ঢাকায় উবার এবং পাঠাওয়ের যাত্রা শুরুর পর রাজধানীবাসীর জন্য কিছুটা স্বস্তি এলেও ক্রমেই এসব প্রতিষ্ঠানের চালকদের বিষয়ে নানা অভিযোগ উঠছে। এরই ধারাবাহিকতায় রাজধানীতে উবার এবং পাঠাওয়ের চালক হিসেবে কর্মরত থাকার পাশাপাশি একাধিক যুবকের বিরুদ্ধে মাদক ব্যবসায় জড়িয়ে পড়ার কথা জানিয়েছে র্যাব।
চ্যানেল আই অনলাইনে প্রকাশিত প্রতিবেদনে জানা যায়: ‘চাঁদপুর থেকে এইচএসসি পাশ করে রাজধানীতে পাঠাওয়ের চালক হিসেবে কর্মরত থাকার পাশাপাশি মাদক ব্যবসায় জড়িয়ে পড়ে লোকমান হোসেন।
লোকমান ও তার সহযোগী জিহাদ সিন্ডিকেট ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে ফেন্সিডিল সংগ্রহ করত। উবারের গাড়ি চালক সাদ্দাম হোসেনের গাড়িটিকে মাদক সরবারহের কাজে লাগাত লোকমান ও জিহাদ। এই তিনজন দীর্ঘদিন ধরে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর চোখ ফাঁকি দিয়ে মাদক চোরাচালান করছিল।’
অবশ্য তাদের শেষ রক্ষা হয়নি। রাজধানীর টঙ্গী থেকে মাদক ব্যবসায়ী চক্রের ৬ সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব-১। এরপরই চ্যানেল আই অনলাইনকে র্যাব কর্মকর্তারা উবার-পাঠাও চালকদের বিষয়ে এমন তথ্য জানান।
এর আগেও রাজধানীতে সড়ক দুর্ঘটনায় এক শিক্ষার্থী নিহত হওয়ার পর তা নিয়ে পুলিশের প্রাথমিক তদন্তে ভয়ংকর কিছু তথ্য উঠে এসেছিল। পুলিশ তখন বলেছিল, উবার মটোর চালক সুমন হোসেন ভুয়া ঠিকানা ব্যবহার করে উবারের নিবন্ধন নিয়েছিল। এমনকি তার জাতীয় পরিচয়পত্র ভুয়া এবং বিকাশ অ্যাকাউন্টের যে ঠিকানা, সেটাও ভুয়া।
দুর্ঘটনার পর সেই উবার চালক ফোন বন্ধ করে হাসপাতাল থেকে পালিয়ে গেলে তাকে ধরতে এবং ওই নিহত শিক্ষার্থীর চিকিৎসার জন্য পুলিশ উবার কর্তৃপক্ষের কাছে সহায়তা চেয়েও পায়নি। তার মানে দাঁড়াচ্ছে, এতগুলো অপরাধ করেও উবার কর্তৃপক্ষ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে কোনো রকম সহায়তা না করার ধৃষ্টতা দেখিয়েছে।
এছাড়া গত বছরের জুলাই মাসে চট্টগ্রামে এক নারী চিকিৎসককে ধর্ষণ চেষ্টা ও শ্লীলতাহানির অভিযোগে মিজানুর রহমান নামে অ্যাপভিত্তিক রাইড শেয়ারিং সার্ভিস পাঠাও-এর গাড়ি চালককে গ্রেপ্তার করেছিল পাহাড়তলী থানা পুলিশ।
মাদক ব্যবসা ও ধর্ষণ চেষ্টাসহ এ অভিযোগগুলো খুবই শঙ্কার। সাধারণ মানুষের জন্য তো বটেই, জাতীয় নিরাপত্তার ক্ষেত্রেও বিষয়গুলো বড় চিন্তার কারণ। এসব বিষয়কে বিচ্ছিন্ন ঘটনা না ভেবে জরুরি ভিত্তিতে আমলে নিয়ে উবার-পাঠাওসহ সরকারের সংশ্লিষ্ট দপ্তরকে কঠোর ভূমিকা গ্রহণ করতে হবে। সেক্ষেত্রে কোনো প্রতিষ্ঠান অসহযোগিতা করলে তাদের বিরুদ্ধেও যথাযথ ব্যবস্থা নেয়ার কোনো বিকল্প নেই। কারণ, এখানে সাধারণ মানুষের নিরাপত্তার বিষয় জড়িত। তাই কোনো ধরনের ছাড় না দিয়ে উবার-পাঠাওসহ সব রাইড শেয়ারিং প্রতিষ্ঠানকে কঠোর নজরদারির আওতায় আনতে আমরা সংশ্লিষ্টদের আহ্বান জানাচ্ছি।