আগামী জুলাইতে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ইসরায়েল সফরের আগেই দেশটির কাছ থেকে ২০০ কোটি ডলারের (প্রায় ১৬ হাজার কোটি টাকা) অস্ত্র কিনতে চুক্তি স্বাক্ষর করেছে ভারত।
বৃহস্পতিবার দুই দেশের মধ্যে এই চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। এর আগে ভারতের ইতিহাসে নিরাপত্তা খাতে এত বড় অস্ত্রচুক্তি আর কখনো হয়নি।
এই চুক্তির ফলে দেশ দুটির মধ্যেকার সম্পর্ক আরো শক্তিশালী হবে। পাশপাশি ভূ-পৃষ্ঠ ও আকাশ থেকে ছোড়া যায় এমন মিসাইল প্রযুক্তিতে (সারফেস-টু-এয়ার মিসাইল বা এসএএম) ব্যাপক উন্নতি করবে ভারত। এই মিসাইল দিয়ে উড়ন্ত যে কোনো এয়ারক্রাফটকে ভূ-পাতিত করা সম্ভব। মিসাইল, কমিউনিকেশন টেকনোলজি ছাড়াও ড্রোন প্রযুক্তিতেও ব্যাপক উন্নতি করবে ভারত। যার আওতা হবে ৭০ কিলোমিটার।
ভারতের প্রতিরক্ষা বাহিনীর সূত্রের বরাত দিয়ে দেশটির গণমাধ্যম বলছে, এই চুক্তির প্রথম ও প্রধান লক্ষ্য হচ্ছে যৌথ প্রজেক্ট পরিচালনার মাধ্যমে ভারতের সেনাবাহিনীর জন্য ৫৬০টি মিসাইল তৈরি এবং ১৬ লঞ্চার বিশিষ্ট একটি রেজিমেন্টকে প্রাথমিকভাবে বারাক-৮ মিডিয়াম রেঞ্জের এসএএম মিসাইল সিস্টেমের অন্তর্ভুক্ত করা। এ কাজে ভারতের ডিফেন্স রিসার্চ এন্ড ডেভেলপমেন্ট অর্গানাইজেশন (ডিআরডিও) এবং ইসরাইলের অ্যারোস্পেস ইন্ড্রাস্ট্রিস (আইএআই) যৌথভাবে কাজ করবে।
মোদি নেতৃত্বাধীন কেবিনেট সিকিউরিটি কমিটি (সিসিএস) গত ফেব্রুয়ারিতে ১৬ হাজার ৮৩০ কোটি টাকার এমআর-এসএএম প্রজেক্ট চূড়ান্ত করে। যার প্রথম কিস্তি হিসেবে ১ হাজার ৫০০ কোটি টাকার কাজ বাস্তবায়ন হচ্ছে।
বৈশ্বিক ও দেশীয় রাজনৈতিক চাপে ইসরায়েলের সাথে ভারতের ক্রমবর্ধমান দ্বি পাক্ষিক প্রতিরক্ষা সম্পর্ক বেশির ভাগই গোপন রাখা হয়। যদিও ইসরাইল হচ্ছে সেই প্রধান তিন দেশের একটি যাদের কাছে থেকে ভারত সব থেকে বেশি অস্ত্র কিনে থাকে।
গত ১৫ বছরে ভারত ইসরাইলের সাথে প্রায় ১০ বিলিয়ন ডলারের অস্ত্র ও প্রতিরক্ষা খাতের বিভিন্ন চুক্তি করেছে। ভারতের থেকে এ পর্যন্ত সাতটি অস্ত্র চুক্তি পেয়েছে ইসরাইল। মোদির ‘মেক ইন ইন্ডিয়া’ স্লোগানকে সামনে রেখে এই চুক্তির বেশির ভাগ অংশ এ দেশেই তৈরি করা হবে বলে জানিয়েছে ইসরায়েল অ্যারোস্পেস ইন্ডাজট্রিজ।
ভারত ইতিমধ্যেই সোভিয়েত জমানার অস্ত্রগুলির আধুনিকীকরণের কাজ শুরু করে দিয়েছে। তার উপর ইসরায়েলের সঙ্গে এত বড় অস্ত্রচুক্তি ভারতের নিরাপত্তা ব্যবস্থায় জোয়ার আসবে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।