থাইল্যান্ডের কোনো ব্যবসায়ী যদি বাংলাদেশে যেকোনো খাতে ১ মিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করে এবং বিনিয়োগের মূলধন যদি ফেরত না নেন, তাহলে ওই বিনিয়োগকারীকে নাগরিকত্ব দেয়া যেতে পারে বলে জানিয়েছেন বাণিজ্য সচিব শুভাশীষ বসু।
বুধবার রাজধানীর সোনারগাঁও হোটেলে বাংলাদেশে থাইল্যান্ডের বিনিয়োগ সম্ভাবনা সংক্রান্ত এক আলোচনা সভায় বিনিয়োগের এ আহ্বান জানিয়ে এই প্রস্তাব দেন তিনি।
বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) চেয়ারম্যান আমিনুল ইসলামের সভাপতিত্বে সভায় আরো উপস্থিত ছিলেন থাইল্যান্ডের অর্থনৈতিক সংস্কার ও বিনিয়োগমন্ত্রী ড. কুবসেক পুত্রাকুলের নেতৃত্বে দেশটির উচ্চ পর্যায়ের ৩২ সদস্যের ব্যবসায়ী প্রতিনিধি দল, ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন- এফবিসিসিআই’র সভাপতি শফিউল ইসলাম মহিউদ্দিন, ডিসিসিআই’র সভাপতি আবুল কাশেম খান।
বাণিজ্য সচিব বলেন: বর্তমানে বাংলাদেশে বিনিয়োগের যথেষ্ট সুযোগ তৈরি হয়েছে। তাই থাইল্যান্ড বিভিন্ন খাতে বিনিয়োগ করতে পারে।
বিনিয়োগ করতে থাইল্যান্ডকে বেশকিছু প্রস্তাবনা দিয়ে সুভাশীষ বসু বলেন: আমরা কিছু বিশেষ সুযোগ দিতে পারি থাইল্যান্ডকে। যেমন, যদি ১ মিলিয়ন ডলারের বেশি মূলধন বিনিয়োগ করে কেউ তা ফিরিয়ে না নেন, তাহলে বিনিয়োগকারীকে নাগরিকত্ব দেওয়া হবে। এছাড়া যৌথ ব্যবসায়ীক উদ্যোগে থাইল্যান্ডের চিকিৎসা সেবা বাংলাদেশে আনা যেতে পারে।
বিডার চেয়ারম্যান আমিনুল ইসলাম বলেন: বাংলাদেশ সরাসরি বিদেশি বিনিয়োগের জন্য উপযুক্ত স্থান। এখানে কৃষি, ম্যানুফ্যাকচারিং ও সেবা খাতে ব্যাপক বিনিয়োগের সুযোগ রয়েছে। এ দেশের মানুষ খুবই কর্মঠ ও অতিথিপরায়ণ। এছাড়া বাংলাদেশে বর্তমানে ডেমোগ্রাফিক ডিভিডেন্ড চলছে। বিনিয়োগকারীদের জন্য এটি একটি বড় সুযোগ।
ডেমোগ্রাফিক ডিভিডেন্ড হলো কোনো দেশের কর্মক্ষম জনসংখ্যার, অর্থাৎ ১৫ থেকে ৬৪ বছর বয়সী জনসংখ্যার আধিক্য। এই কর্মক্ষম জনসংখ্যা দেশের মোট জনসংখ্যার ৬০ শতাংশের বেশি থাকলে ওই দেশ ডেমোগ্রাফিক বোনাসকালে অবস্থান করছে বলে বিবেচনা করা হয়। তখন মনে করা হয়, এ জনসংখ্যা কোনো না কোনোভাবে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে অংশগ্রহণ করে, যা দেশের জিডিপি প্রবৃদ্ধিতে অবদান রাখে।
তিনি বলেন: ঢাকায় বর্তমানে থাইল্যান্ড ভিত্তিক ইতাল-থাই কোম্পানি অবকাঠামো খাতের অনেক বড় প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে। বাংলাদেশে থাইল্যান্ডের বিনিয়োগ বাড়াতে আরো বেশি যোগাযোগ বাড়ানো দরকার।
দু’দেশের মধ্যে অংশীদারিত্বমূলক ব্যবসা বাণিজ্য এগিয়ে আসতে হবে উল্লেখ করে এফবিসিসিআই সভাপতি বলেন: বাংলাদেশ অমৃত সম্ভাবনার দেশ। গত বছর জিডিপি প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৭ শতাংশের বেশি। দেশ গ্যাস, এনার্জি, অবকাঠামো উন্নয়নে এগিয়ে যাচ্ছে। ফলে বিনিয়োগের অনেক সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে।
থাইল্যান্ডের বিনিয়োগ মন্ত্রী কুবসেক পুত্রাকুল বলেন: বাংলাদেশ জনবহুল দেশ। শ্রমিক প্রাপ্যতার ওপর ভিত্তি করে এ দেশে বিনিয়োগ সম্ভব। দু’দেশের ব্যবসাসহ অন্যান্য বিষয়ের স্বার্থে থাইল্যান্ড ও বাংলাদেশকে কাছাকাছি থাকতে হবে।
তিনি আরো বলেন: বাংলাদেশ, ভারত, চীন ও মায়ানমারের পণ্য পরিবহনে যে যোগাযোগ গড়ে উঠেছে, থাইল্যান্ডও এর সঙ্গে যুক্ত হতে পারে।