জঙ্গিবাদ, সাম্প্রদায়িকতায় পশ্চিমাদেশগুলোতে এখন যেনো মুসলিমরা কোণঠাসা। সন্ত্রাসী সংগঠন আল-কায়েদা, ইসলামিক স্টেটের তথাকথিত ‘জিহাদের’ নামে অন্য ধর্মাবলম্বীদের হত্যার জোয়ারে মুসলিমভীতিটা যখন জেঁকে বসেছে ইউরোপ-আমেরিকায়। তখন দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধকালে ইহুদিদের জীবন রক্ষায় কয়েকজন মুসলিমের অসামান্য অবদান তুলে ধরেছে বিশ্বখ্যাত টাইম ম্যাগাজিন।
‘হলোকস্ট রিমেম্বারেন্স ডে’ পালনের অংশ হিসেবে হিটলারের নিধনযজ্ঞ থেকে ইহুদিদের প্রাণ বাঁচানো মুসলিম অবদানের ১৫টি গল্প সম্প্রতি নিউইয়র্কে প্রদর্শিত হয়। এসব সত্য কাহিনী-চিত্রে চিরায়ত দ্বন্দ্বে লিপ্ত ইহুদি-মুসলিমদের একে অন্যকে সহায়তার বিরল দৃষ্টান্ত তুলে ধরা হয়। এই প্রদর্শনীকে কেন্দ্র করেই ইহুদিদের জীবন বাঁচাতে শান্তির ধর্মের আসল বার্তা দিচ্ছে কয়েকজন মুসলিমের মানবিকতা।
প্রদর্শনীতে তুলে ধরা হয় দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় তিউনিসিয়ায় বেশ কয়েকজন ইহুদিকে আশ্রয় দেয়া মুসলিম খালেদ আব্দুল ওয়াহাবের কথা। আরেকজন ইরানি কূটনীতিক আবদোল হোসেইন সরদারির আন্তরিক প্রচেষ্টা। তার ইস্যু করা পাসপোর্টের কারণেই নাৎসি সৈন্যদের রোষ থেকে অল্পের জন্য রক্ষা পেয়েছিলো ইহুদিরা।
উঠে এসেছে পিলকুস নামের আলবেনীয় এক মুসলিম পরিবারের কথা। যাদের অবদানে প্রাণে রক্ষা পান ইহুদি শিশু জোহানা নিউম্যান এবং তার মা।
এখন জোহানার বয়স ৮৬, তিনি বলেন,‘আমাদের তারা আত্মীয় পরিচয়ে আশ্রয় দিয়েছিলো। যদি নাৎসিরা আমাদের আসল পরিচয় জানতো তাহলে পুরো পরিবারকে নিশ্চিহ্ন করা হতো।’
উগ্রবাদীদের আচরণে যখন পৃথিবীর এই আধুনিক সময়ে ধর্মে ধর্মে আঘাত আর মানবতার সংকট। তাই এই পরিস্থিতিতে এমন দৃষ্টান্তগুলোকে মানবতার জন্য জরুরি বলে মনে করেন প্রদর্শনীর আয়োজকরা।
ম্যানহাটন কলেজের অধ্যাপক মেহনাজ আফ্রিদি বলেন, ‘এই কাহিনীগুলো মানবতাকে নতুনভাবে উপস্থাপনের মাধ্যমে শক্তিশালী বার্তা দিচ্ছে।’
প্রদর্শনীর আয়োজক সংস্থা আই এম ইউর প্রটেক্টরের সহকারি পরিচালক দানি লরেন্স আন্দ্রেয়া জানান, ঘৃণায় ভরা এখনকার বিশ্ব পরিস্থিতিতে এই প্রদর্শনী মানুষকে পরস্পরের প্রতি আস্থাবোধ জাগাবে।