চ্যানেল আই অনলাইন
হৃদয়ে বাংলাদেশ প্রবাসেও বাংলাদেশ
Channelionline.nagad-15.03.24

উন্নয়ন ধুয়ে খাওয়ার মানুষও না থাকার মতো পরিবেশ যেন কখনো না আসে

সরকারের বর্ষপূর্তিতে জাতির উদ্দেশে ভাষণে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সুন্দরবন সংলগ্ন রামপালে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নিয়ে সংশয় দূর করার বার্তা দিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী তার ভাষণে বলেছেন: ‘আমি দেশবাসীকে আশ্বস্ত করতে চাই, কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণে আমরা পরিবেশ সুরক্ষায় সর্বোচ্চ নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করেছি।’ দু’ দিনের মাথায় চ্যানেল আই প্রাঙ্গণে প্রকৃতি মেলা উদ্বোধন করে পরিকল্পনামন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেছেন, পরিবেশবান্ধব নয় এমন কোন প্রকল্প পরিকল্পনার সঙ্গে সরকার থাকবে না। তিনি এও বলেছেন, সরকারের সব উন্নয়ন প্রকল্পে পরিবেশের বিষয়টিকে গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করা হচ্ছে। এমন প্রেক্ষাপটেই সুইজারল্যান্ডের ডাভোসে অর্থনৈতিক সম্মেলনে যোগ দিতে যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যে সম্মেলনে বিনিয়োগের মতো অর্থনৈতিক বিষয়গুলোর পাশাপাশি আলোচনায় থাকবে পানি অর্থনীতি, টেকসই উন্নয়ন এবং জলবায়ু পরিবর্তনের মতো গুরুত্বপূর্ণ আরো কিছু বিষয়। বর্তমান বিশ্বে পরিবেশ একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয় যেমন গুরুত্বপূর্ণ পানি, পানি বণ্টন, পানি অর্থনীতি এবং জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবেলার কর্মসূচি। আরো স্পষ্ট করে বললে অর্থনৈতিক উন্নয়নের সঙ্গে এসব বিষয় এখন আগের যেকোন সময়ের চেয়ে আরো বেশি সম্পর্কিত। আমরা অবশ্যই উন্নয়ন চাই, কিন্তু সেই উন্নয়ন হতে হবে টেকসই। আর টেকসই উন্নয়নের জন্যই পরিবেশের মতো বিষয় বেশি গুরুত্বপূর্ণ। উন্নয়নের নামে যদি পরিবেশ বিনাশ করা হয় তাহলে একদিন আমাদের অস্তিত্বই থাকবে না। আর যদি অস্তিত্ব না থাকে তাহলে সেই উন্নয়ন ধুয়ে পানি খাওয়ার মানুষও পাওয়া যাবে না। আবার এ পানির সুষ্ঠু ব্যবহার ভারসাম্যপূর্ণ উন্নয়নের একটি গুরুত্বপূর্ণ শর্ত। ভবিষ্যতের স্বার্থে আমাদের যেমন পানির অপচয় না করে এর সুষ্ঠু ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে তেমনি আন্তর্জাতিক নদীগুলোতে বিশেষ করে তিস্তার পানিতে আমাদের পাওনা নিশ্চিত করতে হবে। পানির সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনায় সরকারের কাজ তাই যেমন দেশের ভেতরে, তেমনি গঙ্গার ন্যায্য হিস্যা আদায়ের মতো তিস্তাসহ অন্য নদীগুলোর পানিতে আমাদের পাওনা নিশ্চিত করাও সরকারের দায়িত্ব। আমরা বিশ্বাস করতে চাই, সরকার সেই কাজ করছে যেমন পরিবেশ রক্ষায়ও বারবারই তার আন্তরিক অবস্থানের কথা জানিয়েছে। ডাভোসেও নিশ্চয়ই প্রধানমন্ত্রী পরিবেশ রক্ষায় তার সরকারের প্রতিশ্রুতি তুলে ধরবেন। জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবেলায় তার সরকারের আন্তরিক ইচ্ছা এবং বাংলাদেশের মতো দেশের ক্ষতিপূরণ পাওয়ার মতো বিষয়গুলোতেও অতীতের মতো সোচ্চার থাকবেন। আমরা তার এ অবস্থানকে সমর্থন করি। একইভাবে পরিবেশ বিষয়ে তার এবং তার সরকারের সকল প্রতিশ্রুতির স্পষ্ট বাস্তবায়ন দেখতে চাই যাতে ওই বিষয়গুলোতেও আমরা তার প্রতি সমর্থন অব্যাহত রাখতে পারি।