ঈদ উৎসবকে উপলক্ষ্য করে শহর-বন্দর থেকে প্রিয়জনের কাছে আপন নীড়ে ফিরছে মানুষ। অথচ এমন আনন্দঘন দিনটিও হাসপাতালের বিছানায় শুয়ে কাটাতে হবে বাংলা চলচ্চিত্রের কিংবদন্তি অভিনেতা এ টি এম শামসুজ্জামানকে।
বেশকিছু দিন ধরেই রাজধানীর আজগর আলী মেডিকেল হাসপাতালে ভর্তি আছেন এ টি এম শামসুজ্জামান। শ্বাসকষ্টে তার অবস্থা রীতিমত নাজুক। একদিন ভালোভাবে কথা বললে পরের দিনই আবার শ্বাসকষ্টের কারণে নিয়ে যাওয়া হয় নিবিড় পর্যবেক্ষণে। এমন করেই দিন কাটছে তাঁর। সোমবার দুপুরে চ্যানেল আই অনলাইনকে এমনটাই জানালেন এ টি এম শামসুজ্জামানের স্ত্রী রুনি জামান।
মাঝখানে এ টি এমের অবস্থা কিছুটা ভালো হলেও হাসপাতাল থেকে বাড়ি নেয়ার আশাবাদ ব্যক্ত করেছিলো তার পরিবার। বিশেষ করে ঈদের আগে এ টি এমকে বাসায় নেয়ার কথা শোনা গিয়েছিলো। কিন্তু এ টি এম শামসুজ্জামানের স্ত্রী জানান, তাঁর যে অবস্থা এভাবে বাসায় নেয়া যাবে না। চিকিৎসকরাও এটা চাচ্ছেন না। তাই ঈদে আমাদের হাসপাতালেই থাকতে হচ্ছে।
এরআগে প্রখ্যাত এই অভিনেতার চিকিৎসার জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পক্ষ থেকে ১০ লাখ টাকা দেয়া হয়।
গত ২৬ এপ্রিল রাতে হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েন এটিএম শামসুজ্জামান। মল-মূত্র বন্ধ হয়ে যায়। শ্বাসকষ্ট শুরু হয়। ওইদিন রাত এগারোটার দিকে তাকে ভর্তি করা হয় রাজধানীর গেণ্ডারিয়ার আজগর আলী হাসপাতালে। তারপর দিন অপারেশন শেষে পর্যবেক্ষণে রাখা হয় এটিএম শামসুজ্জামানকে। এরপর অবস্থার আরো অবনতি হলে ৩০ এপ্রিল থেকে লাইফ সাপোর্টে রাখা হয় কিংবদন্তি এই অভিনেতাকে।
ষাটের দশকের শুরুতে পরিচালক উদয়ন চৌধুরীর ‘বিষকন্যা’ চলচ্চিত্রে সহকারী পরিচালক হিসেবে ক্যারিয়ার শুরু করেন এটিএম শামসুজ্জামান। প্রথম কাহিনী ও চিত্রনাট্যকার হিসেবে কাজ করেছেন ‘জলছবি’ ছবিতে। এ পর্যন্ত শতাধিক চিত্রনাট্য ও কাহিনী লিখেছেন। প্রথম দিকে কৌতুক অভিনেতা হিসেবে চলচ্চিত্র জীবন শুরু করলেও খল অভিনেতা হিসেবেই জনপ্রিয়তা পান এটিএম।
দীর্ঘদিন ধরে বার্ধক্যজনিত কারণে অভিনয় থেকে দূরে থাকলেও মাঝেমধ্যেই শখের বশে ছোট ছোট চরিত্রে অভিনয় করতে দেখা গেছে তাকে। তার অভিনীত মুক্তিপ্রাপ্ত সর্বশেষ ছবি নাসির উদ্দিন ইউসুফ বাচ্চুর ‘আলফা’। ২৬ এপ্রিল ছবিটি দেশের চারটি প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পায়।