ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের (ডিএনসিসি) মেয়র হিসেবে দায়িত্ব নেয়ার পর গত দুই বছরের কোরবানির বর্জ্য ব্যবস্থাপনা মাঠে নেমে তদারক করেন আনিসুল হক। এবার অসুস্থতার কারণে তিনি দেশে নেই। তবে তার নির্দেশনা অনুযায়ী কোরবানির ৯০ দিন আগে থেকেই বিপুল বর্জ্য অপসারণের প্রস্তুতি সম্পন্নের কাজ গুছিয়ে আনা হয়েছে। তাই গতবারের চেয়েও দ্রুততম সময়ে বর্জ্য অপসারণ করা সম্ভব হবে বলে আশা করছে ডিএনসিসি’র বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগ।
বর্জ্য পরিবহনের নিজস্ব যানবাহন প্রস্তুত রাখা হয়েছে এবং প্রয়োজনে যানবাহন ভাড়া করে কোরবানির বর্জ্য একদিনেরও কম সময়ে সরিয়ে ফেলা হবে বলে জানিয়েছেন ডিএনসিসি’র প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপক কমডোর এম.এ রাজ্জাক।
চ্যানেল আই অনলাইনকে তিনি বলেন,‘আমাদের হিসাবে গতবছর ১ লাখ ৯৭ হাজার পশু কোরবানি হয়েছে। এবার আমাদের লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী প্রায় ২ লাখ ২৫ হাজার পশু কোরবানি হবে বলে ধারণা করছি। গতবছর কোরবানি বর্জ্যরে পরিমাণ ছিলো ৮ হাজার ৪৭০ টন। এবার যেহেতু বেশি কোরবানি হবে তাই ধারণা করছি প্রায় ৯-সাড়ে ৯ হাজার টন বর্জ্য হবে। বিপুল পরিমাণ এই বর্জ্য অপসারণের জন্য ডিএনসিসির নিজস্ব বর্জ্য পরিবহন যানবাহনগুলো প্রস্তুত রাখা হয়েছে। প্রয়োজন হলে আরও যানবাহন ভাড়া করবো। আমাদের মূল লক্ষ্য হচ্ছে এবার গতবারের চেয়েও দ্রুত সময়ে আমরা বর্জ্য অপসারণ করবো। গত কোরবানির ঈদে ২৩ ঘণ্টায় বর্জ্য অপসারণ করা হয়েছিলো।’
গত দু’টি ঈদে বর্জ্য ব্যবস্থাপনার বিশাল কর্মযজ্ঞে মেয়রের দেয়া উৎসাহ-উদ্দীপনাই এবারের অনুপ্রেরণা জানিয়ে তিনি বলেন,‘ তিনি বিদেশে চিকিৎসা নিতে যাওয়ার আগেই আমাদের সঙ্গে আলোচনা করে গেছেন।’
কোরবানির ঈদের পর ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক দিয়ে ঢাকায় ফেরা মানুষের নাকে ধাক্কা মারে ডিএনসিসি’র আমিন বাজার ডাম্পিং স্টেশনে ফেলা পশু বর্জ্যরে দুর্গন্ধ। এবারও এই দুর্গন্ধে গাড়ির জানালা আটকে,নাক চাপতে হবে যাত্রীদের।
তবে আগামী ৬ মাসেই ডিএনসিসি’র ডাম্পিং স্টেশনের দুর্গন্ধ থেকে ঢাকার প্রবেশদ্বারকে মুক্ত রাখার উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছেন তিনি।
তবে নাগরিকরা দায়িত্বশীল না হলে কোরবানির বর্জ্য এবং রাজধানীতে উৎপন্ন বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় সাফল্য আসবে না বলে মনে করেন এই কর্মকর্তা।
তিনি বলেন,‘ নাগরিকদের সহযোগিতার কারণেই আমরা গত দু’টি কোরবানি ঈদে কাঙ্ক্ষিত সাফল্য পেয়েছি। তারা আমাদের অনুরোধ রেখেছিলেন বলেই বিশাল কর্মযজ্ঞ প্রত্যাশিত সময়ে সম্পন্ন করতে পেরেছিলাম।’
কোরবানিদাতাদের প্রতি ডিএনসিসি’র অনুরোধ
কোরবানিদাতাদের প্রতি ডিএনসিসি’র বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের প্রধান কর্মকর্তা অনুরোধ জানিয়ে বলেন,‘ বর্জ্য রাখতে ডিএনসিসি যে ব্যাগ দিচ্ছে সেই ব্যাগে সমস্ত বর্জ্য ভরে, ব্যাগের মুখ ভালোভাবে আটকে বাড়ির গেটের সামনে রাখুন। গতবারও ব্যাগ দেয়া হয়েছিলো। কিন্তু অনেকেই ব্যাগটি বাড়ির ভেতরে রাখায় বর্জ্য অপসারণকর্মীদের সময় অপচয় হয়েছিলো।’
তিনি আরও বলেন,‘কোনো অবস্থাতেই রাস্তায় পশু জবাই করবেন না। বর্জ্য ব্যবস্থাপনার সুবিধায় এবং জবাইয়ের রক্ত,উচ্ছিষ্টের দুর্গন্ধ থেকে নগরকে মুক্ত রাখতে সিটি কর্পোরেশনের নির্ধারিত জায়গায় কোরবানি পশু জবাইকে আমরা উৎসাহিত করছি।’
নিজ বাড়িতে কোরবানির পশু জবাই করলেও বর্জ্যগুলো রাস্তা,ড্রেন,খালে না ফেলার অনুরোধ জানান তিনি।