গত ২০ জুলাই বৃহস্পতিবার সকাল ১০টার দিকে শাহবাগের জাতীয় জাদুঘরের সামনে অবস্থান নেয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত হওয়া সাতটি সরকারি কলেজের শিক্ষার্থীরা। কলেজগুলো হলো: ঢাকা কলেজ, ইডেন মহিলা কলেজ, বেগম বদরুন্নেসা কলেজ, সরকারি তিতুমীর কলেজ, কবি নজরুল ইসলাম কলেজ, শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজ ও মিরপুর বাংলা কলেজ। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অধিভুক্ত হওয়ার পাঁচ মাসেও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এমন কোনো নির্দেশনা পায়নি যার মাধ্যমে তারা জানতে পারবে, তাদের পরীক্ষা কবে হবে, একাডেমিক সিলেবাস কী হবে, পরীক্ষাপদ্ধতি কেমন হবে, প্রশ্নের ধরণই বা কেমন হবে বা কেমন হবে প্রশ্নের মানবণ্টন? এই দাবি নিয়ে তারা শাহবাগে জমায়েত হলে পুলিশের সঙ্গে তাদের সংঘর্ষ বাঁধে। এতে তিতুমীর কলেজের ছাত্র সিদ্দিকুর চোখে আঘাত প্রাপ্ত হন। আহত সিদ্দিকুর চ্যানেল আই অনলাইনকে জানান, মানুষের মৌলিক চাহিদার একটি শিক্ষা, সেই শিক্ষার দাবি নিয়ে সেশনজটের অভিশাপ থেকে বাঁচতে রাস্তায় নেমেছিলাম, আমার তো কোন দোষ ছিল না, ছোট্ট বেলায় বাবা হারিয়েছি, অনেক কষ্টে মা লালন পালন করে বড় করেছে; তার পরিণামে এখন আমি চোখ হারাতে বসেছি। এই ঘটনায় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত হবে। দোষীদের খুঁজে বের করা হবে। আর সরকারের উদ্যোগে সিদ্দিকুরের উন্নত চিকিৎসার জন্য ভারতে নেয়া হবে বলে জানান সড়ক পরিবহণ ও সেতুমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। এই ঘটনায় মন্ত্রিসভার বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন বলে জানান ওবায়দুল কাদের। ঘটনায় কোন পুলিশ কর্মকর্তার সংশ্লিষ্টতা পাওয়া গেলে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়া হবে বলেও জানান তিনি। সরকার এই ঘটনায় সুষ্ঠু তদন্ত করার যে আশ্বাস দিয়েছে তাতে আমরা আস্থা রাখতে চাই। ঘটনার সঙ্গে জড়িত দোষী পুলিশের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ রাষ্ট্রের জন্য একটি জরুরি পদক্ষেপ। সিদ্দিকুরের চিকিৎসার ব্যয় বহন করার ঘটনাও একটি ভালো উদ্যোগ। সঙ্গে সঙ্গে সরকারকে এ বিষয়ে সতর্ক থাকতে হবে যাতে যারা অন্যায়ের প্রতিবাদে অনিয়মের প্রতিবাদে অহিংস বিক্ষোভ বা মিছিল করে তাদের উপর যেন পুলিশ অকারণে আক্রমণাত্মক ভূমিকায় অবতীর্ণ না হয়। এভাবে যেন আর কোনো সিদ্দিকুরের জীবন বিপন্ন না হয়।