চ্যানেল আই অনলাইন
হৃদয়ে বাংলাদেশ প্রবাসেও বাংলাদেশ
Channelionline.nagad-15.03.24

এই পুলিশ পাল্টান, নইলে পন্ড হবে সব আয়োজন!

যুদ্ধাপরাধীদের দল জামায়াত-শিবিরের পান্ডারা যখন কর্তব্যরত পুলিশ সদস্যদের রাস্তার ওপর পিটিয়ে মেরে ফেলতো তখন বাংলাদেশ এর বিরুদ্ধে দাঁড়িয়েছে। কারণ পুলিশের বিরুদ্ধে যত অভিযোগ থাকুক না কেন, পুলিশ বাহিনী আমাদের রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তার প্রতিবিম্ব। নাগরিকদের নিরাপত্তার দায়িত্ব দেয়া হয়েছে পুলিশের হাতে। সে পুলিশের নিরাপত্তা যদি নস্যাত করা হয়, বাংলাদেশের নিরাপত্তার দেখভাল করবে কে?

তখন অনেকে এমন কথাও বলেছেন, এগুলো পাকিস্তানি লোকজনতো, তাই বাংলাদেশের পুলিশ পেয়ে পিটিয়ে মেরে ফেলে! পুলিশের পক্ষে মানুষ যে এভাবে দাঁড়িয়েছিল সে কথা কি ভুলে গেছে বাংলাদেশ পুলিশ বাহিনী?

সর্বশেষ মহেশপুরের থানা হাজতে এক শিশুবাচ্চাকেও রাখা নিয়ে তোলপাড় প্রতিক্রিয়া চলছে! এ নিয়ে হাস্যকর একটা ব্যাখ্যা দিয়েছে পুলিশ! তিনটি পৃথক ছবি দেখিয়ে বলার চেষ্টা হয়েছে, শিশুটি হাজতে না হাজতের বাইরে ছিলো! মা হাজতের ভিতরে, তার শিশু বাচ্চাটিকে দাঁড় করে রাখা হয়েছে হাজতখানার বাইরে! এটি যদি সত্যভাষন হয়, কান্ডজ্ঞান কি লোপ পেয়েছে পুলিশের ওই কর্মকর্তাদের?

না এটি কোনো আইনে পড়ে? প্রিয় পুলিশ ভাই, একটু নিজের জীবন দিয়ে ভাবুন। মনে করেন আপনি আপনার অফিসের ভিতর বসা। আপনার এমন একটা ল্যাংটা বাচ্চা একা দাঁড়িয়ে আছে আপনার অফিসের বাইরে! সে কি এভাবে নিরাপদ? বা আপনি একজন পিতা হিসাবে কি এভাবে একটা বাচ্চাকে অফিসের বাইরে দাঁড়িয়ে থাকতে দেবেন? আপনি মানুষ হয়ে থাকলে যে ব্যাখা দিয়েছেন সেটা নিয়ে একটু ভাবুন। অমানুষদের কোনো ব্যাখ্যা দিতে হয়না।

সম্প্রতি ভূ-মধ্যসাগরে ডুবে মরা সিরিয়ান শরণার্থী শিশু আয়লানের ছবির সঙ্গে এ ছবির পার্থক্য কোথায়? সম্প্রতি এক পুলিশ সদস্যের এক পথশিশুকে হাতের নখ কেটে দেবার মানবিক ছবিটি আলোড়ন তুলেছে স্যোশাল মিডিয়ায়। পুলিশের এই সদস্য কিন্তু মহেশপুরের শিশুটিকে নিয়ে গাজাখোরি ব্যাখ্যাদাতাদের চাইতে অনেক শ্রেষ্ঠ মানবিক একজন মানুষ।

টাঙ্গাইলের কালিহাতিতে এক নির্যাতনের ঘটনার প্রতিবাদ করাকে কেন্দ্র করে পুলিশ তিনজন মানুষকে গুলি করে মেরে ফেলেছে! রাষ্ট্র আপনার হাতে বন্দুক দিয়েছে বলে আপনি যা খুশি তাই করবেন? পুলিশ এ ঘটনা নিয়ে তদন্ত কমিটি গঠন করেছে! কিন্তু পুলিশ ভাইরাতো জানেন, আপনাদের তদন্তের ওপর দেশের মানুষের বিন্দুমাত্র আস্থা নেই। তদন্তের নামে এত সুন্দর করে আপনারা ঘটনা অথবা নিজেদের দোষ ধামাচাপা দিতে জানেন! আজ পর্যন্ত এমন যত ঘটনায় কত সহস্র অমুক অমুককে ক্লোজড করার নামে ঘটনা ধামাচাপা দিয়েছেন! এসব নিয়ে এত সুন্দর করে মিথ্যা বলেন দেশের মানুষের সঙ্গে! অথচ যাদের ট্যাক্সের টাকায় আপনাদের বেতন হয়। সে টাকায় আর রেশন সামগ্রীতে আপনাদের পরিবার চলে।

যদি এসব ঘটনায় পুলিশ সৎ থাকতো, নিশ্চয় এমন ঘটনা বারবার ঘটতোনা! সিলেটের রাজন হত্যার ঘটনায় দেশ যখন তোলপাড় তখনো পুলিশ টাকা খেয়ে ঘটনা ধামাচাপার কাজে ব্যস্ত! টাকা খাওয়ারওতো একটু শীত-গ্রীষ্ম ভেদাভেদ থাকে! কিন্তু এভাবে হারাম খেতে আর এসব লোকজনকে বাঁচাতে আপনাদের বিবেকে একটুও বাজেনা পুলিশ ভাইজানগন? অথচ কত সৎ, স্মার্ট অফিসারও আছেন পুলিশ বাহিনীতে। তাদের সবকিছু পন্ড হয় এভাবে সত্য ধামাচাপা দেবার অপচেষ্টায়!

একটি রাজনৈতিক সরকারের ভাবমূর্তি পুলিশের কার্যক্রমের ওপর নির্ভরশীল। এ সরকারের কত চমৎকার সব কাজকর্ম, এসবের সমস্ত সুন্দর ধবংস করে ছাত্রলীগ সহ নানা নামের কিছু গুন্ডামি আর পুলিশের অনেক অপ কাজকর্মে! স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী একজনকে করা হয় দায়িত্ব পাবার পর তিনি বর্ণ চিনতে ভুলে যাওয়া হয় মনে করেন তার দায়িত্ব! সাদাকে সাদা কালোকে কালো তিনি আর দেখেন না! এমন আবুল টাইপ কথাবার্তা এরা বলেন যে তাকে যেন সরকার না, ওই পদে বসিয়েছে পুলিশ!

প্রশ্ন আসতে পারে সরকার কী তার ভালো মন্দ বোঝেনা? বোঝে। কিন্তু বেশ দেরিতে। আরেক কারনে সরকার পুলিশ সহ তার নানাবাহিনীর দোষ আড়াল অথবা এড়িয়ে চলতে চায়! কারণ এসব বাহিনী দিয়ে তারা বিরোধীদলকে আচ্ছামতো পিটায়। তাই মনে করে যদি এদের দোষ ধরা হয় তাহলে মনে হয় এরা আর তাদেরকে ভালো করে পিটাবেনা!

এর কারণে র‍্যাবের ভুলের গুলিতে সারাজীবনের জন্যে পঙ্গু হয়ে গেছে ঝালকাঠির এক সাধারন যুবক লিমন হোসেন! সেই ঘটনায় সারাদেশের মানুষের প্রতিবাদের মুখে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিবেকের তাড়নায় একটা বিবৃতি দিয়েছিলেন।

কিন্তু র‍্যাব যদি রাগ করে বিরোধীদল যদি না পিটায় এসব ভেবে হয়তো তড়িঘড়ি সে বিবৃতিটি মিডিয়া থেকে প্রত্যাহার করে নেয়া হয়! চিন্তা করুন র‍্যাব এখানে যেন দেশের প্রধানমন্ত্রীর চেয়ে শক্তিশালী! প্রধানমন্ত্রীকেও এখানে র‍্যাবকে তোয়াজ করে চলতে হয়! এসব বেআইনি তোয়াজের ফলাফল হচ্ছে নারায়নগঞ্জের সাত খুন!