চ্যানেল আই অনলাইন
হৃদয়ে বাংলাদেশ প্রবাসেও বাংলাদেশ
Channelionline.nagad-15.03.24

উৎকর্ষের পাশাপাশি বাংলা সাহিত্যকে এগিয়ে নিচ্ছে বাংলা একাডেমি

বাংলা ভাষার উৎকর্ষের পাশাপাশি বাংলা সাহিত্যকে এগিয়ে নিতে বাংলা একাডেমি কাজ করছে বলে জানিয়েছেন বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক অধ্যাপক শামসুজ্জামান খান। এ লক্ষ্যে নানা পরিকল্পনা তুলে ধরে শামসুজ্জামান খান বলেন, ‘২০০৯ সালে বাংলা একাডেমির মহাপরিচালকের দায়িত্ব নেওয়ার পর তিনি যে কাজ করেছেন তা অন্যকারও পক্ষে ২০-২৫ বছরেও সম্ভব হতো না।’

তার মেয়াদের উন্নয়নের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘বাংলা সাতিহ্যের ইতিহাস রচনার জন্য আমরা কাজ করছি। যার দায়িত্বে আছেন অধ্যাপক আনিসুজ্জামান। আমরা যে প্রমিত ব্যাকরণটা করেছি, সেটার কাজ শুরু করেছিলেন স্বয়ং রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। তবে, রক্ষণশীল ব্রাহ্মণদের চাপে তিনি সফল হতে পারেননি। সেই অসমাপ্ত কাজটাই আমরা করে ফেলেছি।’

নিজের সময়কালে তিনি যে কাজ আমি করেছেন তা কেউ ২০-২৫ বছরে করতে পারবে না বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

পশ্চিমবঙ্গ এবং ত্রিপুরার সম্পৃক্ততা আরও বাড়ানো প্রয়োজন বলে মনে করেন বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক। কারণ হিসেবে তিনি বলেন, ‘তাদের সম্পৃক্ততা না থাকলেও, তাদের বাংলা ভাষা-ভাষীরা কেনো আমাদেরটা গ্রহণ করবে।’

দেশের ৬৪ জেলার লোকজ সংস্কৃতির ইতিহাস, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের জীবনী এবং তিন হাজার পৃষ্ঠার বিবর্তনমূলক অভিধানকে তার মেয়াদে বাংলা একাডেমির অর্জন মন্তব্য করে শামসুজ্জামান খান বলেন, ‘এই বড় কাজগুলো বাংলা সাহিত্যকে সামনের দিকে এগিয়ে নিতে সাহায্য করবে।’

বাংলা একাডেমি সব সময় গবেষণামূলক কাজের ওপর জোর দেয় জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আমরা গবেষণা মূলক কাজে সবসময় জোর দেই। বাইরের জেলা গুলোতে আমরা বই মেলা করছি। যেনো সকলের মধ্যে সাংস্কৃতিক চেতনার বিকাশ হয়। এর বাইরে অনুবাদে বাংলা একাডেমি বিশেষ জোর দিচ্ছে।’

এর পাশাপাশি বাংলা ভাষার ইতিহাস এবং বাংলা সাহিত্যের ইতিহাসের বইগুলো আবার নতুন করে শুরু করেছে জানিয়ে বিশিষ্ট এ ফোকলোরবিদ বলেন, ‘এগুলো এখন আংশিক অবস্থায় পড়ে আছে। যাদের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিলো তারা কাজটা সাত বছরেও শেষ করতে পারেনি। সামনে এই কাজগুলো আমরা শেষ করবো।’

তার সময়ে বিশেষ করে অবকাঠামোগত উন্নয়নের কথাও তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘এই শহীদুল্লাহ ভবন ছিলো না। সেটা করেছি। ড. এনামুল হক ভবন আমরা করেছি। শামসুর রাহমান সেমিনার কক্ষ করেছি। আব্দুল করিম সাহিত্য বিশারদ মিলনায়তন আমরা করেছি। ১৩ তলা বিশিষ্ট দুটি স্টাফ কোয়ার্টার করেছি।’

দেশের তরুণ লেখকদের উদ্বুদ্ধ করতে বাংলা একাডেমির কিছুই করার নেই বলে মন্তব্য করে বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক অধ্যাপক শামসুজ্জামান খান বলেছেন, ‘তরুণরা লেখালেখি করুক। তাদের জন্য বাংলা একাডেমির কিছু করার নেই! লেখালেখি একটা নিজস্ব ব্যাপার। এর সঙ্গে কারও কোনো সম্পর্ক নেই। এমনকি স্ত্রী-ভাই-বোন কারও না।’

কথাসাহিত্যিক জাকির তালুকদারের একটি উদ্ধৃতি তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘কোনো গ্রামের বাড়িতে মুরগি ডিম পাড়ার পর আওয়াজ (ক্কর ক্কর) করে। তরুণদের মধ্যে কেউ যেনো একটি বই লিখেই এমন আওয়াজ না করেন। বেশি-বেশি পড়াশুনা করতে হবে। একাগ্রতা ও নিষ্ঠার সঙ্গে চিন্তা ভাবনার প্রকাশ ঘটানোর ক্ষেত্রে লেখাকে জোরালো করতে হবে। লেখায় নান্দনিক দৃষ্টিভঙ্গি কিভাবে আনা যায়, সে চর্চা করতে হবে।’