স্যার ফজলে হাসান আবেদ বিশ্বের সর্ববৃহৎ বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা ‘ব্র্যাক’-এর প্রতিষ্ঠাতা। তিনি ১৯৩৬ সালের ২৭ এপ্রিল তদানীন্তন সিলেট জেলার হবিগঞ্জ মহকুমার বানিয়াচংয়ে জন্ম গ্রহণ করেন। সৈয়দা সুফিয়া খাতুন এবং সিদ্দিক হাসানের দ্বিতীয় সন্তান তিনি।
১৯৫২ সালে পাবনা জেলা স্কুল থেকে ম্যাট্রিক এবং ১৯৫৪ সালে ঢাকা কলেজ থেকে তিনি আইএসসি পাস করেন। পরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পদার্থবিদ্যায় অনার্সে ভর্তি হন। কিন্তু সেখানে না পড়ে তিনি ইংল্যান্ডে চলে যান।
তিনি ১৯৫৪ সালে স্কটল্যান্ডের গ্লাসগো বিশ্ববিদ্যালয়ে নেভাল আর্কিটেকচারে ভর্তি হন। কিন্তু দুই বছর লেখাপড়া করার পরে এ বিষয়ে পড়া বাদ দিয়ে লন্ডনে গিয়ে অ্যাকাউন্টিংয়ে ভর্তি হন। চার্টার্ড অ্যাকাউন্টিংয়ে লেখাপড়া করার সময়েই, ১৯৫৮ সালে তাঁর মা সৈয়দা সুফিয়া খাতুন মৃত্যুবরণ করেন।
১৯৬২ সালে ‘কস্ট অ্যান্ড ম্যানেজমেন্ট অ্যাকাউন্টিং’-এর ওপর তিনি প্রফেশনাল কোর্স সম্পন্ন করেন ।কর্মজীবনের শুরু শিক্ষাজীবন শেষে স্যার ফজলে হাসান আবেদ ১৯৬২ সাল থেকে ১৯৬৮ সাল পর্যন্ত লন্ডন, কানাডা ও আমেরিকায় চাকরি করেন। ১৯৭০ সালে আবেদ শেল অয়েল কোম্পানির চট্টগ্রাম অফিসে যোগ দেন। এরপর পদোন্নতি লাভ করে ফাইন্যান্স বিভাগের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পান। শেল অয়েল কোম্পানিতে কর্মরত থাকাকালে ১৯৭০ সালের ১২ই নভেম্বর চট্টগ্রাম ও নোয়াখালীর উপকূলীয় দ্বীপাঞ্চলে স্মরণকালের ভয়াবহ ঘূর্ণিঝড় আঘাত হানে। সন্দ্বীপ, হাতিয়া, মনপুরা এই তিনটি দ্বীপের লাখ লাখ মানুষ ঘূর্ণিঝড় ও জলোচ্ছ্বাসে প্রাণ হারান। ফজলে হাসান আবেদ, তার বন্ধু ব্যারিস্টার ভিকারুল ইসলাম চৌধুরী, সহকর্মী কায়সার জামান, অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মকর্তা আকবর কবীর এবং নটরডেম কলেজের শিক্ষক ফাদার টিম মিলে সিদ্ধান্ত নিলেন ত্রাণ বিতরণ করতে তারা মনপুরায় যাবেন। এসময় তিনি বন্ধুদের সঙ্গে মিলে ‘হেলপ’ নামের একটি সংগঠন গড়ে তুলে মনপুরা দ্বীপের বিপন্ন ও বিধ্বস্ত মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছিলেন।
সেখানে তারা ব্যাপক ত্রাণ ও পুনর্বাসন কার্যক্রম পরিচালনা করেন। সর্বস্ব এবং স্বজন হারানো মানুষের কাছে ত্রাণসামগ্রী তুলে দেওয়ার পাশাপাশি তারা বিধ্বস্ত ঘরবাড়িও তৈরি করে দিয়েছিলেন। মুক্তিযুদ্ধের সহায়তায় ‘অ্যাকশন বাংলাদেশ’ ও ‘হেলপ বাংলাদেশ’ গঠন ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলে স্যার ফজলে হাসান আবেদ শেল অয়েল কোম্পানির উচ্চপদের চাকরি ছেড়ে দিয়ে ইসলামাবাদ ও কাবুল হয়ে লন্ডনে চলে যান। ১৯৭১ সালের মে মাসে লন্ডনে গিয়ে সমমনা বন্ধুদের সঙ্গে মিলে সম্পৃক্ত হন স্বাধীনতা সংগ্রামের লড়াইয়ে। মুক্তিযুদ্ধে সহায়তার জন্য গড়ে তোলেন ‘অ্যাকশন বাংলাদেশ’ ও ‘হেলপ বাংলাদেশ’ নামে দুটো সংগঠন।
‘অ্যাকশন বাংলাদেশ’-এর কাজ ছিল মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে বিশ্বব্যাপী রাজনৈতিক সমর্থন আদায়, বাংলাদেশের স্বাধীনতার সপক্ষে জনমত তৈরি এবং পাকিস্তানি বাহিনীর বর্বরোচিত কার্যকলাপ বন্ধে ইউরোপীয় দেশসমূহের সরকারকে সক্রিয় করে তোলা। ‘হেলপ বাংলাদেশ’-এর কাজ ছিল অর্থ সংগ্রহ করে মুক্তিবাহিনীকে সহযোগিতা করা। মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে জনমত তৈরি, প্রচারপত্র বিলি, টাইমস অব লন্ডনে লেখা ও বিজ্ঞাপন প্রকাশ করা, রেডিও ও টেলিভিশনে সাক্ষাৎকার দেওয়া, ইউরোপীয় দেশসমূহের পার্লামেন্ট সদস্যদের আলোচনার মাধ্যমে স্বদেশের স্বাধীনতার পক্ষে বিবিধ কর্মতৎপরতা পরিচালনা করা। পথনাটক, তহবিল সংগ্রহসহ নানা ধরনের কাজেও তিনি ও তার বন্ধুরা সক্রিয়ভাবে যুক্ত হয়েছিলেন।
‘ব্র্যাক’ প্রতিষ্ঠা
১৯৭১ সালের ১৬ই ডিসেম্বর স্বাধীন ও সার্বভৌম দেশ হিসেবে আত্মপ্রকাশ করল বাংলাদেশ। ১৯৭১ সালের ডিসেম্বর মাসে ফজলে হাসান আবেদ সদ্যস্বাধীন যুদ্ধবিধ্বস্ত বাংলাদেশে ফিরে আসেন। ফেরার সময় তিনি তার লন্ডনের ফ্ল্যাটটি ৬,৮০০ পাউন্ড দামে বিক্রি করে দিয়েছিলেন। এক কোটি শরণার্থী, যারা ভারতে আশ্রয় নিয়েছিলেন, তারা তখন দেশে ফিরে আসতে শুরু করেছেন। আবেদ ভারতপ্রত্যাগত শরণার্থীদের ত্রাণ ও পুনর্বাসনকল্পে কাজ করার সিদ্ধান্ত নেন। মুক্তিযুদ্ধকালে ধ্বংসস্তূপে পরিণত হওয়া সিলেটের সুনামগঞ্জের শাল্লা ও দিরাই অঞ্চলকে তিনি তার কর্মএলাকা হিসেবে বেছে নেন।
১৯৭২ সালের ১লা ফেব্রুয়ারি থেকেই বাংলাদেশ রিহ্যাবিলিটেশন অ্যাসিসটেন্স কমিটি সংক্ষেপে ‘ব্র্যাক’-এর শাল্লা প্রকল্পের প্রথম পর্বের সূচনা হয়। এটিই ব্র্যাকের আনুষ্ঠানিক জন্মদিন।
১৯৭২ সাল থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত স্যার ফজলে হাসান আবেদ ব্র্যাকের নির্বাহী পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। ২০০১ সাল থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত তিনি ব্র্যাকের চেয়ারপারসন হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। তিনি ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয় ও ব্র্যাক ব্যাংকেরও প্রতিষ্ঠাতা।
২০০১ সাল থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত ব্র্যাক ইউনিভার্সিটির বোর্ড অব ট্রাস্টিজের চেয়ারপারসন হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন স্যার ফজলে হাসান আবেদ। তিনি ২০০১ সাল থেকে ২০০৮ সাল এবং ২০১৩ সাল থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত ব্র্যাক ব্যাংকের চেয়ারপারসন হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। স্যার ফজলে ২০১৯ সালের ১লা আগস্ট ব্র্যাকের চেয়ারপারসন পদ থেকে অবসর গ্রহণ করেন এবং চেয়ার এমেরিটাস হিসেবে দায়িত্ব নেন। তিনি ২৪ জুলাই ২০১৯ তারিখে ব্র্যাক ইউনিভার্সিটির ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারপারসন পদ থেকে অবসর গ্রহণ করেন। স্যার ফজলে ২৬ আগস্ট ২০১৯ তারিখে ব্র্যাক ব্যাংকের চেয়ারপারসন পদ থেকে অবসর গ্রহণ করেন।
তিনি ১৯৮১ সাল থেকে ১৯৮২ সাল পর্যন্ত হার্ভার্ড ইউনিভার্সিটির হার্ভার্ড ইনস্টিটিউট অব ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট-এর ভিজিটিং স্কলার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। ১৯৮২ সাল থেকে ১৯৮৬ সাল পর্যন্ত অ্যাসোসিয়েশন অব ডেভেলপমেন্ট এজেন্সিজ ইন বাংলাদেশ (এডাব)-এর চেয়ারপারসন হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন।
১৯৮২ সাল থেকে ১৯৮৬ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ
(বিআইডিএস)-এর বোর্ড অব ট্রাস্টিজের সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। একই সময় ততিি এই প্রতিষ্ঠানটির সিনিয়র ফেলো হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন। ১৯৮৬ সাল থেকে ১৯৯১ সাল পর্যন্ত দি ওয়ার্ল্ড ব্যাংক, জেনেভার এনজিও কমিটির সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। ১৯৮৭ সাল থেকে ১৯৯০ সাল পর্যন্ত সাউথ এশিয়া পার্টনারশিপ-এর চেয়ারপারসন হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। ১৯৮৭ সাল থেকে ১৯৯০ সাল পর্যন্ত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের হার্ভার্ড ইউনিভাসিটির ইন্টারন্যাশনাল কমিশন অন হেলথ রিসার্চ ফর ডেভেলপমেন্ট-এর সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন।
১৯৯০ সাল থেকে ২০০৯ সাল পর্যন্ত গণসাক্ষরতা অভিযান-এর চেয়ারপারসন হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। ১৯৯০ সাল থেকে ২০০৯ সাল পর্যন্ত এনজিও ফোরাম ফর ড্রিংকিং ওয়াটার সাপ্লাই অ্যান্ড স্যানিটেশনএর চেয়ারপারসন হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। ১৯৯২ সাল থেকে ১৯৯৩ সাল পর্যন্ত ইন্ডিপেনডেন্ট সাউথ এশিয়ান কমিশন অন পোভার্টি এলিভিয়েশন-এর সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। ১৯৯২ সাল থেকে ১৯৯৩ সাল পর্যন্ত সার্ক-এর সাউথ এশিয়ান কমিশন অন পোভার্টি এলিভিয়েশন-এরসদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন।
১৯৯৩ সাল থেকে ১৯৯৪ এবং ২০০৭ সাল থেকে ২০০৯ সাল মেয়াদে আইন ও সালিশ কেন্দ্র-এর চেয়ারপারসন হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। ১৯৯৪ সাল থেকে বর্তমান সময় পর্যন্ত সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি)-এর সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। ১৯৯৮ সাল থেকে ২০০৪ সাল পর্যন্ত যুক্তরাজ্যের সাসেক্স ইউনিভার্সিটির পরিচালনা বোর্ডের সদস্য এবং ইনস্টিটিউট অব ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ (আইডিএস)-এর সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। ১৯৯৯ সাল থেকে ২০০৫ সাল পর্যন্ত আন্তর্জাতিক ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট (ইরি), ফিলিপিন্স-এর বোর্ড অব গভর্নরস-এর সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। ২০০০ সাল থেকে ২০০৫ সাল পর্যন্ত আন্তর্জাতিক ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট (ইরি), ফিলিপিন্স-এর ফাইন্যান্স অ্যান্ড অডিট কমিটির চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করেছেন।
২০১০ সাল থেকে ২০১১ সাল পর্যন্ত ইউএন সেক্রেটারি জেনারেলস গ্রুপ অব এমিনেন্ট পারসনস ফর লিস্ট ডেভেলপড কান্ট্রিজ (এলডিসি)-এর সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। ২০১২ সাল থেকে মৃত্যুর আগে পর্যন্ত ইউএন সেক্রেটারি জেনারেলস লিড গ্রুপ অব দি স্কেলিং এবং অশোকা গ্লোবাল অ্যাকাডেমি ফর সোশ্যাল আন্ট্রোপ্রেনিওরশিপ-এর প্রতিষ্ঠাতা সদস্য।
স্যার ফজলে হাসান আবেদ যেসব পুরস্কার পেয়েছেন
২০১৯ সালে দরিদ্র জনগোষ্ঠীর জীবনমান উন্নয়ন ও নারীর ক্ষমতায়নে কয়েক দশকব্যাপী অনবদ্য ভূমিকার স্বীকৃতিস্বরূপ নেদারল্যান্ডসের নাইটহুড ‘অফিসার ইন দ্য অর্ডার অব অরেঞ্জ-নাসাউ’ খেতাবে ভূষিত হয়েছেন। ২০১৯ সালে শিক্ষা উন্নয়ন বিষয়ে অত্যন্ত মর্যাদাসূচক এবং অর্থমূল্যের দিক থেকে সবচেয়ে বড় পুরস্কার ইদান প্রাইজ লাভ করেন স্যার ফজলে হাসান আবেদ। হংকংভিত্তিক ইদান প্রাইজ ফাউন্ডেশন এই পুরস্কার ঘোষণা করে। ২০১৮ সালে প্রাকশৈশব উন্নয়ন কর্মকাণ্ডে অসাধারণ অবদান রাখার স্বীকৃতিস্বরূপ লেগো ফাউন্ডেশন, ডেনমার্ক প্রদত্ত লেগো পুরস্কার।
২০১৭ সালে দারিদ্র্যপীড়িত লক্ষ-কোটি মানুষের সম্ভাবনা বিকাশে সুযোগ সৃষ্টির জন্য লুডাটো সি
অ্যাওয়ার্ড। ২০১৬ সালে গ্লোবাল লিডারশিপ ফোরাম অ্যান্ড ওয়ার্ল্ড ব্যাংক গ্রুপ, ওয়াশিংটন ডিসি প্রদত্ত হোসে এডগারডো ক্যাম্পোস কোলাবোরেটিভ লিডারশিপ অ্যাওয়ার্ড লাভ। ২০১৬ সালে জনস্বাস্থ্যে অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মিশিগান বিশ্ববিদ্যালয় প্রদত্ত টমাস ফ্রান্সিস জুনিয়র মেডেল অব গ্লোবাল পাবলিক হেলথ পুরস্কার। খাদ্য ও কৃষিক্ষেত্রে অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ ২০১৫ সালে ওয়ার্ল্ড ফুড প্রাইজ লাভ করেন। ২০১৪ সালে রাশিয়ান চিলড্রেন ফান্ড কর্তৃক লেভ তলস্তয় স্বর্ণপদক এবং স্পেনের সর্বোচ্চ বেসামরিক সম্মাননা অর্ডার অব সিভিল মেরিট (অর্ডেন ডেল মেরিটো সিভিল) লাভ করেন।
২০১৪ সালে নারীর অধিকার রক্ষা ও সমুন্নত রাখার ক্ষেত্রে অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ ট্রাস্ট উইমেন হিরো অ্যাওয়ার্ড লাভ করেন। ২০১৩ সালে ওপেন সোসাইটি প্রাইজ লাভ করেন। ২০১১ সালে কাতার ফাউন্ডেশন প্রবর্তিত শিক্ষাক্ষেত্রে বিশ্বের সর্বোচ্চ পুরস্কার ওয়াইজ প্রাইজ লাভকরেন। ২০১০ সালে দারিদ্র্য বিমোচনে অসাধারণ অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ যুক্তরাজ্যের অন্যতম সর্বোচ্চ সম্মানজনক নাইটহুড উপাধিতে ভূষিত হন। ২০০৯ সালে দ্য ওয়ার্ল্ড আন্ট্রপ্রেনিওরশিপ ফোরামের পক্ষ থেকে আন্ট্রপ্রেনিওর ফর দ্য ওয়ার্ল্ড লাভ করেন। ২০০৮ সালে ডেভিড রকফেলার ব্রিজিং লিডারশিপ অ্যাওয়ার্ড এবং ফেলোশিপ অব এশিয়াটিক সোসাইটি অব বাংলাদেশ লাভ করেন। ২০০৭ সালে হেনরি আর. ক্রাভিস প্রাইজ ইন লিডারশিপ এবং ক্লিনটন গ্লোবাল সিটিজেনশিপ অ্যাওয়ার্ড লাভ করেন। ২০০৭ সালে দারিদ্র্য দূরীকরণ ও সামাজিক উন্নয়নে অবদানের জন্য পল্লীকর্ম সহায়ক ফাউন্ডেশন (পিকেএসএফ) কর্তৃক আজীবন সম্মাননা লাভ করেন।তিনি ২০০৪ সালে গেটস অ্যাওয়ার্ড ফর গ্লোবাল হেলথ ও ইউএনডিপির মানবউন্নয়ন বিষয়ক পুরস্কার মাহবুবুল হক অ্যাওয়ার্ড লাভ করেন। ২০০৩ সালে যুক্তরাষ্ট্রের হার্ভার্ড কেনেডি স্কুলের সেন্টার ফর পাবলিক লিডারশিপ প্রদত্ত গ্লেইটসম্যান ফাউন্ডেশন পুরস্কার লাভ করেন। ২০০২ সালে দ্য শোয়াব ফাউন্ডেশন সোশ্যাল আন্ট্রপ্রেনিওরশিপ প্রতিষ্ঠান থেকে ‘আউটস্ট্যান্ডিং সোশ্যাল আন্ট্রপ্রেনিওর’ স্বীকৃতি লাভ করেন। ২০০১ সালে সুইডেন থেকে ওলফ পামে অ্যাওয়ার্ড লাভ করেন। ১৯৮০ র্যামন ম্যাগসেসে অ্যাওয়ার্ডে ভূষিত হন।
ব্র্যাককে যেসব পুরস্কার এনে দিয়েছেন
। ২০০৮ সালে মানবিক ক্ষেত্রে অবদান রাখার জন্য কনরাড এন হিলটন হিউম্যানিটেরিয়ান অ্যাওয়ার্ড। ২০০৭ সালে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ রাষ্ট্রীয় সম্মান স্বাধীনতা পুরস্কার।১৯৯২ সালে ইউনিসেফ মরিস পেট অ্যাওয়ার্ড। ১৯৯০ সালে অ্যালানশন ফেইনস্টেইন ওয়ার্ল্ড হাঙ্গার পুরস্কার। ১৯৮৫ সালে ইউনেস্কো নোমা পুরস্কার অর্জন।
সম্মানসূচক ডিগ্রি
১৯৯৪ কানাডার কুইন্স ইউনিভার্সিটি থেকে ডক্টর অব লজ ডিগ্রি। ২০০৩ যুক্তরাজ্যের ইউনিভার্সিটি অব ম্যানচেস্টার থেকে ডক্টর ইন এডুকেশন ডিগ্রি। ২০০৭ যুক্তরাষ্ট্রের ইয়েল ইউনিভার্সিটি থেকে ডক্টরেট অব হিউমেন লেটার্স ডিগ্রি। ২০০৮ যুক্তরাষ্ট্রের কলাম্বিয়া ইউনিভার্সিটি থেকে ডক্টর অব লজ ডিগ্রি। ২০০৯ যুক্তরাজ্যের অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটি থেকে ডক্টর অব লেটার্স ডিগ্রি। ২০০৯ জাপানের রিক্কিও ইউনিভার্সিটি থেকে ডক্টরেট অব হিউমেন লেটার্স লাভ। ২০১০ যুক্তরাজ্যের বাথ ইউনিভার্সিটি থেকে ডক্টর অব লজ ডিগ্রি। ২০১২ যুক্তরাজ্যের ম্যানচেস্টার ইউনিভার্সিটি থেকে সম্মানসূচক ডিগ্রি। ২০১৪ যুক্তরাষ্ট্রের প্রিন্সটন ইউনিভার্সিটি থেকে ডক্টর অব লজ ডিগ্রি। ২০১৪ যুক্তরাষ্ট্রের ইউনিভার্সিটি অব দি সাউথ থেকে ডক্টর অব সিভিল লজ ডিগ্রি। ২০১৬ যুক্তরাজ্যের ইউনিভার্সিটি অব ব্র্যাডফোর্ড থেকে ডক্টর অব এডুকেশন ডিগ্রি।
মৃত্যু
স্যার ফজলে হাসান আবেদ ২০ ডিসেম্বর (শুক্রবার) রাত ৮টা ২৮ মিনিটে মারা গেছেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)।
ব্র্যাকের নির্বাহী পরিচালক আসিফ সালেহ এবং ব্র্যাক ইন্টারন্যাশনালের নির্বাহী পরিচালক ডা. মুহাম্মাদ মুসা এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
মৃত্যুকালে স্যার ফজলে হাসান আবেদের বয়স হয়েছিল ৮৩ বছর। তিনি স্ত্রী, এক মেয়ে, এক ছেলে এবং তিন নাতি-নাতনি রেখে গেছেন।
গত ২৭ নভেম্বর এ্যাপোলো হাসপাতালে রেসপেরিটরি সমস্যা নিয়ে ভর্তি হন স্যার ফজলে হাসান আবেদ। তিনি ডা. চন্দ্র প্রকাশ ডকুয়ালের তত্ত্বধায়নে চিকিৎসাধীন ছিলেন। তিনি ক্যান্সারে আক্রান্ত ছিলেন।
আগামী ২২ ডিসেম্বর সকাল সাড়ে ১০টা থেকে দুপুর সাড়ে বারোটা পর্যন্ত তার মরদেহ রাজধানীর আর্মি স্টেডিয়ামে সর্বসাধারণের শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য রাখা হবে।
ওই দিন দুপুর সাড়ে বারোটায় আর্মি স্টেডিয়ামে তার নামাজে জানাজা সম্পন্ন হবে। জানাজার পর ঢাকার বনানী কবরস্থানে স্যার ফজলে হাসান আবেদকে দাফন করা হবে।