চ্যানেল আই অনলাইন
হৃদয়ে বাংলাদেশ প্রবাসেও বাংলাদেশ
Channelionline.nagad-15.03.24

উইকিলিকস ইতিহাস

২০০৬ সালে জুলিয়ান অ্যাসাঞ্জ ‘উইকিলিকস’ প্রতিষ্ঠার পর অল্প সময়ের বিশ্বব্যাপী পরিচিতি লাভ করে। যুক্তরাষ্ট্রের বিপুল সংখ্যাক স্পর্শকাতর নথি ভাইরালের মধ্যদিয়ে ২০১০ সালে প্রথমবারের মতো বিশ্ব মিডিয়ায় আসেন জুলিয়ান অ্যাসাঞ্জ।

তবে শুরুটা বেশ আগে। ১৯৮৭ সাল থেকেই অ্যাসাঞ্জ কম্পিউটার হ্যাকিংয়ের কাজ শুরু করেন। ইরাক এবং আফগানিস্তানের যুদ্ধের গোপন তারবার্তা ফাঁস করে উইকিলিকস ব্যাপকভাবে আলোড়ন সৃষ্টি করতে সক্ষম হয়।

২০১৫ সালে সৌদি আরব সরকারের প্রায় ৬১ হাজার গোপনীয় নথিপত্র ফাঁস করার মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের সংবাদমাধ্যমে আবার আলোচনায় এসেছিলেন জুলিয়ান অ্যাসাঞ্জ ও তাঁর দুনিয়া কাঁপানো ওয়েবসাইট উইকিলিকস।

প্রায় একই সময়ে আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমেও তাঁকে নিয়ে নতুন করে চাঞ্চল্য দেখা দেয়, তবে সেটা যতটা না সৌদি নথিপত্র ফাঁস করার জন্য, তার চেয়ে বেশি মার্কিন জাতীয় নিরাপত্তা সংস্থা এনএস’র অতি গোপনীয় কিছু নথিপত্র ফাঁস করার ফলে।

ওই বছর ১৯ জুন উইকিলিকস ওয়েবসাইটে সৌদি নথিপত্র ফাঁস হলে পশ্চিমা সংবাদমাধ্যমে খুব একটা সাড়া জাগেনি। কিন্তু বিস্ফোরক প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয় ২৩ জুন এনএস’র অতি গোপনীয় নথিপত্র উইকিলিকসে ফাঁস হওয়ার পর।

সেই সব নথিপত্রের ভিত্তিতে পশ্চিমের সংবাদমাধ্যমগুলো ফলাও প্রচার করে, এনএস’র গোয়েন্দারা দীর্ঘদিন ধরে ফ্রান্সের প্রেসিডেন্টদের ওপরে গোপনে নজরদারি করে আসছে।

এখন পর্যন্ত বিভিন্ন দেশের গুরুত্বপূর্ণ কূটনৈতিক গোপন তারবার্তা ফাঁস করে তার প্রতিষ্ঠান উইকিলিকস বিশ্বব্যাপী আলোড়ন সৃষ্টি করে চলেছে। তার প্রতিষ্ঠানের কম্পিউটার সার্ভার পৃথিবীর বহু দেশে অত্যন্ত গোপনীয় সুরক্ষিত স্থানে রাখা আছে।

এসব স্থান থেকে মাঝে মধ্যে বিপুলসংখ্যক গোপন নথি প্রকাশ করে তিনি প্রচার মাধ্যমে ব্যাপক আলোচিত হচ্ছেন। অ্যাসাঞ্জ এবং উইকিলিকস এখন রহস্যের আলো-আঁধারিতে আচ্ছাদিত রহস্যময় নাম।

২০১০ সালের ২০ আগস্ট সুইডেনের পুলিশ দুই মহিলার সঙ্গে দৈহিক সম্পর্কের কারণে তার বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করে। তার বিরুদ্ধে সুইডেনের আদালতে যৌন নিপীড়নের অভিযোগ আনা হয়। তার বিরুদ্ধে ইউরোপীয় গ্রেফতারি পরোয়ানাও জারি করা হয়।

যদিও অ্যাসাঞ্জ একে ‘ভিত্তিহীন’ এবং তার বিরুদ্ধে ‘ষড়যন্ত্র’ বলে অভিহিত করেন। ২০১১ সালের ফেব্রুয়ারিতে এ অভিযোগে অ্যাসাঞ্জকে ব্রিটেনে গ্রেফতার করা হয়। সুইডেন তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য সেদেশে নিয়ে আসার আইনগত উদ্যোগ নেয়। কিন্তু ব্রিটেনের আদালত শর্তসাপেক্ষে অ্যাসাঞ্জকে জামিন মঞ্জুর এবং ব্রিটেন ত্যাগের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেন।

ওই অবস্থায় ২০১২ সালের ১৯ জুন লন্ডনের ইকুয়েডর দূতাবাসে ঢুকে রাজনৈতিক আশ্রয় নেন অ্যাসাঞ্জ। তার বিরুদ্ধে জারি করা ইউরোপীয় গ্রেপ্তারি পরোয়ানা এখনও বহাল রয়েছে। তাই ইকুয়েডর দূতাবাস থেকে বের হলেই তাকে গ্রেপ্তার করা হতে পারে বলে আভাস দিয়ে রেখেছে লন্ডনের পুলিশ।