চ্যানেল আই অনলাইন
হৃদয়ে বাংলাদেশ প্রবাসেও বাংলাদেশ
Channelionline.nagad-15.03.24

ইসি গঠনে যুগোপযোগী আইন চায় গণফোরাম

রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সংলাপ

স্বাধীন, নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন কমিশন গঠনে নতুন একটি যুগোপযোগী আইন প্রণয়ন-সহ কয়েক দফা প্রস্তাব দিয়েছে গণফোরাম।

বাসস জানায়, রোববার চলমান সংলাপের সপ্তম দিনে গণফোরামের নেতারা রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদের কাছে এসব প্রস্তাব তুলে ধরেন।

এদিন সন্ধ্যায় গণফোরামের কার্যকরী সভাপতি মুকাব্বির খান এমপির নেতৃত্বে আট সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল রাষ্ট্রপতির সঙ্গে বঙ্গভবনে আলোচনায় অংশ নেন।

সংলাপ শেষে রাষ্ট্রপতির প্রেস সচিব জয়নাল আবেদীন জানান, গণফোরাম নেতৃবৃন্দ সংবিধানের ১১৮ (১) অনুচ্ছেদ অনুযায়ী নির্বাচন কমিশন আইন প্রণয়নসহ কয়েক দফা প্রস্তাবনা দিয়েছেন।

গণফোরাম নেতৃবৃন্দ বলেন, জনগণের প্রতিনিধি নির্বাচনের জন্য নির্বাচনের কোনো বিকল্প নেই। এ জন্য দরকার স্বাধীন, নিরপেক্ষ এবং গ্রহণযোগ্য একটি নির্বাচন কমিশন।

তারা আশা প্রকাশ করেন, রাজনৈতিক দলগুলোর সাথে আলোচনা ও মতবিনিময়ের মাধ্যমে নির্বাচন কমিশন গঠন ফলপ্রসূ হবে।

ইসি গঠনে আইন প্রণয়ন এখন একটি গণদাবি উল্লেখ করে গণফোরামের প্রতিনিধি দল বলেন, তারা বিশ্বাস করেন যে, জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হয়ে সরকার নির্বাচন কমিশন আইন প্রণয়ন করবে।

তারা স্বাধীনতা, গণতন্ত্র ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনা সমুন্নত রেখে নির্বাচন কমিশন গঠনের জন্য রাষ্ট্রপতির কাছে প্রস্তাব দেন। নির্বাচন কমিশন গঠনের লক্ষ্যে রাজনৈতিক দলগুলোর সাথে আলোচনার উদ্যোগ নেয়ার জন্য রাষ্ট্রপতিকে কৃতজ্ঞতা ও ধন্যবাদ জানান।

নেতৃবৃন্দকে বঙ্গভবনে স্বাগত জানিয়ে রাষ্ট্রপতি বলেন, গ্রহণযোগ্য একটি নির্বাচন কমিশন যাতে গঠন করা যায়, সেজন্য রাজনৈতিক দলগুলোর সুচিন্তিত মতামত খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

তিনি বলেন, নির্বাচন কমিশন গঠন একটি সাংবিধানিক দায়িত্ব। একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচন কমিশন গঠনের জন্য পরামর্শ গ্রহণের যথার্থতা রয়েছে।

রাষ্ট্রপতি আশা প্রকাশ করেন, রাজনীতিবিদদের অনুকরণীয় কিছু করে যেতে হবে, যাতে পরবর্তী প্রজন্ম এখান থেকে শিক্ষা নিয়ে নিজেদের জন্য কিছু করে যেতে পারেন।

গত ২০ ডিসেম্বর প্রথম দিনে সংসদে প্রধান বিরোধী দল জাতীয় পার্টির সাথে সংলাপে বসেন রাষ্ট্রপতি হামিদ। এ পর্যন্ত মোট নয়টি রাজনৈতিক দলের সাথে সংলাপ অনুষ্ঠিত হয়েছে।

আগামীকাল সোমবার সন্ধ্যা ছয়টায় সংলাপে যোগ দিবে গণতন্ত্রী পার্টি, বাংলাদেশ কমিউনিস্ট পার্টি সন্ধ্যা সাতটায় এবং বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলন সন্ধ্যা সাড়ে সাতটায়।

৪ জানুয়ারি সংলাপ হবে বাংলাদেশের সাম্যবাদী দলের সাথে সন্ধ্যা ছয়টায় ও ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ সন্ধ্যা সাতটায়। ৫ জানুয়ারি সন্ধ্যা ছয়টা হবে জাতীয় পার্টি (জেপি) এর সাথে সংলাপ এবং সন্ধ্যা সাতটায় জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশ এর সাথে। ৬ জানুয়ারি গণফ্রন্টের সাথে সন্ধ্যা ছয়টায় এবং লিবারেল ডেমোক্রেটিক পাটির্র (এলডিপি) সাথে সন্ধ্যা সাতটায় সংলাপের কথা রয়েছে।

এদিকে কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সাথে আলোচনা হবে ৯ জানুয়ারি সন্ধ্যা ছয়টায় এবং বাংলাদেশ মুসলিম লীগ (বিএমএল) এর সঙ্গে ওই দিন সন্ধ্যা সাতটায়।
অন্যান্য রাজনৈতিক দলগুলোর সাথে আলোচনার তারিখ এখনো নির্ধারিত হয়নি।

এর আগে নবম, দশম ও একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে রাজনৈতিক দলগুলোর অংশগ্রহণে সংলাপ অনুষ্ঠিত হয়েছিল।

রাষ্ট্রপতিকে সিইসি এবং অনধিক চারজন নির্বাচন কমিশনার নিয়োগের ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে। গত কয়েকটি মেয়াদে রাষ্ট্রপতি ‘সার্চ কমিটি’র সুপারিশের ভিত্তিতে নির্বাচন কমিশন গঠন করেছেন।

বর্তমান ইসির পাঁচ বছরের মেয়াদ শেষ হচ্ছে ১৪ ফেব্রুয়ারি। এ সময়ের মধ্যেই রাষ্ট্রপতি নতুন কমিশন গঠন করবেন, যাদের অধীনে অনুষ্ঠিত হবে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন।