ঈদের সময় লাখ লাখ রাজধানীবাসী গ্রামের বাড়িতে যান বা বেড়াতে যান, আর এই সময় ঘরবাড়ি ফাঁকায় থাকায় চুরি-ডাকাতির সংখ্যা বহুগুণ বেড়ে যায় বলে বিগত দিনগুলোতে দেখা গেছে। এই বিষয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নানা তৎপরতা থাকলেও থেমে থাকে না অপরাধ। ঢাকার মতো এই পরিস্থিতি বন্দরনগরী চট্টগ্রামসহ বড় বড় শহরগুলোতেও।
ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) প্রধান কয়েকদিন আগে নগরবাসীকে পরামর্শ দিয়েছেন, ঈদের ছুটিতে যেহেতু বাসা-বাড়িতে চুরি ডাকাতি বেড়ে যায়, সেজন্য নগরবাসী যেন-গ্রামের বাড়িতে যাওয়ার আগে মূল্যবান জিনিসপত্র, স্বর্ণালঙ্কার আত্মীয়-স্বজনের বাসায় রেখে যান। যদি কারো সেরকম স্বজন না থাকে তারা প্রয়োজনে নিকটস্থ থানায় জমা রাখার পরামর্শ দিয়েছেন। চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ (সিএমপি) প্রধানও লকারে মূল্যবান সম্পত্তি রেখে যাবার পরামর্শ দিয়েছেন।
ঢাকাসহ বড় বড় শহরে চুরি-ডাকাতি সবসময়ই একটা নির্দিষ্ট হারে থাকলেও ছুটির সময় তা বেড়ে যায়। আর বিপুল সংখ্যক বাসা-বাড়ি খালি থাকায় প্রতিটিতে নিরাপত্তা নিশ্চিত করাও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তথা পুলিশের পক্ষেও অসম্ভব। এক্ষেত্রে প্রশ্ন উঠতে পারে, তাহলে করণীয় কী?
পুলিশের তথ্যমতে, প্রতিবছর ঈদ বা বড় ছুটির সময় বাসা ফাঁকা হওয়ার বিষয়টি চোর-ডাকাতরা আগে থেকে রেকি করে এসব বাসা চিহ্নিত করে। বিশেষ করে দোতলা বা তিনতলার বাসাগুলো টার্গেট করা হয় বেশি। এছাড়া বহু ঘটনার তদন্তে পুলিশ দেখেছে, অনেক সময় বাড়ির নিরাপত্তা কর্মীরাও এসব চক্রের সঙ্গে যোগসাজশ করে থাকে। এইসব বিষয় বিবেচণা করে, নিজ নিজ বাসা-বাড়ির নিরাপত্তা নিশ্চিতে পরিকল্পনা করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের পাশাপাশি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সাহায্যের আবেদন করা যেতে পারে। প্রতিবেশী-স্বজনদের সাহায্যে মূল্যবান সম্পদ রক্ষার পরামর্শও বেশ কাজে দিতে পারে বলে আমরা মনে করি।
বাংলাদেশে জনসংখ্যার তুলনায় এখনো পুলিশের সংখ্যা কম। এক্ষেত্রে অপরাধ দমনে কমিউনিটি পুলিশিং গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে। সমাজের নানা পেশার মানুষজনকে নিয়ে কমিউনিটি পুলিশিং ব্যবস্থা তৈরি হলে, তারাই নিজেদের চারপাশের এলাকায় নজরদারির ব্যবস্থা করবেন। ফলে অপরাধীরা কোন অপরাধ ঘটানোর সাহস পাবে না। ঈদসহ নানা ছুটির সময়ে এ বিষয়ে কার্যকর পদক্ষেপ নেবার সঠিক সময় বলে আমরা মনে করি। নিয়মিত সময়ে পাড়া-মহল্লায় নৈশপ্রহরী ও টহল পুলিশের যে কার্যক্রম বহাল থাকে, তা কিছুটা জোরদার করতে কমিউনিটি ও প্রশাসনিক পদক্ষেপ বাড়ালে অবস্থার পরিবর্তন হতে পারে সহজেই।