চ্যানেল আই অনলাইন
হৃদয়ে বাংলাদেশ প্রবাসেও বাংলাদেশ

একীভূত কোম্পানি হিসেবে যাত্রা শুরু করল রবি

একীভূত কোম্পানি হিসেবে রবি’র বাণিজ্যিক কার্যক্রম শুরুর মাধ্যমে আজ (বুধবার) থেকে দেশের টেলিযোগাযোগ খাতের প্রথম একীভূতকরণ কার্যকর হলো। রবি ও এয়ারটেল একীভূতকরণের পর একীভূত কোম্পানিটি রবি আজিয়াটা লিমিটেড নামে পরিচালিত হবে। ‘রবি’ ব্র্যান্ডের পাশাপাশি রবি আজিয়াটার একটি স্বাধীন ব্র্যান্ড হিসেবে থাকবে ‘এয়ারটেল’।

একীভূতকরণ প্রক্রিয়া শেষে রবি’র সিংহভাগ অর্থাৎ ৬৮ দশমিক ৭ শতাংশ মালিকানায় রয়েছে আজিয়াটা। ভারতী এয়ারটেলের ২৫ শতাংশ এবং বাকি ৬ দশমিক ৩ শতাংশের মালিক জাপানের এনটিটি ডোকোমো।

একীভূত কোম্পানিটি রবি আজিয়াটা লিমিটেড নামে ব্যবসায়িক কার্যক্রম পরিচালনা করবে। একীভূতকরণ শেষে বর্তমানে অপারেটরটির মোট গ্রাহক সংখ্যা দাঁড়িয়েছে প্রায় ৩ কোটি ২২ লাখে। রবি ও এয়ারটেল একীভূত হওয়ার ফলে দেশজুড়ে কোম্পানিটির সবচেয়ে বিস্তৃত নেটওয়ার্কের পাশাপাশি মোবাইল ইন্টারনেট সেবায় আরো শক্তিশালী অবস্থান তৈরি হয়েছে। একই সাথে রবি দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম মোবাইল ফোন অপারেটর হিসাবে প্রতিষ্ঠিত হলো।

টেকসই অগ্রগতির পথে বাংলাদেশের টেলিযোগাযোগ শিল্প
রবি’র ম্যানেজিং ডিরেক্টর অ্যান্ড সিইও মাহতাব উদ্দিন আহমেদ বলেন, এয়ারটেলের সাথে একীভূতকরণ প্রক্রিয়া শেষ করতে পেরে আমরা আনন্দিত। প্রক্রিয়াটি সফলভাবে শেষ হওয়ার জন্য আমরা আমাদের শেয়ারহোল্ডার, ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন এবং রবি ও এয়ারটেলের গ্রাহকদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি। সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টায় একীভূতকরণ প্রক্রিয়াটি সফলভাবে সম্পন্ন করা সম্ভব হয়েছে। একীভূত কোম্পানি হিসেবে আমাদের যৌথ প্রচেষ্টা থাকবে, আমাদের ৩ কোটি ২২ লাখ গ্রাহককে সাশ্রয়ী মূল্যে আকর্ষণীয় এবং উদ্ভাবনী মোবাইল ও ব্রডব্যান্ড সেবা প্রদান করা।

আজিয়াটার প্রেসিডেন্ট এবং গ্রুপ চিফ এক্সিকিউটিভ অফিসার তান শ্রি জামালুদিন ইবরাহিম বলেন, “ইন্দোনেশিয়া, শ্রীলঙ্কা ও কম্বোডিয়ার মতো বাজারে আমাদের কৌশলগত একীভূতকরণের অভিজ্ঞতা বাংলাদেশের টেলিযোগাযোগ বাজারের প্রথম একীভূতকরণ প্রক্রিয়াটি সফলভাবে শেষ করতে সহায়ক হয়েছে। নিজেদের অবস্থানকে সুসংহত করার পাশাপাশি- দক্ষতা বৃদ্ধি, বাজারের সম্ভাবনাকে কাজে লাগিয়ে মুনাফার সম্ভাবনা তৈরি করা এবং দীর্ঘমেয়াদে প্রবৃদ্ধির সাথে সাথে গ্রাহক ও গণমানুষের জন্য মানসম্মত সেবা প্রদানের লক্ষ্যে আজিয়াটা অভ্যন্তরীণ একীভূতকরণের দিকে নজর দিয়েছে।’’

বাংলাদেশে একীভূত হয়ে ব্যবসা পরিচালনার সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের লক্ষ্যে ২০১৫ সালের ৯ সেপ্টেম্বর উভয় পক্ষের আলোচনা শুরুর ঘোষণার মধ্য দিয়ে একীভূতকরণের যে প্রক্রিয়াটি শুরু হয়েছিল সেটি আজ শেষ হলো।

একীভূত কোম্পানি হিসেবে রবি:
রবি আজিয়াটা লিমিটেড মালয়েশিয়ার আজিয়াটা গ্রুপ বারহাদ, ভারতের ভারতী এয়ারটেল লিমিটেড এবং জাপানের এনটিটি ডকোমো ইনকর্পোরেশনের একটি যৌথ উদ্যোগ। রবিতে আজিয়াটার সিংহভাগ-৬৮ দশমিক ৭ শতাংশ, ভারতী এয়ারটেলের ২৫ শতাংশ ও এনটিটি ডকোমোর ৬ দশমিক ৩ শতাংশ মালিকানা রয়েছে। প্রায় ৩ কোটি ২২ লাখ সক্রিয় গ্রাহক নিয়ে রবি বাংলাদেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম মোবাইল ফোন অপারেটর। ১৩ হাজার ৯শ’টি অন-এয়ার সাইটের মধ্যে ৮ হাজারটি ৩.৫জি নেটওয়ার্ক নিয়ে দেশের প্রায় ৯৯% জনসংখ্যা রবি নেটওয়ার্কের অন্তর্ভূক্ত। দেশের প্রথম অপারেটর হিসেবে রবি জিপিআরএস ও ৩.৫জি সেবা চালু করেছে। অপারেটরটি ডিজিটাল সেবা চালুর দিক থেকে অনেক ক্ষেত্রে পথিকৃতের ভূমিকা পালন এবং গ্রামীণ ও উপশহর অঞ্চলগুলোর সুবিধাবঞ্চিত জনগোষ্ঠীর জন্য মোবাইল আর্থিক সেবা চালু করতে ব্যাপক বিনিয়োগ করেছে। সামাজিক দায়বোধসম্পন্ন কোম্পানি হিসেবে দেশের টেকসই উন্নয়নের লক্ষ্যে তথ্যপ্রযুক্তি-শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও পরিবেশ খাতে বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ নিয়েছে রবি।

আজিয়াটা সম্পর্কে:
এশিয়ার অন্যতম বৃহৎ টেলিযোগাযোগ কোম্পানি হিসাবে আজিয়াটা গ্রুপ ১০টি দেশে ৩০০ মিলিয়ন গ্রাহককে টেলিযোগাযোগ সেবা প্রদান করছে। মোবাইল নেটওয়ার্ক অপারেশনে সমৃদ্ধ অভিজ্ঞতা, টেলিযোগাযোগ অবকাঠামো সেবা ও ডিজিটাল সেবা প্রদানের মাধ্যমে সেরা সংযোগ, প্রযুক্তি ও মানবসম্পদ কাজে লাগিয়ে এশিয়াকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছে আজিয়াটা।

দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া ও দক্ষিণ এশিয়ার শীর্ষস্থানীয় মোবাইল ফোন অপারেটরগুলোতে সিংহভাগ মালিকানা রয়েছে আজিয়াটার। মালয়েশিয়ায় ‘সেলকম’, ইন্দোনেশিয়ায় ‘এক্সএল’, শ্রীলঙ্কায় ‘ডায়ালগ’, বাংলাদেশে ‘রবি’, ক্যাম্বোডিয়ায় ‘স্মার্ট’, নেপালে ‘এনসেল’ এবং কৌশলগত অংশীদার হিসাবে ভারতে ‘আইডিয়া’ ও সিঙ্গাপুরে ‘এম ওয়ান’ নামে কার্যক্রম পরিচালনা করছে আজিয়াটা।

প্রতিশ্রুতিশীল ও দীর্যমেয়াদী বিনিয়োগকারী হিসাবে কার্যক্রম পরিচালনার লক্ষ্যে ২৫ হাজার মানবসম্পদ নিয়োগ করেছে আজিয়াটা। অগ্রগতি ধরে রাখার লক্ষ্যে তরুণ মেধাবীদের উন্নয়নে পদক্ষেপ এবং দুর্যোগকালীন ব্যবস্থা গ্রহণের পাশাপাশি পরিবেশ-বান্ধব কার্যক্রমের ওপর জোর দিচ্ছে কোম্পানিটি।