ইয়েমেনের শিয়া সমর্থিত হুথি বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে সামরিক তৎপরতা কমিয়ে আনার ঘোষণা দিয়েছে সৌদি আরব।
সৌদির সামরিক বাহিনীর মুখপাত্র ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আহমেদ আল-আসিরি জানিয়েছেন, বছরখানেক ধরে চলা এই অভিযানের ‘সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ পর্যায় শেষ’ হয়েছে।
সৌদি আরবের এ সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।
সৌদি আরবের সামরিক হামলা কমানোর ঘােষণার মধ্যেই ফের ইয়েমেনে অভিযান চালানো সৌদি নেতৃত্বাধীন জোটের বিরুদ্ধে বেসামরিক মানুষ হত্যার অভিযোগ তুলেছে জাতিসংঘ।
বিশ্ব সংস্থাটির মানবাধিকার বিষয়ক প্রধান জেইদ রাদ আল হুসেইন বলেছেন, জোট বাহিনী সাধারণ মানুষের প্রাণহানি এড়াতে ‘একাধিকবার’ ব্যর্থ হয়েছে। তবে সৌদি জােটের পাশাপাশি যুদ্ধরত অন্য পক্ষগুলোর বিরুদ্ধেও একই অভিযোগ তুলেছেন হুসেইন।
যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থনে সৌদি নেতৃত্বাধীন জোট ইয়েমেনের ক্ষমতাচ্যুত প্রেসিডেন্ট মনসুর হাদিকে পুনরায় ক্ষমতায় বসানোর লক্ষ্যে হুথি বিরোধী অভিযান চালিয়ে আসছে।
ইয়েমেনে সৌদির সামরিক অভিযান সীমিত করে আনার ঘোষণা প্রসঙ্গে হোয়াইট হাউসের মুখপাত্র হোসে আর্নেস্ট বলেছেন, তারা ইয়েমেন সংকটের রাজনৈতিক সমাধান চান। ‘বড় অভিযানের পর্ব শেষ করে ইয়েমেনে স্থিতাবস্থা বজায় রাখতে সৌদি জোট নেওয়া সিদ্ধান্তকে আমরা স্বাগত জানাই।’
‘যুক্তরাষ্ট্র অনেক দিন ধরেই বলে আসছিল, একটি রাজনৈতিক সমাধান ইয়েমেনের জন্য জরুরি এবং যত দ্রুত সম্ভব তার বাস্তবায়ন দরকার।’
জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক প্রধান হুসেইন বলেন, ‘মূলত সৌদি জোটের বিমান হামলায় সাধারণ মানুষের হতাহতের বেশির ভাগ ঘটনা ঘটেছে। ইয়েমেনের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের মাসতাবায় বিমান হামলায় ১০৬ বেসামরিক মানুষ নিহত হওয়ার তিন দিন পর তিনি এ অভিযোগ তুললেন।
ঘটনাস্থল পরিদর্শনসহ প্রত্যক্ষদর্শীদের সঙ্গে কথা বলার পর হুসেইন জানান, সেখানে কোনো সামরিক লক্ষ্যবস্তুতে হামলা হয়েছে—এমন কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি।
সৌদি আরব অবশ্য বরাবরই তাদের অভিযানের কারণে সাধারণ মানুষের হতাহতের ঘটনা অস্বীকার করে আসছে। তাদের দাবি, বরাবরই তারা সাধারণ মানুষ যাতে হতাহত না হয়, সে ব্যাপারে সচেষ্ট। অবশ্য মাসতাবার ক্ষেত্রে তারা ঘটনাটি তদন্ত করে দেখবে বলে জানিয়েছে।
পরিসংখ্যান বলছে, ইয়েমেন সংঘাতে এ পর্যন্ত অন্তত ছয় হাজার ২০০ বেসমারিক নাগরিক নিহত হয়েছে। গৃহহীন হয়েছে কয়েক লাখ মানুষ।