করোনার মধ্যেই দেশের উত্তরাঞ্চলে নতুন এক শঙ্কা দেখা দিয়েছে। উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে কুড়িগ্রামের ধরলা ও ব্রহ্মপুত্র এবং সিরাজগঞ্জে যমুনা নদীর পানি বেড়ে নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। এছাড়াও পানি বৃদ্ধির ফলে বিপৎসীমার উপর দিয়ে বইছে যমুনার শাখা নদী ধলেশ্বরী, লৌহজং, বংশাই ও ঝিনাই নদীর পানি।
চ্যানেল আইয়ের প্রতিবেদনে জানা যায়, ধরলার পানি সেতু পয়েন্টে বিপৎসীমার ৩১ সেন্টিমিটার ও ব্রহ্মপুত্রের পানি চিলমারী পয়েন্টে বিপৎসীমার ১৮ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। অন্যান্য নদ-নদীর পানি বিপৎসীর সামান্য নিচ দিয়ে বইছে। এর ফলে নদী অববাহিকার নিচু এলাকার চরাঞ্চলের প্রায় ৩০ হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। ডুবে গেছে নিচু এলাকার কয়েকশ হেক্টর জমির রোপা আমন ও সবজি ক্ষেত।
শুধু তাই নয়, পানি বাড়ার সাথে সাথে নদী ভাঙন তীব্র হয়ে উঠেছে। ধরলা ও ব্রহ্মপুত্রের উজানে ভারি বৃষ্টিপাতের কারণে নদ-নদীগুলোতে আরও দুই থেকে তিনদিন পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকার আশংকা করেছে স্থানীয় পানি উন্নয়ন বোর্ড।
চ্যানেল আইয়ের প্রতিবেদনে আরও জানা যায়, সিরাজগঞ্জে যমুনা নদীর পানি গত ২৪ ঘন্টায় ১১ সেন্টিমিটার বেড়ে সিরাজগঞ্জ শহর রক্ষা বাঁধ পয়েন্টে বিপৎসীমার ২৫ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে বইছে। পানি বেড়েছে কাজিপুর মেঘাই ঘাট পয়েন্টেও। এতে জেলার নদী তীরবর্তী নিম্নাঞ্চল ও চরাঞ্চলের নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হচ্ছে। ডুবে গেছে বিস্তীর্ণ এলাকার ফসলি জমি। অব্যাহতভাবে পানি বাড়তে থাকায় চাপ বাড়ছে শহর রক্ষা বাঁধে। বাঁধটির ধসে যাওয়া অংশে বিপদ এড়াতে আবারও বালিভর্তি জিও ব্যাগ ডাম্পিং করা হচ্ছে।
অন্যদিকে নদী তীরবর্তী এলাকায় ঘরবাড়ি প্লাবিত হওয়ায় অনেকেই গবাদিপশুসহ উঁচু সড়কে আশ্রয় নিয়েছেন। বসতভিটায় পানি উঠায় বন্যা দুর্গতরা বিশুদ্ধ পানি ও খাবার সংকটের মধ্যে পড়েছেন। তবে এখন পর্যন্ত সরকারি বেসরকারি কোন সহযোগিতা পাননি বলে অভিযোগ তাদের। এই বন্যা দীর্ঘস্থায়ী হলে আমনের ক্ষতি হবার শঙ্কা করছে কৃষি বিভাগ। এই শঙ্কা অমূলক নয়। করোনার ভয়াবহতার মধ্যে বন্যা পরিস্থিতি দীর্ঘস্থায়ী হতে দেওয়া যাবে না। এজন্য যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে আমরা সংশ্লিষ্টদের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি।