে আসছেন পূর্ববর্তী দেশগুলোর দুর্যোগময় অবস্থা থেকে শিক্ষা গ্রহণ করে হাসপাতালের শয্যা সংখ্যা এবং অক্সিজেন সরবরাহ বাড়ানোর কথা। তবে এখন পর্যন্ত হাসপাতালগুলোতে কতোটা শয্যা বাড়ানো হয়েছে সেটা খোলাসা করেনি সংশ্লিষ্টরা।
করোনার সংক্রমণ নিয়ে স্বাস্থ্যবিদদের সেই আশঙ্কা সত্যি হতে শুরু করেছে। দেশের বেশ কয়েকটি জেলা থেকে প্রাপ্ত সংবাদে জানা যায়, সেসব জেলায় ইতোমধ্যেই শয্যা সংকট দেখা দিয়েছে। করোনার জন্য যত শয্যা রয়েছে তারচেয়েও বেশি রোগী ভর্তি রয়েছে। এখনও প্রতিনিয়ত রোগী আসছেন।
এরমধ্যে খুলনার কথাই ধরা যাক। সেখানে হাসপাতালে আবারও ধারণক্ষমতার বাইরে রোগী ভর্তি রয়েছে। ১০০ শয্যার ডেডিকেটেড করোনা হাসপাতালে প্রায় দেড়শ’ জন রোগী ভর্তি আছে। এর ফলে রোগীদের সেবা দিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীদের। এছাড়া সিলেটের শহীদ ডা. শামসুদ্দিন আহমদ হাসপাতালের চিত্রও একইরকম। সেখানেও ৯০ শয্যার মধ্যে প্রায় সবই ভর্তি। নতুন করে সেখানে করোনা রোগী ভর্তি করা যাচ্ছে না। এছাড়াও যন্ত্রপাতি নষ্ট থাকায় আইসিউ শয্যাও সেভাবে ব্যবহার করা যাচ্ছে না। শুধু খুলনা কিংবা সিলেট নয়, দেশের প্রায় সব জেলার হাসপাতালগুলোর চিত্রই এমন। অথচ আরেকটু সচেতন ও উদ্যোগী হলে পরিস্থিতি খুব সুন্দর হতে পারে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য বলছে, দেশে সরকারি হাসপাতাল রয়েছে ৬৫৪টি এবং এসব হাসপাতালে মোট শয্যার সংখ্যা ৫১,৩১৬টি। আর বেসরকারি হাসপাতাল রয়েছে ৫,০৫৫টি, যেখানে মোট শয্যার সংখ্যা ৯০,৫৮৭টি। অন্যদিকে পরিসংখ্যান ব্যুরোর তথ্য অনুযায়ী, দেশে অনুমিত জনসংখ্যা ১৬ কোটি ৪৬ লাখ। সেই হিসাবে প্রতি ১,১৫৯ জন ব্যক্তির জন্য হাসপাতালে একটি শয্যা রয়েছে। এছাড়া সরকারি-বেসরকারি মিলিয়ে মোট আইসিইউ শয্যা রয়েছে মাত্র ১,১৬৯টি। এরমধ্যে সরকারি হাসপাতালে রয়েছে ৪৩২টি (ঢাকায় ৩২২, ঢাকার বাইরে ১১০) আর বেসরকারি হাসপাতালে রয়েছে ৭৩৭টি (ঢাকা মহানগরীতে ৪৯৪, ঢাকা জেলায় ২৬৭, অন্যান্য জেলায় ২৪৩)। এই পরিসংখ্যান বিশ্লেষণ করলে আতঙ্কিত না হওয়ার কোনো উপায় নেই। এর কারণ হলো- করোনাভাইরাসে আক্রান্ত ব্যক্তিদের অসুস্থতা গুরুতর হয়ে উঠলে শ্বাসকষ্ট বা ফুসফুসের সমস্যা দেখা দিতে পারে। চীন, ভারত, ইটালিসহ যেসব দেশে বেশি রোগী মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে, সেখানে নিউমোনিয়া, ফুসফুসের জটিলতার কারণেই বেশিরভাগ রোগীর মৃত্যু হয়েছে। সেই হিসাবে বাংলাদেশের হাসপাতালে শয্যা, আইসিইউ এবং অক্সিজেনের সংকট তীব্র। এছাড়া ডাক্তারসহ প্রয়োজনীয় জনবলের অভাব তো আছেই। এরমধ্যেও সুখবর হলো করোনাকালে বেশকিছু চিকিৎসক এবং অন্যান্য জনবল নিয়োগ হয়েছে। ঠিক অন্যান্য ক্ষেত্রেও এমন সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা না থাকলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাবে বলেই শঙ্কা।
গত এপ্রিলে করোনায় সর্বোচ্চ মৃত্যু দেখেছিল বাংলাদেশ। এপ্রিল মাসের ১৯ তারিখ সর্বোচ্চ ১১২ জনের মৃত্যু হয়। সেসময় বেশ কয়েকদিন মৃত্যু ও সংক্রমণের হার ঊর্ধ্বমুখী ছিল। তখন টানা কয়েকদিন করোনায় মৃত্যু ও সংক্রমণ বাড়তে থাকায় উদ্বেগ জানিয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেছিলেন, ‘প্রতিদিনি গড়ে পাঁচ শ থেকে এক হাজার জন হাসপাতালে ভর্তি হলে সপ্তাহখানেকের মধ্যেই হাসপাতালে রোগীদের স্থান দেওয়া সম্ভব হবে না। রাতারাতি করোনা পরিস্থিতি উন্নয়ন সম্ভব না। সরকার যেসব নিয়ন্ত্রণ আরোপ করছে সেগুলো বাস্তবায়ন করতে হবে। সাধারণ মানুষকে মাস্ক পরানো, বাসে অর্ধেক যাত্রী ওঠানো বাস্তবায়ন করতে হবে।’ করোনার সাধারণ সংক্রমণেই যদি স্বাস্থ্যখাতে এমন ভয়াবহ বিপর্যয় নেমে আসে, তাহলে শয্যা সংকট আরও বাড়লে পরিস্থিতি কোন দিকে যাবে তা সহজেই অনুমেয়। এজন্য রাতারাতি নয় এখন থেকেই হাসপাতালগুলোর শয্যা ও অক্সিজেন সক্ষমতা বাড়ানোর দিকে নজর দিতে হবে। এক্ষেত্রে ভারতের কেরালা আমাদের জন্য মডেল হতে পারে। কেরালার বামপন্থী সরকার প্রমাণ করেছে সৎ মানসিকতা নিয়ে কার্যক্রম পরিচালনা করলে খুব সুন্দরভাবে করোনা মোকাবেলা করা সম্ভব। আমাদের সরকারেরও সেই সুন্দর মানসিকতা ও জনগণের প্রতি দায়বদ্ধতা রয়েছে বলে আমরা বিশ্বাস করতে চাই।
তবে এক্ষেত্রে স্বাস্থ্যমন্ত্রীর বক্তব্যের একটি বিষয় উল্লেখযোগ্য। তিনি বলেছেন: ‘জনসাধারণকে স্বাস্থ্যবিধি মানতে হবে। না হলে বিপর্যয়ে পড়বে দেশ। রাজধানীর কোভিড বিশেষায়িত হাসপাতালগুলোতে সরকারি-বেসরকারিভাবে আরও সাড়ে তিন হাজার বেড বাড়ানো হবে। স্বাস্থ্যবিধি না মানলে সাড়ে তিন হাজার বেড বাড়ানো হলেও এক সপ্তাহের মধ্যে সব বেড ভরে যাবে। বেড বাড়িয়ে করোনা নিয়ন্ত্রণ বা চাপ সামাল দেয়া সম্ভব না।’ তার এ কথা যুক্তিযুক্ত। করোনার শুরু থেকেই দেশে স্বাস্থ্যবিধি মানার ক্ষেত্রে অনেকের অনীহা লক্ষ্য করা গেছে। এখন যদিও সেই অবস্থা অনেকটাই কমেছে, তবুও অনেকের অনীহা লক্ষ্যণীয়। এক্ষেত্রে আরও কঠোর হতে হবে।
এক্ষেত্রে সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের (আইইডিসিআর) উপদেষ্টা ও সাবেক প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ডা. মোশতাক হোসেনের বক্তব্য আমলে নেয়া যেতে পারে। তিনি বলেছেন: ‘যেসব এলাকায় দ্রুত সংক্রমণ ছড়াবে সেখানে কোয়ারেন্টাইন ও আইসোলেশন নিশ্চিতসহ অধিক হারে নমুনা পরীক্ষা করাতে হবে। ওই এলাকাগুলোর সাথে যাতায়াত-চলাচল সীমিত করতে হবে। আমাদের সুনির্দিষ্ট জায়গা চিহ্নিত করে সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। সেখানে স্বাস্থ্যবিধি মানতে হবে। পাশাপাশি ভ্যাকসিন দিতে হবে। যদিও এখন ভ্যাকসিন সরবরাহ অনেকটা কম। তবুও ঝুঁকিপূর্ণ মানুষদের যতো আমরা ভ্যাকসিন দিতে পারবো মৃত্যুর হার ততো কমিয়ে আনা সম্ভব হবে।’
এছাড়া জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ও স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের রোগ নিয়ন্ত্রণ শাখার সাবেক পরিচালক ডা. বে-নজির আহমেদ প্রায় একই ধরনের কথা বলেছেন। তার মতে: ‘জেলা পর্যায়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার জন্য সংক্রমিত রোগীদের জিনোম সিকুয়েন্সিং করে দেখতে হবে দেশে ইন্ডিয়ার ভ্যারিয়েন্টের পরিস্থিতি কী। এছাড়াও ঢাকা থেকে করোনা বিশেষজ্ঞ ডাক্তার ও নার্সের একটি প্রতিনিধি দল পাঠাতে হবে যাতে তাদের সুচিকিৎসা নিশ্চিত করা যায়। যেসব জেলায় বর্তমানে সংক্রমণের হার ঊর্ধ্বমুখী সেসব জেলায় সরকারের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় থেকে একটা বাজেট রাখতে হবে। যাতে করে সেসব জায়গায় দ্রুত রোগীদের আনা নেওয়ার জন্য গাড়ি বা অ্যাম্বুলেন্স নিশ্চিত করা যায়। পাশাপাশি করোনার প্রয়োজনীয় ওষুধসহ অক্সিজেন, হাইফ্লো ন্যাজাল ক্যানুলা, অক্সিজেন সিলিন্ডার, অক্সিজেন কনসেনটেট্ররের ব্যবস্থা করতে হবে। পাশাপাশি স্বাস্থ্যবিধি মানতে জনসাধারণকে উদ্বুদ্ধ করতে হবে।’
করোনা নিয়ন্ত্রণে মূলকথা হলো-স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়সহ সংশ্লিষ্ট দায়িত্বশীলদের যথাযথ কর্মদ্যোগ গ্রহণ। দেশের এই দুর্যোগময় মুহূর্তে দুর্নীতি, অনিয়ম বন্ধ করে সংশ্লিষ্টরা যদি সেবার মানসিকতা নিয়ে কর্মকৌশল বাস্তবায়ন করেন, তাহলে যেকোন পরিস্থিতি সুচারুভাবে সামাল দেয়া সম্ভব। কিন্তু স্বাস্থ্যখাতের নানা অনিয়ম সংবাদমাধ্যমে উঠে আসছে। সেখানকার কোনো কোনো দুর্নীতিবাজ একেকজন রাঘববোয়াল। সিনেমার কাহিনীকেও কেউ কেউ হার মানাচ্ছেন। এর কুফল ভোগ করছে স্বাস্থ্যখাত, সাধারণ মানুষ। এরপরও আশা করবো এই অবস্থা থেকে উত্তরণ হবে। কেননা সেখানেও সবাই খারাপ না। রিজেন্ট হাসপাতাল কিংবা জেকেজি হেলথকেয়ারের মতো প্রতিষ্ঠানের দৌরাত্ম্যের বিপরীতে সরকারি নির্দেশনায় সেখানকার সংশ্লিষ্ট ভালো কর্মকর্তাদের পরিকল্পনায় এমন পরিস্থিতিতেও এগিয়ে যাচ্ছে স্বাস্থ্যখাত। সরকার আরেকটু কৌশলী ও কঠোর অবস্থানে গেলেই স্বাস্থ্যখাতকে গৌরবান্বিত অবস্থানে নিয়ে আসা সম্ভব। সেটা খুব দ্রুতই হবে বলে দৃঢ় বিশ্বাস। নয়তো করোনার নতুন ঢেউয়ে কঠিন পরিস্থিতির জন্য আমাদের প্রস্তুত থাকতে হবে, যেটা কখনোই কাম্য নয়।
(এ বিভাগে প্রকাশিত মতামত লেখকের নিজস্ব। চ্যানেল আই অনলাইন এবং চ্যানেল আই-এর সম্পাদকীয় নীতির সঙ্গে প্রকাশিত মতামত সামঞ্জস্যপূর্ণ নাও হতে পারে।