কারাবন্দী বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তি নিয়ে পরস্পরবিরোধী বক্তব্যে দেশের দুই প্রধান রাজনৈতিক দলের দ্বিতীয় শীর্ষ দুইনেতাকে মুখোমুখি অবস্থানে দাঁড় করিয়েছে।
সম্প্রতি খালেদা জিয়ার মুক্তির বিষয়ে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরকে ফোন করে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে এ বিষয়ে কথা বলার অনুরোধ করেছিলেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
সেই খবর গণমাধ্যমকে জানান আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক। কিন্তু মঙ্গলবার বিএনপি মহাসচিব এ ইস্যুতে বলেন, ‘সেটা তাকেই (ওবায়দুল কাদের) জিজ্ঞাসা করুন। আমরা দল থেকে প্যারোলের বিষয়ে কোনো আলোচনা করিনি।’
বিএনপি মহাসচিবের এমন বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় কাদের বলেন, ‘‘আমি আর নিচে যেতে চাই না, উনি কেন নিজেকে নিচে নিয়ে যাচ্ছেন? আলোচনা হয়নি! মিথ্যা কথা কেন বলবো, মির্জা ফখরুল সাহেব আমাকে ফোন করেছেন; অনুরোধ করেছেন বেগম জিয়ার মুক্তির ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলার জন্য। আমি প্রধানমন্ত্রীকে বিষয়টি জানিয়েছি। অসত্য কথা কেন বলবো? তিনি অনুরোধ করেছেন, তিনি কি প্রমাণ করতে চান, অনুরোধ করেননি?’’
মঙ্গলবার আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে খুলনা বিভাগের সাংগঠনিক জেলাগুলোর আওয়ামী লীগের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক এবং দলীয় সংসদ সদস্যদের সঙ্গে মতবিনিময় সভা শেষে তিনি এ কথা বলেন।
ফখরুলের কথার প্রমাণ চাইলে দিতে প্রস্তুত উল্লেখ করে আওয়ামী লীগের সাধারণ বলেন: ‘‘তাহলে কিন্তু প্রমাণ দিয়ে দেব। কারণ টেলিফোনে যে সংলাপ সেটাতো আর গোপন থাকবে না। এটা বের করা যায়, ফোনে কথা বললে এটা কি আর গোপন রাখা যাবে? এটার রেকর্ড আছে না?’’
সেসময় তিনি মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সমালোচনা করে বলেন, ‘‘মির্জা ফখরুল সাহেব ঝানু রাজনীতিবিদ হতে পারেন। কিন্তু ফখরুল সাহেব কি ঝানু চিকিৎসক? যে বেগম জিয়ার শারীরিক অবস্থা কী সে বিষযে তিনি সিদ্ধান্ত দিতে পারেন। চিকিৎসকরা বলছেন, বার্ধক্যের কারণে তার অবস্থা যে অবস্থানে থাকার কথা, তার অবস্থা সেই অবস্থানে। কিন্তু একজন তরুণের মতো শারীরিক অবস্থা তার নেই।’’
‘‘কিন্তু তার শারীরিক অবস্থা যা থাকার কথা তাই আছে। কোনো প্রকার অবনতি হচ্ছে না। বরং তার শারীরিক অবস্থা যেখানে আছে, পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে আরও উন্নত চিকিৎসা দেওয়ার জন্য চিকিৎসকরা চেষ্টা করছেন।’’
খালেদা জিয়ার মুক্তির চেয়ে বিএনপি রাজনৈতিক ইস্যু খুঁজে সরকার পতনের ষড়যন্ত্র করছে বলে দাবি করেন আওয়ামী লীগের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ সাংগঠনিক এ নেতা।
সরকার চাইলেই খালেদাকে মুক্তি দিতে পারে না মন্তব্য করে তিনি বলেন, ‘বেগম জিয়া কোনো রাজনৈতিক মামলায় কারাগারে নন। দুর্নীতির মামলায় সাজা প্রাপ্ত হয়ে কারাগারে রয়েছেন। এটা কোন রাজনৈতিক মামলাও নয়, যে রাজনৈতিক বিবেচনায় তা সরকার প্রত্যাহার করে নেবে।’’