চ্যানেল আই অনলাইন
হৃদয়ে বাংলাদেশ প্রবাসেও বাংলাদেশ

এই স্বীকৃতি র‌্যাবকে আরও গতিশীল করবে

‘গুরুতর মানবাধিকার লংঘনে জড়িত’ থাকার অভিযোগে বাংলাদেশের আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় প্রভাবশালী বাহিনী র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব) এবং সংস্থাটির ৭ কর্মকর্তার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের প্রায় তিন মাস পরে এসে যুক্তরাষ্ট্র বলছে, গত তিন মাসে র‌্যাবের কার্যক্রমে উন্নতি দেখা গেছে।

আজ রোববার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় অনুষ্ঠিত হয় বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্র ৮ম অংশীদারিত্ব সংলাপ। ওই সংলাপের পর যৌথ সম্মেলনে এসে কথা বলেন দেশটির পররাষ্ট্র দপ্তরের রাজনীতিবিষয়ক আন্ডার সেক্রেটারি ভিক্টোরিয়া নুল্যান্ড। তিনি বলেন, ‘আমরা গত ৩ মাসে র‌্যাবের কার্যক্রমে উন্নতি দেখতে পেয়েছি।’ তবে সেই নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের বিষয়ে বাংলাদেশ সরকারের আবেদনের বিষয়ে স্পষ্ট করে কিছু বলেননি প্রভাবশালী এই কর্মকর্তা। শুধু বলেছেন, ‘নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার একটি জটিল বিষয়।’

আমরা জানি, গত বছরের ১০ ডিসেম্বর, যেদিনটিকে বিশ্ব মানবাধিকার দিবস হিসেবে পালন করা হয়। সেই দিনেই ওই নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছিল। ওই নিষেধাজ্ঞায় র‌্যাবের পাশাপাশি সংস্থাটির বর্তমান মহাপরিচালক চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন, সাবেক মহাপরিচালক ও বর্তমান আইজিপি বেনজির আহমেদ, অতিরিক্ত মহাপরিচালক (অপারেশন্স) খান মোহাম্মদ আজাদ, সাবেক অতিরিক্ত মহাপরিচালক (অপারেশন্স) তোফায়েল মুস্তাফা সরওয়ার, সাবেক অতিরিক্ত মহাপরিচালক (অপারেশন্স) মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম এবং সাবেক অতিরিক্ত মহাপরিচালক (অপারেশন্স) মোহাম্মদ আনোয়ার লতিফ খানের নাম আসে।

ওই নিষেধাজ্ঞার পর সরকারের পক্ষ থেকে অভিযোগ অস্বীকার করা হলেও পরে তা প্রত্যাহারে লবিস্ট নিয়োগসহ বেশ কিছু উদ্যোগ নেওয়া হয়। গত তিন মাসে যুক্তরাষ্ট্রকে এ বিষয়ে দফায় দফায় অগ্রগতির কথা জানানো হয়। সর্বশেষ বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্র ৮ম অংশীদারিত্ব সংলাপেও নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের বিষয়টি জোরালোভাবে তুলে ধরা হয়। বিশেষ করে দেশের আইনশৃঙ্খলা রক্ষা এবং সন্ত্রাস দমনে র‌্যাবের কৃতিত্বপূর্ণ ভূমিকার কথা বার বার উল্লেখ করা হয়।

এমন প্রেক্ষাপটে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের আন্ডার সেক্রেটারির এই বক্তব্য নিঃসন্দেহে র‌্যাব এবং বাংলাদেশের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। এই সময়ে র‌্যাবের কার্যক্রমে যে উন্নতি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র দেখতে পেয়েছে; তা র‌্যাবের জন্যও ইতিবাচক। অস্বীকার করার উপায় নেই; ২০০৪ সালের ২৬ মার্চ প্রতিষ্ঠার পর থেকে দেশের আইনশৃঙ্খলার ‍উন্নয়নে ব্যাপক ভূমিকা রেখেছে র‌্যাব। সন্ত্রাস কবলিত অসংখ্য এলাকার মানুষের কাছে আজও আস্থার প্রতীক র‌্যাব। জঙ্গিবাদ দমনে সবচেয়ে কার্যকর ভূমিকা রয়েছে তাদের।

তবে বেশ কিছু ঘটনায় ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়তে হয়েছে র‌্যাবকে। কোনো কোনো ক্ষেত্রে ব্যক্তি স্বার্থেও র‌্যাবকে ব্যবহারের অভিযোগ আছে। সেইসব সমালোচনা বাদ দিলে সাধারণ মানুষকে আজও সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে সাহস যুগিয়ে যাচ্ছে র‌্যাব। এই অবদান অস্বীকার করতে পারবে না কেউ।

আমরা মনে করি, স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা র‌্যাবকে আরও গ্রহণযোগ্য ও কার্যকর প্রতিষ্ঠানে পরিণত করবে। র‌্যাবের কার্যক্রম নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের আন্ডার সেক্রেটারির আজকের বক্তব্য সেই লক্ষ্যে আরও এক ধাপ এগিয়ে গেল ‘বাংলাদেশ আমার অহংকার’ বুকে ধারণ করা সংস্থাটি।