তবে কি ১ রানের আক্ষেপেই শেষ পর্যন্ত ডুবতে হলো ‘টিম টাইগার্স’কে। এশিয়া কাপের ফর্ম টি২০ বিশ্বকাপে টেনে নিয়ে যাওয়া থেকে শুরু করে কি দুর্দান্ত ক্রিকেটই না উপহার দিচ্ছিলেন মাশরাফি-মাহমুদউল্লাহরা। কিন্তু হুট করে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে খেই হারানো বাংলাদেশ হারলো ৭৫ রানের বিশাল ব্যবধানে।
হ্যামিল্টনের; চার বছর পর এসে টি২০ ক্রিকেটে টাইগারদের সর্বনিম্ম সংগ্রহ। সেবার তো ৭৮ রান করতে সমর্থ হয়েছিলো বাংলাদেশ। এবার থামতে হলো ৭০ রানেই। তবে এবারের গল্পে খলনায়কও এক। সেবারও এই কিউইদের কাছেই লজ্জায় ডুবতে হয়েছিলো।
তবে বাছাই পর্বে তিন ম্যাচের দুটিতে জয়। অন্যটি (আয়ারল্যান্ড) ভেসে যাওয়া সব মিলিয়ে সুপার টেনে দুর্দান্ত এক বাংলাদেশকে দেখার ইঙ্গিত ছিলো মাশরাফিদের খেলায়। কিন্তু ইডেন গার্ডেনে পাকিস্তানের বিপক্ষে ৫৫ রানের হার বড় একটা ধাক্কা ছিলো টাইগারদের জন্য। তবে ওই ম্যাচে ব্যাট হাতে দীর্ঘ দিন পর সাকিব ফিরে আসাটা ছিলো টাইগারদের জন্য বড় পাওয়া।
দ্বিতীয় ম্যাচে ব্যাঙ্গালুরু জয়ের কাছে গিয়েও অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে জয়টা পাওয়া হয়নি টাইগারদের। ৯ বল হাতে রেখেই ৩ উইকেটের জয় পায় অজিরা। তবে, এর পরেরটা আরো কষ্টের। জয়ের দ্বার প্রান্তে গিয়েও ভারতের বিপক্ষে ১ রানের হতাশার হার নিয়ে মাঠ ছাড়তে হয় টাইগারদের।
ম্যাচ শেষে টাইগার ক্যাপ্টেন মাশরাফি বিন মর্তুজা যেটা বলেছেন বাংলাদেশের ইতিহাসের সব চেয়ে বড় পরাজয়। শেষ ওভারে যখন বাংলাদেশের জয়ের জন্য প্রয়োজন ছিলো ১১ রান। হার্দিক পান্ডের প্রথম তিন বলেই চলে আসে ৯ রান। এরপরের গল্পটা সবার জানা। চতুর্থ ও পঞ্চম বলে উড়িয়ে মারতে উইকেট বিলিয়ে আসেন দুই সেট ব্যাটসম্যান মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ এবং মুশফিকুর রহিম। শেষ বলে শুভাগত বল ব্যাটে ছোঁয়াতে ব্যর্থ!
এক রানের হার এবারের টি২০ বিশ্বকাপে সবচেয়ে বড় দুঃখ হয়ে থাকবে বাংলাদেশের জন্য। দেশে ফেরার অল্প পথটুকুতেও সেই যন্ত্রণা ভুলে থাকা কঠিন হবে। ওই হারেই যে বিশ্বকাপ শেষ হয়ে গেছে মাশরাফি বিন মুর্তজার দলের!
তবে এতো হতাশার মধ্যেও প্রাপ্তি কম ছিলোনা টাইগারদের। সুপার টেনে দলীয় অর্জন যাই হোক না কেনো ব্যক্তিগত সাফল্যে উজ্জ্বল বাংলাদেশ। এখন পর্যন্ত টুর্নামেন্টে শীর্ষ ব্যাটসম্যান-বোলার দুজনই বাংলাদেশের। সেরা পাঁচ ব্যাটসম্যানের তিনজনই বাংলাদেশের।
৬ ম্যাচে ২৯৫ রান করে সবার ওপরে তামিম ইকবাল। দুইয়ে থাকা আফগানিস্তানের মোহাম্মদ শেহজাদের রান ৬ ম্যাচে ১৯৮। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষের আজকের ম্যাচের আগে, ৩ ম্যাচে ১৪৩ রান করে তিনে ইংলিশ ব্যাটসম্যান জো রুট। ৭ ম্যাচে ১৪৭ রান করে সাব্বির রহমান আছেন চারে। সমান ম্যাচে ১২৯ রান করে সাকিব আল হাসান পাঁচে।
ইনিংসে সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহকদের তালিকায় তামিম এখনো শীর্ষে। ওমানের বিপক্ষে করা তাঁর অপরাজিত ১০৩ রান ছাড়িয়ে যেতে পারেননি কেউ। ক্রিস গেইল অবশ্য তামিমকে ছাড়িয়ে যাওয়ার হুমকি দিয়েছিলেন, এখন পর্যন্ত পারেননি। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে অপরাজিত ১০০ রান করে ক্যারিবীয় ওপেনার তাই দুইয়ে। টুর্নামেন্টে এই দুজনই শুধু ছুঁতে পেরেছেন তিন অঙ্ক।
এখন পর্যন্ত টুর্নামেন্টে সর্বোচ্চ ১৪ ছয়ও এসেছে তামিমের ব্যাট থেকে। পেছনে ফেলেছেন ক্রিস গেইলের মতো হার্ড হিটারকে।
বোলিংয়ে ৬ ম্যাচে ১০ উইকেট নিয়ে শীর্ষে সাকিব আল হাসান। সমানসংখ্যক ম্যাচে ১০ উইকেট নিলেও বোলিং গড়ে পিছিয়ে থাকায় দুইয়ে রয়েছেন আফগানিস্তানের মোহাম্মদ নবী।
তবে এতো কিছুর মাঝে এই বিশ্বকাপটা অন্যভাবে মনে রাখবে টাইগার ক্রিকেট। কেননা, টুর্নামেন্টের মাঝ পথে অবৈধ বোলিং অ্যাকশনের কারণে সানি- তাসকিনের সাময়িক সময়ে জন্য নিষিদ্ধ হন। এমনকি, তাসকিনের ক্ষেত্রে আইসিসিতার নিজের তৈরী নিয়মই ভেঙ্গেছে বলেও বিতর্ক আছে।