চ্যানেল আই অনলাইন
হৃদয়ে বাংলাদেশ প্রবাসেও বাংলাদেশ

উপাচার্যের বাসভবনে হামলার কারণ শীঘ্রই জানানো হবে: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী

‘ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা তৈরিতে প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধাদেরও দায় আছে’

কোটা সংস্কার আন্দোলনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের বাসভবনে হামলার কারণ শীঘ্রই জানানো হবে জানিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন বলেছেন,‘আটক হওয়া কেউ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র নয়। এরা কেন এসেছিলো, আরও কয়েকদিন পর সেই কারণ আমরা পরিষ্কারভাবে বলবো।’

বুধবার রাজধানীর কৃষিবিদ ইনস্টিটিউটে আয়োজিত কৃষিবিদ মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মাননা অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথির বক্তব্য শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।

ঢাবি উপাচার্য ভবনে হামলার ঘটনাকে লজ্জাজনক মন্তব্য করে আসাদুজ্জামান খাঁন বলেন: একজন উপাচার্যের বাসায় আগুন ধরাবে, লুটতরাজ করবে তাকে নাজেহাল করবে ছাত্ররা! এটা ভাবতেও লজ্জা লাগে।

‘‘সেদিন রাত পৌনে ১টায় শিক্ষক সমিতির সভাপতি আমাকে ফোন করে ভিসিকে বাঁচাতে ফোর্স পাঠাতে বলেছিলেন। ভিসির বাসভবনের সামনে যে ফোর্স থাকে তারা সংখ্যায় কম থাকায় তারা হামলা ঠেকাতে পারেনি।’’

তিনি আরও বলেন: সেদিনের হামলার দৃশ্য ক্যামেরাবন্দি আছে, সাংবাদিক ভাইদের কাছে ভিডিও ফুটেজ রয়েছে। সেসব সহ আমাদের কাছে যা আছে তা দেখে আমরা হামলাকারীদের সনাক্ত করছি, গ্রেপ্তার শুরু করেছি। চুরিকৃত মালামাল কিছু উদ্ধার হয়েছে। সুনিশ্চিত হয়েই আমরা হামলাকারীদের গ্রেপ্তার করবো।  অবশ্যই কাউকে ছাড় দেবো না। সনাক্ত করার আগে আমরা কাউকে ধরছি না, সনাক্ত করেই আমরা ধরবো।

কৃষিবিদ মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মাননা জানাতে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী উপস্থিত মুক্তিযোদ্ধাদের হাতে ক্রেস্ট তুলে দেন। এর আগে কয়েকজন মুক্তিযোদ্ধার যুদ্ধকালীন স্মৃতিচারণ এবং বর্তমান সময়ে তাদের আশা-হতাশার কথা শোনেন মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেওয়া আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল।

এসময় মুক্তিযোদ্ধারা ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা বানানো এবং কোটা সংস্কার আন্দোলনে মুক্তিযোদ্ধাদের অবমাননার অভিযোগগুলো তুলে ধরেন।

এসব কথা শুনে বক্তব্য দিতে এসে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন: বীর মুক্তিযোদ্ধারা যুদ্ধ করেছিলেন বলেই আমরা স্বাধীনদেশ পেয়েছি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সবসময়ই বলেন, মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মান করতেই হবে। আমি নিজে ঢাকার পশ্চিমাঞ্চলে ক্যাপ্টেন হালিমের নেতৃত্বে যুদ্ধ করেছি। সহযোদ্ধাদের সংখ্যা নির্ভুল না বললেও কাছাকাছি বলতে পারবো। এখন দেখি শত শত মুক্তিযোদ্ধার নাম চলে আসছে। সেজন্যই বিপত্তি ঘটেছে, নানা প্রতিকূলতা মোকাবেলা করতে হচ্ছে। আমাদের প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধারাও যে যুদ্ধে যায়নি তাকে মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে সার্টিফাই করেছি, আমরা এটা না করলে তালিকাটা এতো দীর্ঘ হতো না।

উল্লেখ্য, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের (ভিসি) বাসভবনে হামলা, ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ ও মালামাল চুরির ঘটনায় গত ২৯ এপ্রিল চারজনকে গ্রেপ্তার করে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) দক্ষিণ গোয়েন্দা বিভাগের (ডিবি) একটি দল। এ সময় তাদের কাছ থেকে উপাচার্যের বাসভবন থেকে চুরি হওয়া দুটি মোবাইল ফোনও উদ্ধার করা হয়।

গ্রেপ্তার হওয়া চারজন হলেন মো. রাকিবুল হাসান ওরফে রাকিব, মো. মাসুদ আলম ওরফে মাসুদ, মো. আলী হোসেন শেখ ওরফে আলী ও আবু সাইদ ফজলে রাব্বী ওরফে সিয়াম। পরে তাদের রিমান্ডে নেয় পুলিশ।

ডিএমপি জানিয়েছে, গ্রেপ্তার হওয়া চারজনের মধ্যে মাসুদ আলম ঢাকা আলিয়া মাদ্রাসার ছাত্র। অন্য তিনজন কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ছাত্র নন। এর মধ্যে গ্রেপ্তার হওয়া রাকিবের নামে বরিশাল ও লক্ষ্মীপুরে পাঁচটি মামলা আছে।

গত ১০ এপ্রিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনিয়র সিকিউরিটি অফিসার এস এম কামরুল আহ্সানের দায়ের করা অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে ওই চারজনকে গ্রেপ্তার করা হয়।