রাজধানীর বাংলামোটর ক্রসিংয়ে সোমবার বিকেলে দায়িত্বরত পুলিশ সার্জেন্টকে লাঞ্ছিত করার ঘটনায় মঙ্গলবার রমনা থানায় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। লাঞ্ছিত সার্জেন্ট কায়সার হামিদ বাদী হয়ে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ৩০ থেকে ৪০ জন অজ্ঞাতনামা শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে এই মামলা করেন।
রমনা মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মশিউর রহমান চ্যানেল আই অনলাইনকে মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
রমনা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মশিউর রহমান জানান, মামলায় মারধর, যানবাহন ও জনসাধারণ চলাচলে বাধা এবং সরকারি কাজে বাধা দেওয়া ও মারধরের অভিযোগ আনা হয়েছে। মামলার বাদী সার্জেন্ট কায়সার নিজেই।
সার্জেন্ট কায়সার হামিদ বলেন, আমি বাধা দেওয়ায় জবি তিনটি বাসই উল্টো পথ থেকে সঠিক পথে চলে যায়। তবে শিক্ষার্থীরা আমাকে মারধর করে এবং সরকারী কাজে বাধা দেয়, যা আইনতঃ অপরাধ, তাই আমি আইনের আশ্রয় নিয়েছি।
মামলার এজাহার থেকে জানা যায়, গত ১৭ জুলাই সোমবার বিকাল ৫ টায় বাংলা মটর ক্রসিংয়ে দায়িত্ব পালন করছিলেন সার্জেন্ট কাওসার হামিদ। এ সময় রূপসী বাংলা ক্রসিং হতে ফার্মগেট যাওয়ার পথে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী বহনকারী ডাবল ডেকার ৩ টি বিআরটিসি বাস বিকাল ৫ টার সময় বাংলা মটর ক্রসিংয়ে এসে পৌঁছায়। পৌঁছানোর পর রাস্তায় ট্রাফিক জ্যাম দেখে ট্রাফিক সিগন্যালের তোয়াক্কা না করে উল্টো দিকে যাওয়ার জন্য ডাবল ডেকার বাসের সামনের অংশ বিপরীত লেনে ঢুকায়।
ওই সময় দায়িত্বরত সার্জেন্ট বাসকে উল্টো পথে না যেয়ে সঠিক পথে যাওয়ার জন্য বলেন। কিন্তু বাস তিনটি উল্টো পথে দাঁড়িয়ে গাড়ি চলাচলের পথ আটকিয়ে রাখে। গাড়ীর চালককে দ্রুত গাড়ি সরিয়ে তাদের সঠিক পথে যাওয়ার জন্য বলতে না বলতে অজ্ঞাতনামা ৩০/৪০ জন ছাত্র ডাক চিৎকার দিয়ে গাড়ি থেকে নেমে সার্জেন্টের সঙ্গে তর্কে লিপ্ত হয় এবং উল্টো পথেই তাদেরকে যেতে দিতে হবে বলে জোরজবরস্তি করতে থাকে।
ঘটনার সময় বাংলা মটর হতে ফার্মগেট পর্যন্ত দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হলে সার্জেন্ট পুনরায় গাড়ি ৩ টিকে সঠিক পথে ফিরে যাওয়ার জন্য অনুরোধ করেন। উল্টো পথে তাদেরকে যেতে না দেয়ায় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের অজ্ঞাতনামা ৩০/৪০ জন ছাত্র সার্জেন্টাকে ঘিরে ধরে এলোপাথারি মারধর শুরু করে এবং পরিহিত ইউনিফর্মের বিভিন্ন অংশ ছিঁড়ে ফেলে। তাৎক্ষণিক সার্জেন্টের চিৎকারে কর্তব্যরত টিআই, সার্জেন্ট ও ট্রাফিক কনস্টেবল এসে উক্ত সার্জেন্টকে ছাত্রদের হাত থেকে উদ্ধার করে তাকে দ্রুত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়।