সাবিত খান: ২০১৫ বিশ্বকাপের উম্মাদনা শেষ হয়েছে এইতো সেদিন। ক্রিকেট-জ্বরে আবারো বিশ্বকে মাতাতে রোমাঞ্চকর, উত্তেজনাময় পারফরম্যান্সের বর্ণচ্ছটা নিয়ে আসছে ইনডিয়ান প্রিমিয়ার লীগ (আইপিএল)। বিশ্বকাপের আসরে দুর্দান্ত নৈপুন্যের স্বাক্ষর রাখা খেলোয়াড়দের আইপিএলের বাজারদরে এগিয়ে থাকাটাই ছিলো স্বাভাবিক। তবে এবারের আইপিএলের আসর বঞ্চিত হবে বিশ্বকাপে আলো ছড়ানো কিছু পারফরমারদের থেকে। চোখধাধানো রোমাঞ্চ উপহার দেয়া এ সকল পারফরমারদের জন্য এবার নিশ্চয়ই দুঃখবোধ করবে ক্রিকেটের সবচেয়ে ব্যয়বহুল এই ক্রিকেট-যুদ্ধের আসর।
গ্রেন্ট এলিয়ট
আইপিএল এবার যাদের অভাব অনুভব করবে তাদের মধ্যে বিশ্বকাপের ফাইনালিস্ট কিউই ব্যাটসম্যান গ্রেন্ট এলিয়ট অন্যতম। নিউজিল্যান্ডকে স্বপ্নের ফাইনালে পৌছে দেয়ার অন্যতম মূল কারিগর তিনি, একথা বললে একেবারে ভুল হবে না। সেমিফাইনালে সাউথ আফ্রিকার বিপক্ষে শ্বাসরুদ্ধকর এক ম্যাচে অপরাজিত ৮৪ রানের দৃষ্টিনন্দন এবং সময় উপযোগী ইনিংস খেলেন তিনি। শুধু তাই নয় ফাইনালে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে কিউইদের ব্যাটিং ধ্বসের মাঝেও অর্ধশতক রানের ইনিংস খেলে তিনিই ছিলেন একমাত্র উজ্জ্বল ব্যতিক্রম। কুশলী মিডিয়াম পেস বোলিং দিয়ে ব্যাটসম্যানদের বিব্রত করতেও সক্ষম তিনি।
মার্টিন গাপটিল
বিশ্বকাপের সর্ব্বোচ্চ রান সংগ্রাহক এবং এ টুর্নামেন্টে এক ইনিংসে সর্ব্বোচ্চ রানের মালিক নিউজিল্যান্ডেরই আরেক বিধ্বংসি ব্যাটসম্যান মার্টিন গাপটিল। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে অপরাজিত থেকে ১৬৩ বলে ২৩৭ রানের বিস্ময়কর এক পারফরমেন্স উপহার দেন তিনি। ফিল্ডিং এর প্রতিভা দিয়েও দলে যথেষ্ট অবদান রাখতে সক্ষম তিনি। টি টোয়েন্টি ক্রিকেটের যেকোন দলে স্থান পাওয়ার ক্ষেত্রে একজন নিখুত খেলোয়ার বলা যায় তাকে।
কুমার সাঙ্গাকারা
বিশ্বকাপে টানা চারটি শতক করে অবিশ্বাস্য এক মাইলফলকে পৌছানো শ্রিলংকার ক্রিকেট বিস্ময় কুমার সাঙ্গাকারা। তার কার্যকরী অধিনায়কত্ব এবং বিশ্বমানের উইকেট কিপিং তার দক্ষতার চূড়ায় দুটি আরও পাথর খন্ড।
শাইমান আনোয়ার
শাইমান আনোয়ার এ বিশ্বকাপের অন্যতম একজন প্রতিশ্রুতিশীল পারফরমার। টুর্নামেন্টে তার ৩০০ রান এবং একটি শতক প্রতিপক্ষের বোলিং আক্রমণকে নতজানু করতে তার সামর্থ্যের প্রমান। তার আক্রমণাত্মক ব্যাটিং এবারের বিশ্বকাপ আসরে সংযুক্ত আরব আমিরাতের বিব্রতকর নিম্ন সংগ্রহের হাত থেকে বাঁচিয়েছে।
জেরোম টেইলর
এ্ বিশ্বকাপে ওয়েস্ট ইন্ডিজের হয়ে সর্ব্বোচ্চ উইকেট সংগ্রাহক জেরোম টেইলর। ১৯.২৯ গড়ে এবারের আসরে তার শিকার ১৭ জন। আপিএল খেলার পূর্ব অভিজ্ঞতা থাকলেও এবারের নিলামে উপেক্ষিত রয়ে যান তিনি। টেইলরের বেচিত্রপূর্ণ গতিময় বোলিং তাকে একজন আদর্শ স্ট্রাইক বোলার এর্বং কার্যকরী ডেথ ওভার বোলার এর যোগ্যতার প্রমাণ দেয়।
রুবেল হোসেন
বাংলাদেশের পেস বোলিং সামর্থ্যকে বিশ্বের কাছে নতুনভাবে পরিচিত করানোর ক্ষেত্রে রুবেল হোসেন উজ্জ্বলতম নাম। আক্রমণাত্মক এবং গতির ঝর তুলে প্রতিপক্ষের ব্যাটসম্যানদের মাঝে আতংক ছড়িয়েছেন তিনি এবারের আসরে। ইংল্যান্ডকে গ্রুপ পর্ব থেকেই বিদায় করে দেয়া তার সেই বোলিং এবারের আসর গ্রুপ পর্বের সেরা বিজ্ঞাপন। দ্রুত গতির বাউন্স এবং ইয়র্কার দিয়ে আইপিএলে ব্যাটসম্যানদের অস্বস্তিতে ফেলতে পারতেন তিনি।