নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘন করে কোনো রকম গেট-তোরণ নির্মাণ এবং শোভাযাত্রা-শোডাউন করা থেকে বিরত থাকতে ঢাকার দুই সিটি কর্পোরেশনের সম্ভাব্য প্রার্থীদেরকে নির্বাচন কমিশন (ইসি) নির্দেশ দিলেও তা মানছেন না বেশিরভাগ প্রার্থীই।
কাগজে-কলমে ইসির সুনির্দিষ্ট নির্দেশনা থাকলেও বাস্তবে দেখা যাচ্ছে ভিন্ন চিত্র। নানাভাবে চলছে প্রার্থীদের শোভাযাত্রা-শোডাউন।
এ ব্যাপারে নির্বাচন কমিশনের দৃষ্টি আকর্ষণ করলে রির্টানিং অফিসার আবুল কাশেম জানান, নির্দেশ উপেক্ষা করে কেউ যদি নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘন করে তাহলে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নিতে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটরা মাঠে নামছে।
সোমবার নির্বাচন প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট ভবনে রিটার্নিং অফিসারের কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে নির্বাচনী আচরণের ব্যাপারে নিজেদের কঠোর অবস্থানের কথা জানিয়ে এসব কথা বলেন তিনি।
মনোনয়নপত্র সংগ্রহ এবং জমা দিতে আসা ব্যক্তিদের প্রচারণার কারণে নাগরিকরা ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন- বিষয়টি নিয়ে একজন সাংবাদিক রিটার্নিং অফিসারের দৃষ্টি আকর্ষণ করলে তিনি বলেন: নির্বাচনী আচরণ অনুযায়ী নির্বাচনে অংশ নিতে চাওয়া ব্যক্তিরা কোনো গেট-তোরণ এবং শোডাউন করতে পারবে না। এসব করলে নির্বাচনী আচরণের লঙ্ঘন হবে। এজন্য এসব কাজ থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানাচ্ছি।
এমনকি মনোনয়নপত্র জমা দিতে আসার সময়ও নির্বাচনী আচরণবিধি মেনে বাদ্যবাজনা এবং বিপুল লোকসমাগম না করার আহ্বান জানান এ কর্মকর্তা।
এই নির্দেশনা মেনে চলার আহ্বান উপেক্ষা যারা করছেন, তাদের বিরুদ্ধে আচরণ বিধি লঙ্ঘনের শাস্তি হবে জানিয়ে আবুল কাশেম বলেন: বার বার নির্বাচনী আচরণ বিধি মেনে চলার আহ্বান জানানো হচ্ছে। এখন থেকে এই নির্দেশনা উপেক্ষা করে যারা আচরণবিধি লঙ্ঘন করবে তাদের বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে।
নির্বাচনী আচরণবিধি যাতে লঙ্ঘিত না হয় সে ব্যাপারে কমিশনের কঠোর মনোভাব তুলে ধরে তিনি বলেন: আচরণবিধিতে সব স্পষ্ট করে বলা আছে। একজন প্রার্থী তখনই প্রার্থী হবেন যখন তিনি প্রতীক বরাদ্দ পাবেন। তখন তিনি তার প্রচারণা চালাতে পারবেন। কিন্তু আমরা দেখছি অনেকে অনেক উঁচুতে তাদের পোস্টার-ব্যানারসহ নানা প্রচারণা সামগ্রী টাঙাচ্ছে।
এই পরিস্থিতিতে রোববার বিকালে বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয়ে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটদের সঙ্গে বৈঠকে বসার কথা জানান তিনি। জানান, মঙ্গলবার থেকে ঢাকা উত্তরে ১২ জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মাঠে নামবেন।
রিটানিং অফিসারের এই কঠোর অবস্থানের কথা জেনে নির্বাচন প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট ভবন থেকে চ্যানেল আই কার্যালয়ে ফেরার সময় প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সামনেই দেখা যায় মোটরসাইকেল, পিকআপ, বাস, প্রাইভেটকারের শোডাউন।
শোডাউনে অংশ নেওয়া যানবাহনগুলোতে উত্তরের মেয়র পদে নির্বাচনে অংশ নিতে চেয়ে বেশ জোরেশোরে প্রচারণা চালাচ্ছেন সরকার দলীয় পরিচয়ের এক ব্যক্তি।
নির্বাচনী আচরণবিধির এমন লঙ্ঘন যাতে আর না হয় সেব্যবস্থা নিতে মাঠে থাকার আশ্বাস দিয়ে ঢাকায় ভোট উৎসব চাইছে নির্বাচন কমিশন।
সোমবার দুপুর পর্যন্ত পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে এখন পর্যন্ত মেয়র পদে ১১ জন, সংরক্ষিত আসনের কাউন্সিলর পদে ৪৭ জন এবং সাধারণ আসনে কাউন্সিলর পদের জন্য ২৪০ জন মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন।
২৬ ফেব্রুয়ারির নির্বাচনের জন্য মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ দিন ১৮ জানুয়ারি এবং প্রত্যাহারের শেষ দিন ২৯ জানুয়ারি।