মৌলভীবাজার শহর থেকে ২০ কিলোমিটার দূরে পশ্চিম ভানুগাছ সংরক্ষিত বনের নাম লাউয়াছাড়া। প্রায় পাঁচশ প্রজাতির জীববৈচিত্র্যের সংরক্ষিত বন মৌলভীবাজারের লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যান। এ উদ্যানের জীববৈচিত্র্য রক্ষায় নানা উদ্যোগ নেয়া হলেও বনের ভেতর দিয়ে রেললাইন থাকায় হুমকিতে পড়েছে জীববৈচিত্র্য।
সরকার ১৯৯৬ সালে এই বনের একটি অংশকে জাতীয় উদ্যান ঘোষণা করে। কিন্ত পশু পাখির এই বনে কী করে রেল চলে তাই পর্যটকদের জন্য অনেকটা বিশ্ময়ের। স্থানীয়রা বলেন, সরকার যেহেতু এই বনকে জাতীয় উদ্যান হিসেবে ঘোষনা করেছে, সেখানে এই রেল লাইন হয় কী করে?
লাউয়াছাড়া জাতীয় উদ্যানে প্রায় ৪শ’৬০ প্রজাতির জীবের মধ্যে ১শ’৬৭ প্রজাতির উদ্ভিদ, ২শ’৪৬ প্রজাতির পাখি, ২০ প্রজাতির স্তন্যপায়ী প্রাণী, ৬ প্রজাতির সরীসৃপ এবং ৪ প্রজাতির উভচর থাকার কথা। কিন্ত নানান প্রতিকূলতায় দিন দিন বিভিন্ন প্রজাতির সংখ্যা কমে যাওয়ার কথা বলছেন বনে আসা পর্যটকরা।
বনে ঘুরতে আসা এক পর্যটক বলেন, আমরা যদি এই রেল লাইনটাকে অন্যত্র সরিয়ে নিতে পারি তবে পশু পাখির জন্য যে অভয়ারণ্য আছে তা আরো বিস্তার লাভ করবে।
বনে ঘুরতে আসা আরেক পর্যটক বলেন, দুঃখের ব্যাপার হলো আমরা কোনো বন্য প্রানীই দেখতে পাচ্ছিনা। আমাদের এই পদক্ষেপ নিতে হবে যেন আমরা এই প্রানীদের ভালভাবে যত্ন নিতে পারে, আমরা ঘুরতে এসে হতাশ না হই।
লাউয়াছাড়া বনের জীববৈচিত্র্যে হুমকির মধ্যে পড়ার বিষয়টি স্বীকার করেছেন বনবিভাগের মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তারা। লাউয়াছাড়া জাতীয় উদ্যানের বন্যপ্রানী রেঞ্জ অফিসার গোলাম রহমান বলেন, ট্রেনের শব্দ বন্যপ্রানী ছাড়াও অন্য যে কোন প্রানীর ক্ষেত্রে প্রভাব পড়ে। এসব কারনে এদের জীবনচক্র পরিবর্তন হয়ে যাচ্ছে। উর্দ্ধতন কতৃপক্ষ যারা আছেন তারা এসব নিয়ে বিভিন্ন প্রকার প্লান-প্রোগ্রাম করছেন। তবে এটা একদিনে সম্ভব না, অনেক সময় লাগবে।
উদ্যানের জীববৈচিত্র্য রক্ষায় বনের গহীনে পিকনিক আমেজে চলাফেরায় নিয়ন্ত্রণ আরোপেরও দাবি জানিয়েছেন অনেকে। কিন্ত সবার দাবি এই সম্পদ রক্ষায় যেন সরকার এগিয়ে আসে।