সন্ধ্যা নাগাদ বিসিবি থেকে একটা মেইল এসেছে। সঙ্গে গণমাধ্যমের উদ্দেশ্যে একটা অনুরোধ। ‘অনিশ্চিত সংবাদ’ প্রকাশ থেকে যেন বিরত থাকা হয়। চারদিকে ভাঙনের এমন ‘অনিশ্চিত’ শব্দের ভেতর দাঁড়িয়ে দ্বিতীয় ওয়ানডের আগেরদিন তামিম ইকবাল ‘আগামীকালে’র স্বপ্ন দেখছেন।
পার্লে মঙ্গলবারের অনুশীলন শেষে তামিমকে কিছুটা দার্শনিক মনে হল, ‘বোলাররা সফরে এখন পর্যন্ত প্রত্যাশা পূরণ করতে পারেনি; তাই বলে আগামীকাল যে পারবে না ব্যাপারটা তেমন নয়।’
গোটা সফরে পেসাররা আসলেই চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছেন। কোচের পরিকল্পনা নিয়েও প্রশ্ন উঠছে। লাইনে বল করা বাদ দিয়ে জোরের উপর খবরদারি করতে যেয়ে শর্টবল হচ্ছে বেশি। স্বাগতিক ব্যাটসম্যানরা তাতে ‘মুখস্থ’ ব্যাট চালিয়ে যাচ্ছেন।
ব্যাটিং নিয়েও যথেষ্ট চিন্তার কারণ আছে। প্রথম ওয়ানডেতে যে উইকেটে হাশিম আমলা (১১০*) এবং কুইন্টন ডি কক (১৬৮*) জোড়া সেঞ্চুরি করে ১০ উইকেটের জয় নিয়ে বেরিয়ে গেছেন, সেখানে বাংলাদেশের মুশফিক ছাড়া কেউ থিতু হতে পারেননি।
প্রথম ম্যাচে সাজঘরে ওঁত পেতেছিলেন এবি ডি ভিলিয়ার্স নামের একজন। প্রায় পাঁচ মাস আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে যিনি ব্যাট ধরেন না। নিশ্চয়ই আশায় আছেন দ্বিতীয় ম্যাচে একটু সুযোগ পাওয়ার।
এই ভিলিয়ার্সকে নিয়ে বিশ্বের প্রত্যেক অধিনায়ক চিন্তায় থাকেন। মিরপুরে এক আড্ডায় একদিন বাংলাদেশের অধিনায়ক মাশরাফী বিন মোর্ত্তজা বলছিলেন, ‘ভিলিয়ার্স উইকেটে থাকলে চিন্তা কমে না।’ ‘দানবে’র সামনে এই বোলিং পড়লে কাপ্তানের সেই ‘চিন্তা’ বড় হতেই পারে!
সিরিজ জয় নিশ্চিত না হওয়ায় দ্বিতীয় ম্যাচে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা থেকে বিরত থাকতে পারে স্বাগতিকরা।
অন্যদিকে ইনজুরি সমস্যা বাংলাদেশকে কিছুতেই ছাড়ছে না। বৃষ্টির বাগড়ার ভেতরে ইনজুরি থেকে সেরে ওঠা তামিম ইকবালকে মঙ্গলবার ইনডোরের নেটে অনুশীলন করতে দেখা গেছে। তিনি ফিরলে বসতে হতে পারে ইমরুল কায়েসকে। চিন্তা আছে মুশফিকুর রহিমকে নিয়েও। প্রথম ওয়ানডেতে অপরাজিত শতক (১১০*) হাঁকানোর পর তার হ্যামস্ট্রিং ইনজুরি মাথাচাড়া দিয়ে ওঠে। তাকে শেষ পর্যন্ত পাওয়া না গেলে থেকে যাবেন ইমরুল।
বুধবার দুপুর দুইটা থেকে যে মাঠে খেলা হবে তার অবস্থা যাচ্ছেতাই। মাঠটিতে এখন পর্যন্ত ১০টি আন্তর্জাতিক ওয়ানডে হয়েছে। উইকেট ঠিক থাকলেও আউটফিল্ড লেজেগোবরে। কয়েক জায়গায় ঘাস নেই! গ্যালারিও ঠিকঠাক করা হয়েছে কিছুদিন আগে। ক্রিকেট সাউথ আফ্রিকার প্রস্তাবিত গ্লোবাল টি-টুয়েন্টি লিগ হওয়ার কথা ছিল এখানে। কিন্তু টুর্নামেন্টটি স্থগিত হওয়ায় মাঠের যত্ন নেওয়াটাও থমকে গেছে।
উইকেটে গতি, বাউন্স থাকবে না বলেই ধারণা করা হচ্ছে। আগের ১০ ওয়ানডেতে টার্ন দেখে গেছে কালেভদ্রে। সেই স্মৃতি বলছে, আরেকটি ক্লান্তিকর ম্যাচ অপেক্ষা করছে বাংলাদেশি পেসারদের জন্যে!